ETV Bharat / state

"কোরোনা হাসপাতাল হোক, চাই না", বিক্ষোভ নার্সদের

author img

By

Published : Jul 14, 2020, 6:18 AM IST

"পরিবারের কথাও তো চিন্তা করতে হবে ৷ তাঁরা যখন চাইছে না তখন কেন ডিউটি করতে যাব ?" সাফাই নার্সদের ৷

Agitation of nurses in Barasat
ছবি

বারাসত, 14 জুলাই : কোরোনা যুদ্ধে পুলিশ, চিকিৎসকের সঙ্গে নার্সরাও প্রথম সারিতে থেকে লড়াই করে আসছেন । সেবাই যাঁদের পেশার মূল মন্ত্র, তখন একেবারে তার ব্যতিক্রমী ছবি সামনে এল উত্তর 24 পরগনার জেলাসদর বারাসতে ৷ কোরোনা হাসপাতালে ডিউটি করলে সংক্রমণ ও সামাজিক বয়কটের মুখে পড়ার আশঙ্কায় সরকারি সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে রীতিমতো পথে নেমে গর্জে উঠলেন বেসরকারি হাসপাতালের নার্সরা । বারাসত চাঁপাডালি মোড় সংলগ্ন যশোর রোডের পাশে ওই বেসরকারি হাসপাতালকে কোরোনা হাসপাতাল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বাস্থ্যদপ্তর । সম্প্রতি এই মর্মে এক নির্দেশিকাও এসেছে জেলা প্রশাসনের কাছে । জনবহুল এলাকায় কোরোনা হাসপাতাল করার সরকারি সিদ্ধান্তে এমনিতেই ক্ষোভে ফুঁসছেন এলাকার বাসিন্দা থেকে ব্যবসায়ীরা । দু-দিন আগেই সরকারি সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে নিয়ে ওই বেসরকারি হাসপাতালের সামনে বিক্ষোভও দেখায় বামেরা । তবে, এতদিন যা আন্দোলন তা এলাকার লোকজন ও রাজনৈতিক দলের মধ্যে থেকেই হচ্ছিল । এবার কোরোনা হাসপাতাল করার সরকারি সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বেঁকে বসলেন খোদ ওই বেসরকারি হাসপাতালের নার্সরাই । গতকাল দুপুরে হাসপাতালের সামনে যশোর রোড অবরোধ করে বিক্ষোভও দেখান তাঁরা । সামিল হন এলাকার বেশকিছু আবাসনের আবাসিকরাও । খবর পেয়ে পুলিশ এসে অবরোধ তুলতে গেলে শুরু হয় বচসা ও বাদানুবাদ । বেশ কিছুক্ষণ ধরে চলে এমন পরিস্থিতি । পরে, একপ্রকার জোর করেই অবরোধ তুলে দেওয়া হয় ।

লকডাউন শিথিল হতেই রাজ্যে কোরোনা পরিস্থিতি জটিল আকার ধারন করেছে ৷ প্রায় প্রতিদিনই সংক্রমণ বাড়ছে ৷ আক্রান্তের নিরিখে কলকাতার পরেই রয়েছে উত্তর 24 পরগনা । এই জেলায় সবচেয়ে উদ্বেগজনক পরিস্থিতি সদর শহর বারাসতে । হুহু করে সংক্রমণ বাড়ছে । এতদিন সংক্রমিতের চিকিৎসার জন্য বারাসতে একটিই কোরোনা হাসপাতাল ছিল । বারাসতের কদম্বগাছির ওই কোরোনা হাসপাতালে দিনদিন রোগীর চাপ বাড়ছিল । সেখানে চাপ কমাতে বারাসতে আরও একটি কোরোনা হাসপাতাল করার সিদ্ধান্ত নেয় স্বাস্থ্যদপ্তর । সেই জন্য বেছে নেওয়া হয় বারাসত চাঁপাডালি মোড়ের কাছে এক বেসরকারি নার্সিংহোমকে । এই নিয়ে এক নির্দেশিকা ইতিমধ্যে এসে পৌঁছেছে জেলা প্রশাসনের কাছে ।

কী বলছেন নার্সরা ?
এদিকে,সরকারি এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রথম থেকেই ক্ষুদ্ধ ছিলেন এলাকার বাসিন্দা থেকে ব্যবসায়ীরা । কারন,এলাকাটি জনবহুল । বেসরকারি হাসপাতালের পাশেই বেশ কয়েকটি আবাসন ও দোকানপাট রয়েছে । হাসপাতালের অদূরে মাছের আড়ত, অটো ও ট্যাক্সি স্ট্যান্ডও আছে । সেখানে নিয়মিত মানুষের আনাগোনা লেগেই থাকে । এরকম একটি জনবহুল এলাকায় কোরোনা হাসপাতাল হলে সংক্রমণ বাড়ার আশঙ্কাও করছেন অনেকে । এসবের মধ্যেই এবার কোরোনা হাসপাতাল করার বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামলেন ওই বেসরকারি হাসপাতালের নার্সরা । হাসপাতালের সামনে যশোর রোডে রীতিমতো বেঞ্চ পেতে প্লাকার্ড হাতে অবরোধ করা হয় । চলে বিক্ষোভও ।


