বারাসত, 19 অগস্ট : আফগানিস্তানে আটকে পড়েছেন বহু ভারতীয় । যাঁরা একসময় কাজের তাগিদে পাড়ি দিয়েছিলেন কাবুলিওয়ালার দেশে । কিন্তু তালিবানি শাসন শুরু হতেই সেখানকার কর্মস্থলে আটকে গিয়েছেন তাঁরা । যে কোনও উপায়ে এখন সেখান থেকে দেশে ফিরতে মরিয়া আটকে পড়া ভারতীয়রা । এদের মধ্যে বেশ কয়েকজন বঙ্গসন্তানও রয়েছেন । উত্তর 24 পরগনার বারাসত এবং বনগাঁর সাত যুবকের খোঁজ মিলেছে, যাঁরা কাজের তাগিদে আফগানিস্তানে গিয়ে আটকে রয়েছেন। তাঁদেরই একজন বারাসতের বাসিন্দা শুভঙ্কর তালুকদার । ফলে ছেলের চিন্তায় চরম উৎকণ্ঠায় দিন কাটছে বাবা-মায়ের ।
বারাসতের ন'পাড়ার বাসিন্দা শুভঙ্করের বাবা স্বপন তালুকদার চাকুরিরত । মা বলানীদেবী গৃহবধূ । দম্পতির একমাত্র সন্তান শুভঙ্কর । প্রায় চারমাস আগে কাজের সুবাদে আফগানিস্তানে পাড়ি দিতে হয়েছিল তাঁকে । কাবুলে আমেরিকার একটি সংস্থার হয়ে ক্যাটারিংয়ের কাজ করতেন শুভঙ্কর । সবকিছু ঠিকঠাকই চলছিল । হঠাৎই ছন্দপতন ঘটে আফগানিস্তান তালিবানদের দখলের পর । গত কয়েকদিন ধরে তালিবান জঙ্গিদের ত্রাসে ত্রস্ত গোটা আফগানিস্তান । পরিস্থিতির আভাস পেয়ে আগেই সেদেশ থেকে পালিয়ে আসতে বাধ্য হন অনেক ভারতীয় । আবার অনেকে আফগানিস্তানেই আটকে পড়েছেন । শুভঙ্করও রয়েছেন সেই দলে । আপাতত আমেরিকান সৈনিকদের নিরাপত্তায় কাবুলের বেস ক্যাম্পে নিরাপদেই রয়েছেন তিনি । তবে পরিস্থিতি যে ক্রমশ ভয়াবহতার দিকে এগোচ্ছে,তা বিলক্ষণ বুঝতে পারছেন শুভঙ্করের মতো আফগানিস্তানে আটকে পড়া অনেক ভারতীয়ই ।
আরও পড়ুন: আগ্নেয়াস্ত্র-সহ বনগাঁ থেকে গ্রেফতার অস্ত্র ব্যবসায়ী ও সঙ্গী
এই পরিস্থিতিতে পরিবারের একমাত্র ছেলে শুভঙ্কর কবে ভারতে ফিরতে পারবেন, তা নিয়ে দুশ্চিন্তা কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে তালুকদার দম্পতিকে । কেন্দ্রীয় সরকারের দিকেই এখন তাকিয়ে রয়েছেন শুভঙ্করের বাবা-মা । তাঁরা মনে করছেন প্রধানমন্ত্রী আটকে পড়া ভারতীয়দের দেশে ফেরাতে নিশ্চয় কোনও না কোনও ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন । এই বিষয়ে শুভঙ্করের বাবা স্বপন তালুকদার বলেন, " গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে ছটা নাগাদ ভিডিও কলে শেষ কথা হয়েছে ছেলের সঙ্গে । তখন ও জানিয়েছিল,আমেরিকান বেস ক্যাম্পে নিরাপদেই রয়েছে । তবে খুব ক্লান্ত । দেশে ফেরার চিন্তায় ঠিকমতো ঘুম হচ্ছে না। একবার বিমানবন্দরে যাচ্ছে । আবার সেখান থেকে ছুটতে হচ্ছে বেস ক্যাম্পে । ফলে ঠিকমতো খাওয়া-দাওয়াও করতে পারছে না ছেলে । যেহেতু আমেরিকান সৈনিকদের নিরাপত্তার মধ্যে ওরা রয়েছে তাই, বিপদের আশঙ্কা কম । এটাই আমাদের কাছে স্বস্তির বিষয় । "