বারাসত, 12 অক্টোবর : বাগুইআটি কাণ্ডের ছায়া এবার বারাসতে !
ফের দুই থানার পুলিশের মধ্যে সমন্বয়ের অভাবের অভিযোগ উঠল । নিখোঁজ যুবকের দেহ উদ্ধারের (Barasat Youth Body Recovered) পরও মৃতের পরিবারকে না জানানোর অভিযোগ উঠেছে । নিখোঁজ হওয়ার পাঁচদিনের মাথায় লালবাজার মিসিং স্কোয়াড থেকে খবর পেয়ে যুবকের দেহ সনাক্ত করল পরিবারের লোকেরা । গোটা ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে সরব হয়েছে নিহতের পরিবার । সেই সঙ্গে খুনের অভিযোগও দায়ের হয়েছে বারাসত জিআরপি (Barasat GRP)-তে । অভিযোগ পেয়ে ঘটনার তদন্তে নেমেছে রেল পুলিশ ।
জানা গিয়েছে, নিহত যুবকের নাম ভূতনাথ মণ্ডল । বয়স 23 । বাড়ি বারাসতের দ্বিজহরিদাস কলোনিতে । গত 6 অক্টোবর নিমতলা শশ্মানে দাহকার্য করতে গিয়ে নিখোঁজ হয়ে যান তিনি । যুবকের সন্ধানে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ করা হলেও তাঁর কোনও হদিস পাননি পরিবারের লোকেরা । শেষে একদিন পর বারাসত থানায় (Barasat PS) গিয়ে মিসিং ডায়েরি করে তাঁরা ।
পরিবারের দাবি, "8 অক্টোবর মিসিং ডায়েরি করার পর বারাসত থানার পুলিশ যুবকের বাড়িতে গিয়ে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করে । কিন্তু নিখোঁজের খোঁজ পাওয়ার কোনও রকম আগ্রহ দেখায়নি তাঁরা ৷" বাধ্য হয়ে 9 অগস্ট লালবাজারের দ্বারস্থ হয় যুবকের পরিবার । গঙ্গায় তলিয়ে যাওয়া কয়েকজন যুবকের দেহ উদ্ধারের পর সেদিনই সনাক্তকরণের জন্য ডাকা হয় নিখোঁজ ভূতনাথের পরিবারকে । কিন্তু দেহ সনাক্ত করতে পারেনি তারা ।
এরই মধ্যে লালবাজারের (Lalbazar) মিসিং স্কোয়াড থেকে যুবকের পরিবারকে জানানো হয়, বারাসত জিআরপি এক যুবকের দেহ উদ্ধার করেছে । সেখানে গিয়ে যোগাযোগ করতে বলা হয় পরিবারের সদস্যদের । সেই মতো বারাসত জিআরপি থানায় গিয়ে নিখোঁজ ভূতনাথের দেহ সনাক্ত করেন তাঁরা ।
মৃতের পরিবারের অভিযোগ, বারাসত জিআরপি নিখোঁজ হওয়ার দিনেই দেহটি উদ্ধার করেছিল শিয়ালদা-হাসনাবাদ শাখার চাঁপাপুকুর স্টেশনের কাছে রেললাইনের ধার থেকে । দেহ উদ্ধার হলেও সেই বিষয়ে কোনও তথ্য জানানো হয়নি তাদের ৷ ফলে পাঁচদিন ধরে অজ্ঞাত পরিচয় হিসেবে দেহটি পড়ে থাকে বারাসত জেলা হাসপাতালের লাশকাটা ঘরে । আর এখানেই বারাসত জিআরপি এবং বারাসত থানার পুলিশের সমন্বয়ের অভাব প্রকট হয়েছে ।
এই বিষয়ে মৃত যুবকের আত্মীয় জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, "দুই থানার পুলিশের মধ্যে যদি সমন্বয় না থাকে তাহলে কী বলব আমরা ? এটা ট্রেনে কাটা পড়ে মৃত্যু নয় । আমাদের ধারণা ওকে খুন করে দেহ রেললাইনের ধারে ফেলে দেওয়া হয়েছে । কারণ, ভূতনাথের কাছে প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার টাকা ছিল । সেই টাকার হদিসও পাওয়া যাচ্ছে না । আমরা চাই সঠিক তদন্ত করে এর যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হোক ৷"
এদিকে, দুই থানার পুলিশের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব কিংবা গাফিলতির অভিযোগ মানতে চাননি বারাসত জেলার পুলিশ সুপার রাজনারায়ণ মুখোপাধ্যায় । তিনি বলেন, "নিখোঁজ যুবকের দেহ উদ্ধারের পরপরই তা জানানো হয়েছিল মৃতের পরিবারকে । তারপরও এই ধরণের অভিযোগ করার কোনও মানে নেই ।"
আরও পড়ুন : 60 লক্ষেরও বেশি নগদ উদ্ধার করল নৈহাটি জিআরপিএফ, আটক এক