এই বিষয়ে আন্দোলনকারী ওই বেসরকারি হাসপাতালের নার্স মুনমুন সাহা ও সোমা গুহ বলেন, "নার্সিংহোমে কোরোনার চিকিৎসা করা হোক সেটা আমরা চাই না । কারণ আমাদের পরিবার রয়েছে ৷ পরিবার ও প্রতিবেশীরা ভয়ে আছে । তাঁরা চাইছে না আমরা কোরোনা হাসপাতাল ডিউটি করি । তাছাড়া ডিউটি করার পর তো আমরা এলাকাতেই ঢুকতে পারব না ৷ তাহলে ঝুঁকি নিয়ে ডিউটি করে কী হবে?"

কিন্তু, কোরোনা যুদ্ধে তো আপনারাও প্রথম সারিতে থেকে লড়াই করছেন ? তাহলে আপনারা ডিউটি করবেন না কেন ? প্রশ্নের উত্তরে তাঁরা বলেন, "সবই বুঝতে পারলাম ৷ কিন্তু, পরিবারের কথাও তো চিন্তা করতে হবে ৷ তাঁরা যখন চাইছে না তখন কেন ডিউটি করতে যাব ? আমাদের কোনও সুরক্ষা দিতে চাইছে না নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ ৷ ডিউটি করার পর বাড়িতে ঢুকতে না পারলে আমাদের তো আলাদা জায়গায় থাকতে হবে ৷ সেই ব্যবস্থাও করতে রাজি নয় কর্তৃপক্ষ ৷ তাহলে আমরা কোন ভরসায় ডিউটি করব ? আমরা তাই ডিউটি করতে চাইছি না এই কোরোনা হাসপাতালে ৷"

অন্যদিকে,বিষয়টি নিয়ে নার্সিংহোমের প্রশাসক দিব্যেন্দু বোসের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি কিছুই বলতে রাজি হননি । তবে,হাসপাতাল সূত্রে জানা যাচ্ছে সমস্ত রকম সুরক্ষা বিধি মেনেই এই বিষয়ে যাবতীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে । ফলে অযথা আশঙ্কার কোনও কারণ নেই ।

বারাসত, 14 জুলাই : কোরোনা যুদ্ধে পুলিশ, চিকিৎসকের সঙ্গে নার্সরাও প্রথম সারিতে থেকে লড়াই করে আসছেন । সেবাই যাঁদের পেশার মূল মন্ত্র, তখন একেবারে তার ব্যতিক্রমী ছবি সামনে এল উত্তর 24 পরগনার জেলাসদর বারাসতে ৷ কোরোনা হাসপাতালে ডিউটি করলে সংক্রমণ ও সামাজিক বয়কটের মুখে পড়ার আশঙ্কায় সরকারি সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে রীতিমতো পথে নেমে গর্জে উঠলেন বেসরকারি হাসপাতালের নার্সরা । বারাসত চাঁপাডালি মোড় সংলগ্ন যশোর রোডের পাশে ওই বেসরকারি হাসপাতালকে কোরোনা হাসপাতাল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বাস্থ্যদপ্তর । সম্প্রতি এই মর্মে এক নির্দেশিকাও এসেছে জেলা প্রশাসনের কাছে । জনবহুল এলাকায় কোরোনা হাসপাতাল করার সরকারি সিদ্ধান্তে এমনিতেই ক্ষোভে ফুঁসছেন এলাকার বাসিন্দা থেকে ব্যবসায়ীরা । দু-দিন আগেই সরকারি সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে নিয়ে ওই বেসরকারি হাসপাতালের সামনে বিক্ষোভও দেখায় বামেরা । তবে, এতদিন যা আন্দোলন তা এলাকার লোকজন ও রাজনৈতিক দলের মধ্যে থেকেই হচ্ছিল । এবার কোরোনা হাসপাতাল করার সরকারি সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বেঁকে বসলেন খোদ ওই বেসরকারি হাসপাতালের নার্সরাই । গতকাল দুপুরে হাসপাতালের সামনে যশোর রোড অবরোধ করে বিক্ষোভও দেখান তাঁরা । সামিল হন এলাকার বেশকিছু আবাসনের আবাসিকরাও । খবর পেয়ে পুলিশ এসে অবরোধ তুলতে গেলে শুরু হয় বচসা ও বাদানুবাদ । বেশ কিছুক্ষণ ধরে চলে এমন পরিস্থিতি । পরে, একপ্রকার জোর করেই অবরোধ তুলে দেওয়া হয় ।

