ব্যারাকপুর, 9 নভেম্বর: বিগত একমাসে টিটাগড় পৌরসভা এলাকায় একের পর এক খুনের ঘটনায় আতঙ্কিত বাসিন্দারা। বিশেষ করে বুধবার ভর সন্ধ্যায় দুষ্কৃতীদের গুলিতে যুবকের দেহ ঝাঁঝরা হয়ে যাওয়ার ঘটনায় ফের সংবাদের শিরোনামে চলে এসেছে টিটাগড় অঞ্চল। এবার দুষ্কৃতী দৌরাত্ম্য নিয়ে মুখ খুললেন ব্যারাকপুরের বিধায়ক রাজ চক্রবর্তী।
বৃহস্পতিবার এক সাংবাদিক সম্মেলনে ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, "আমি এই ধরনের ঘটনাকে সমর্থন করি না। আমি সবসময় বলে এসেছি নো ক্রাইম, নো ক্রিমিনাল। দুষ্কৃতীরা খুন করে জেলে যাওয়ার কয়েকমাস পরেই আবার জামিন পেয়ে যায়। ফিরে তারাই আবার অপরাধ করে। কারণ তাদের ধারণা জেলে গিয়ে আবার জামিন পেয়ে যাব। তাই সাধারণ মানুষ হিসেবে আমি মনে করি বিচার ব্যবস্থা আরও শক্ত এবং কঠিন হওয়া দরকার ৷"
টিটাগড়ে একের পর এক খুন নিয়ে পুলিশকে নজরদারি বাড়ানোর পাশাপাশি সক্রিয় হওয়ারও পরামর্শ দিয়েছেন ব্যারাকপুরের তৃণমূল বিধায়ক রাজ চক্রবর্তী। তিনি বলেন, "পুলিশকে বলব আরও শক্ত হতে। আমি সবসময় চেয়ে এসেছি টিটাগড়ে অপরাধ সম্পূর্ণ বন্ধ হোক। মাঝে শান্ত ছিল। আবার নতুন করে দুষ্কৃতীদের দৌরাত্ম্য বাড়তে শুরু করেছে। টিটাগড়ে অপরাধ সংস্কৃতি মুক্ত করতেই হবে আমাদের। এজন্য পুলিশের সঙ্গে সাধারণ মানুষকেও এগিয়ে আসতে হবে ৷"
এদিকে, খুনের পিছনে অনেক সময় পারিবারিক কারণও জড়িয়ে যাচ্ছে বলে মনে করেন ব্যারাকপুরের বিধায়ক রাজ চক্রবর্তী। এর জন্য বাড়ির অভিভাবকদেরও তাদের সন্তানের প্রতি বাড়তি নজর দেওয়ার উপদেশ দিয়েছেন তৃণমূল বিধায়ক। প্রসঙ্গত, বুধবার ভর সন্ধ্যায় টিটাগড়ের উড়নপাড়া এলাকায় বাড়ির কাছেই গুলি করে খুন করা হয় বছর 33-এর যুবক মহম্মদ হাসান ওরফে ছোটকা-কে। জনবহুল এলাকায় এই খুনের ঘটনায় ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে ফের একবার প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। ঘটনার গুরুত্ব বিচার করে রাতেই দুই অভিযুক্ত হোসেন রাজা ওরফে আরমান এবং মহম্মদ কবিরকে গ্রেফতার করে টিটাগড় থানার পুলিশ।
ব্যারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিং এই খুনের ঘটনায় মাদক বিক্রি নিয়ে লড়াইয়ের অভিযোগ তুলেছেন। যদিও ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশের দাবি, বছর তিনেক আগে পারিবারিক কোনও বিষয় নিয়ে আরমানের স্ত্রীকে গর্ভবতী অবস্থায় মারধর করেছিল ছোটকা। এরপর আরমানের সন্তান শারীরিক কিছু সমস্যা নিয়ে জন্মায়। আরমানের ধারণা হয় এর জন্য দায়ী ছোটকা। এই কারণেই সে মহম্মদ হাসান-কে খুন করেছে বলে জেরায় জানিয়েছে ৷ অন্যদিকে, বৃহস্পতিবার দুপুরে ধৃত দুই দুষ্কৃতীকে ব্যারাকপুর মহকুমা আদালতে তোলা হলে বিচারক তাদের 10 দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: