দত্তপুকুর, 28 অগস্ট: বিচারকের তত্ত্বাবধানে দত্তপুকুরের বেআইনি বাজি কারখানায় বিস্ফোরণ ঘটনার তদন্তের দাবি জানিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হচ্ছে কংগ্রেস। বুধবার এমন দাবি জানিয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী। সোমবার তিনি বলেন, "এই বিস্ফোরণের যে ভয়াবহতা তা দেখে মানুষ আজ শিহরিত। আমি আদালতে যাব, তদন্ত চাইব। বিচারকের তত্ত্বাবধানে তদন্ত চাই। অপরাধীদের খুঁজে বের করার দাবি জানাব।পাশাপাশি যারা এই বোমা বিস্ফোরণের ফলে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছেন তাদের আশ্রয় দেওয়ার দায়িত্ব রাজ্য সরকারের ৷ সেই বিষয়টিও আদালতের কাছে জানানো হবে।"
এদিন ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পর অধীর বলেন, "ইতিমধ্যেই আমি বিষয়টি নিয়ে প্রাথমিকভাবে আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলেছি। আমরা খুব শীঘ্রই আদালতের দ্বারস্থ হতে চলেছি। কারণ আদালত ছাড়া এ রাজ্যে কোনও কিছুই পাওয়া সম্ভব নয়।" দত্তপুকুরের ঘটনার সঙ্গে কোনও সন্ত্রাসবাদীর যোগ আছে কি ? সেই প্রশ্নের উত্তরে এদিন তিনি বলেন, "সেটি তদন্ত সাপেক্ষ বিষয়। তদন্ত করলে বোঝা যাবে সন্ত্রাসী না তৃণমূল, কারা এর সঙ্গে জড়িত।" একই সঙ্গে, তিনি পালটা প্রশ্ন তুলেছেন, "যদি সন্ত্রাসবাদী হয়েও থাকে তবে এখানকার পুলিশ-প্রশাসন কী করছিল ? তবে কি তৃণমূল সরকার সন্ত্রাসীদের পুষছে ? এত মশলা, এত আরডিএক্স কোথা থেকে এল ? তারও তদন্ত হওয়া উচিত।"
অধীরের কথায়, "মুখ্যমন্ত্রী কেন চুপ করে বসে আছেন ? তিনি ফোটা দিতে বাইরে যাচ্ছেন, রাখি বাঁধতে পারছেন। তাঁর তো উচিত ছিল দত্তপুকুরে একবার ঘুরে যাওয়া।" প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর অভিযোগ, "তৃণমূলের নেতৃত্বে পুলিশের যোগ সাজোশে এই ধরনের ঘটনা ঘটেছে।তৃণমূল, পুলিশ সকলেই পয়সা খায়। স্বাভাবিকভাবে অপরাধীরা ঘুরে বেড়ায়।" তাঁর অভিমত, এটি একটি সুসংগঠিত শিল্পে পরিণত হয়েছে। সরাসরি এদিন মুখ্যমন্ত্রীকে নিশানা করে তিনি জানান, তাঁর নেতৃত্বে এই বোমা শিল্পের সমস্ত কিছু এখানে হচ্ছে। অধীর বলেন, "এই বিস্ফোরণের ভয়াবহতা দেখে মনে হচ্ছে সাধারণ বোমার মশলা ব্যবহার করা হয়নি। আরডিএক্স হয়ে থাকতে পারে। না হলে এত বড় ইম্প্যাক্ট হতে পারে না। পঞ্চায়েত নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এই বোমায় রাজ্যের সব জায়গায় পৌঁছে ছিল। এই বোমায় আগামী দিনে ব্যবহার করার জন্য মজুদ হচ্ছিল।"
আরও পড়ুন: দত্তপুকুরে পুলিশের বিরুদ্ধে হেনস্থার অভিযোগ তুলে বিতন্ডায় জড়ালেন সেলিম
এদিন দুপুরে দত্তপুকুরের দুর্ঘটনাস্থল ঘুরে দেখেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের সঙ্গেও কথা বলেন তিনি। পাশাপাশি তাজমিরা বিবির ধ্বংস হয়ে যাওয়া বাড়িতে যান অধীর । যে বাড়ির গৃহপ্রবেশ হয় 15 দিন আগে । তাঁর পাকা বাড়িও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বিস্ফোরণের জেরে। বিস্ফোরণে ধ্বংস প্রায় তাজমিরার স্বপ্নের পাকা বাড়ি । ইতিমধ্যেই কর্তব্যে গাফিলতির কারণে নীলগঞ্জ ফাঁড়ির ওসি হিমাদ্রি ডোগরাকে ক্লোজ করে সাসপেন্ড করা হয়েছে। নবান্নের নির্দেশেই এই সিদ্ধান্ত বলে খবর পুলিশ সূত্রে।