লকডাউন শিথিল হতেই রাজ্যে কোরোনা পরিস্থিতি জটিল আকার ধারন করেছে ৷ প্রায় প্রতিদিনই সংক্রমণ বাড়ছে ৷ আক্রান্তের নিরিখে কলকাতার পরেই রয়েছে উত্তর 24 পরগনা । এই জেলায় সবচেয়ে উদ্বেগজনক পরিস্থিতি সদর শহর বারাসতে । হুহু করে সংক্রমণ বাড়ছে । এতদিন সংক্রমিতের চিকিৎসার জন্য বারাসতে একটিই কোরোনা হাসপাতাল ছিল । বারাসতের কদম্বগাছির ওই কোরোনা হাসপাতালে দিনদিন রোগীর চাপ বাড়ছিল । সেখানে চাপ কমাতে বারাসতে আরও একটি কোরোনা হাসপাতাল করার সিদ্ধান্ত নেয় স্বাস্থ্যদপ্তর । সেই জন্য বেছে নেওয়া হয় বারাসত চাঁপাডালি মোড়ের কাছে এক বেসরকারি নার্সিংহোমকে । এই নিয়ে এক নির্দেশিকা ইতিমধ্যে এসে পৌঁছেছে জেলা প্রশাসনের কাছে ।

কী বলছেন নার্সরা ?
এদিকে,সরকারি এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রথম থেকেই ক্ষুদ্ধ ছিলেন এলাকার বাসিন্দা থেকে ব্যবসায়ীরা । কারন,এলাকাটি জনবহুল । বেসরকারি হাসপাতালের পাশেই বেশ কয়েকটি আবাসন ও দোকানপাট রয়েছে । হাসপাতালের অদূরে মাছের আড়ত, অটো ও ট্যাক্সি স্ট্যান্ডও আছে । সেখানে নিয়মিত মানুষের আনাগোনা লেগেই থাকে । এরকম একটি জনবহুল এলাকায় কোরোনা হাসপাতাল হলে সংক্রমণ বাড়ার আশঙ্কাও করছেন অনেকে । এসবের মধ্যেই এবার কোরোনা হাসপাতাল করার বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামলেন ওই বেসরকারি হাসপাতালের নার্সরা । হাসপাতালের সামনে যশোর রোডে রীতিমতো বেঞ্চ পেতে প্লাকার্ড হাতে অবরোধ করা হয় । চলে বিক্ষোভও ।


এই বিষয়ে আন্দোলনকারী ওই বেসরকারি হাসপাতালের নার্স মুনমুন সাহা ও সোমা গুহ বলেন, "নার্সিংহোমে কোরোনার চিকিৎসা করা হোক সেটা আমরা চাই না । কারণ আমাদের পরিবার রয়েছে ৷ পরিবার ও প্রতিবেশীরা ভয়ে আছে । তাঁরা চাইছে না আমরা কোরোনা হাসপাতাল ডিউটি করি । তাছাড়া ডিউটি করার পর তো আমরা এলাকাতেই ঢুকতে পারব না ৷ তাহলে ঝুঁকি নিয়ে ডিউটি করে কী হবে?"

কিন্তু, কোরোনা যুদ্ধে তো আপনারাও প্রথম সারিতে থেকে লড়াই করছেন ? তাহলে আপনারা ডিউটি করবেন না কেন ? প্রশ্নের উত্তরে তাঁরা বলেন, "সবই বুঝতে পারলাম ৷ কিন্তু, পরিবারের কথাও তো চিন্তা করতে হবে ৷ তাঁরা যখন চাইছে না তখন কেন ডিউটি করতে যাব ? আমাদের কোনও সুরক্ষা দিতে চাইছে না নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ ৷ ডিউটি করার পর বাড়িতে ঢুকতে না পারলে আমাদের তো আলাদা জায়গায় থাকতে হবে ৷ সেই ব্যবস্থাও করতে রাজি নয় কর্তৃপক্ষ ৷ তাহলে আমরা কোন ভরসায় ডিউটি করব ? আমরা তাই ডিউটি করতে চাইছি না এই কোরোনা হাসপাতালে ৷"

অন্যদিকে,বিষয়টি নিয়ে নার্সিংহোমের প্রশাসক দিব্যেন্দু বোসের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি কিছুই বলতে রাজি হননি । তবে,হাসপাতাল সূত্রে জানা যাচ্ছে সমস্ত রকম সুরক্ষা বিধি মেনেই এই বিষয়ে যাবতীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে । ফলে অযথা আশঙ্কার কোনও কারণ নেই ।

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.