মধ্যমগ্রাম, 25 এপ্রিল: ভোট পরবর্তী হিংসা যেন কিছুতেই থামছে না উত্তর 24 পরগণা জেলায় । কোথাও না কোথাও লেগেই রয়েছে রাজনৈতিক হিংসা, হানাহানির ঘটনা । বাড়ছে রাজনৈতিক সংঘর্ষও । এবার সেই রাজনৈতিক সংঘর্ষে উত্তপ্ত হল মধ্যমগ্রামের নদীভাগ মোল্লাপাড়া । সিপিএম-তৃণমূলের তুমুল সংঘর্ষ, বোমাবাজি ও গুলি কিছুই বাদ গেল না সংঘর্ষ চলাকালীন । উঠেছে শাসকদলের পার্টি অফিসে তাণ্ডব, ট্রাক ভাঙচুরের অভিযোগও । সংঘর্ষে দু'পক্ষের বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে । উভয়পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে হামলা, পাল্টা হামলা এবং মারধরের অভিযোগ দায়ের করেছে । পুলিশ দু'টি অভিযোগই খতিয়ে দেখছে । এলাকায় চাপা উত্তেজনা থাকায় পুলিশের টহল চলছে ৷
বেসরকারি কলেজের সামনে বালি ফেলাকে কেন্দ্র করে ঘটনার সূত্রপাত । অভিযোগ, তা নিয়ে গাড়ি চালকের সঙ্গে বচসা শুরু হয় স্থানীয় তৃণমূল কর্মীদের । অভিযোগ, সেই বচসা মেটাতে গিয়ে শাসকদলের হাতে আক্রান্ত হতে হয় স্থানীয় সিপিএম কর্মী তৌসিফ গাইনকে । সেই ঘটনার রেশ শনিবার রাতে রাজনৈতিক সংঘর্ষের আকার নেয় । তৃণমূলের তরফে অভিযোগ, সিপিএমের জেলা নেতা আহমেদ খানের ইন্ধনে বহিরাগত দুষ্কৃতীরা বোমা ও বন্দুক নিয়ে হামলা চালায় মোল্লাপাড়ার পার্টি অফিসে । পার্টি অফিসের সামনে বসে থাকা দলের বেশ কয়েকজন কর্মীকে বেধড়ক মারধর করা হয় । বেশ কয়েক রাউন্ড গুলি এবং বোমাবাজিও করে হামলাকারীরা । পরে পার্টি অফিসে তাণ্ডব চালিয়ে চম্পট দেয় তারা ৷
পাল্টা সিপিএমের অভিযোগ, বেসরকারি কলেজের সামনে কেন বালি ফেলা হয়েছে, সেই অজুহাতে এক দলীয় কর্মীর বাড়িতে হামলা চালায় তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা । মারধর করা হয় তাঁকে ও তাঁর পরিবারকে । সেই কারণে থানায় অভিযোগ করার অপরাধে ফের রাস্তায় ওই কর্মীকে মারধর করে তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা । তার প্রতিবাদ করলে স্থানীয় লোকজনকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করা হয় । তখনই দু'পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায় । ট্রাক চালককে মারধর এবং তাঁর গাড়িতে ব্যাপক ভাঙচুরও করে তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা ৷
ফলে অভিযোগ ও পাল্টা অভিযোগ ঘিরে রাজনৈতিক উত্তাপ বাড়তে শুরু করেছে মধ্যমগ্রাম পুরসভার 1 নম্বর ওয়ার্ডে । এখনও এলাকার পরিস্থিতি থমথমে । চাপা উত্তেজনা থাকায় এলাকায় মোতায়েন রয়েছে বিশাল পুলিশ বাহিনী ৷
এই ঘটনার দায় সিপিএম নেতা আহমেদ খানের ঘাড়েই ঠেলেছেন স্থানীয় তৃণমূল নেতা শেখ গোলাম মোস্তফা । তিনি বলেন, "আহমেদ খানের পরিকল্পনাতেই হামলা, পার্টি অফিস ভাঙচুর, বোমাবাজি ও গুলি চালনা সবকিছু হয়েছে । ওঁর অত্যাচারে মোল্লাপাড়ার বাসিন্দারা অতিষ্ঠ । আমরা চাই পুলিশ ওই সিপিএম নেতাকে দ্রুত গ্রেফতার করুক । নইলে আমরা বৃহত্তর আন্দোলনে নামব ৷"
এদিকে তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করে গোটা ঘটনার জন্য তৃণমূলের দিকেই অভিযোগের আঙুল তুলেছেন সিপিএমের জেলা নেতা আহমেদ খান ।
এই পরিস্থিতিতে দু'পক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে মধ্যমগ্রাম থানার পুলিশ মোট পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে । বাকিদের খোঁজে তল্লাশি চলছে । ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে ।
আরও পড়ুন: ফের আক্রান্ত বিজেপি কর্মী , অভিযোগের তির তৃণমূলের দিকে