বারাসত, 20 নভেম্বর: লেগেই রয়েছে দুর্ঘটনা ! ঘটছে প্রাণহানিও । তারপরও যেন হুঁশ ফিরছে না পুলিশ প্রশাসনের । পর্যাপ্ত ট্রাফিক ব্যবস্থা না থাকায় একপ্রকার বাধ্য হয়েই প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে 34 নম্বর জাতীয় সড়কের মতো গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা পারাপার করতে হচ্ছে পথচলতি মানুষজনকে (Barasat Accident)। ফলে মাঝেমধ্যেই দুর্ঘটনার কবলে পড়তে হচ্ছে পথচারীদের । এই নিয়ে বহুবার প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি । এমনই অভিযোগ তুলে কার্যত পুলিশ প্রশাসনের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফুঁসছেন এলাকার লোকজন (Accident Area not Sufficient Traffic Arrangement)। ঘটনাটি উত্তর 24 পরগনার সদর শহর বারাসতের । দুর্ঘটনা রুখতে একদিকে জাতীয় সড়কের কালীবাড়ি মোড়ে ট্রাফিক ব্যবস্থা যেমন জোরদার করার দাবি উঠেছে । অন্যদিকে তেমনই সেখানে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা করার দাবিও তোলা হয়েছে স্থানীয়দের তরফে । নইলে দুর্ঘটনা প্রবণ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত ওই এলাকায় দুর্ঘটনা আরও বাড়বে বলেই আশঙ্কা এলাকাবাসীর ৷
যানচলাচল মসৃণ করতে ইতিমধ্যে 34 নম্বর জাতীয় সড়ক সম্প্রসারিত হয়েছে । চওড়া হয়েছে বারাসতে জাতীয় সড়কের দু'ধারও । অভিযোগ, রাস্তা সম্প্রসারণ হলেও এখনও 34 নম্বর জাতীয় সড়কের অনেক জায়গাতেই নেই পর্যাপ্ত ট্রাফিক ব্যবস্থা । যেটুকু রয়েছে তার অধিকাংশই নিজের কাঁধে দায়িত্ব তুলে নিয়েছেন সিভিক কিংবা স্বেচ্ছাসেবক । সেই সংখ্যাটাও প্রয়োজনের তুলনায় নেহাতই কম । হাতে গোনা সিভিক এবং স্বেচ্ছাসেবক দিয়ে কোনও রকমে ট্রাফিক ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠেছে । যা স্পষ্টত ধরা পড়েছে বারাসতের কালীবাড়ি মোড়ে ।
আরও পড়ুন: 26 বসন্ত পেরিয়েই থামল লেখনী ! দুর্ঘটনায় প্রয়াত ইটিভি ভারতের সাংবাদিক
পৌরসভার 3, 10, 11 নম্বর ওয়ার্ডের সংযোগস্থলে এই মোড় যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ । রাস্তার এপারে পার হলেই যাওয়া যাবে বারাসত স্টেশনের দিকে । ওপারে দুটি রাস্তার একদিকে রয়েছে হাইস্কুল । আবার জাতীয় সড়কের দু'প্রান্ত সোজা চলে গিয়েছে কলোনি মোড় এবং ময়না চেকপোস্টের দিকে । গুরুত্বপূর্ণ সংযোগস্থল হওয়ায় প্রতিদিন এখান থেকে হাজার হাজার মানুষ যাতায়াত করেন । তাই কালীবাড়ি মোড়কে পাঁচ মাথার মোড় হিসেবেই চেনে অনেকে । গুরুত্বপূর্ণ মোড় হওয়া সত্ত্বেও অথচ সেখানে পর্যাপ্ত ট্রাফিক ব্যবস্থা গড়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ । ফলে বেপরোয়া গতির জেরে দুর্ঘটনা বাড়ছে গুরুত্বপূর্ণ এই মোড়ে । প্রাণও কেড়েছে কয়েকজনের । রাস্তা পার হতে গিয়ে সম্প্রতি বেপরোয়া গতির বলি হতে হয়েছে অসিত হালদার নামে স্থানীয় এক ব্যবসায়ী । তারপর থেকেই সেখানকার ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা নিয়ে যেন ক্ষোভের অন্ত নেই স্থানীয় লোকজনের ।
এই বিষয়ে রাজু মিত্র নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, "দু'জন স্বেচ্ছাসেবক দিয়ে কোনওমতে ট্রাফিক সামলানো হচ্ছে কালীবাড়ি মোড়ে । না আছে এখানে কোনও পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা । আর না আছে সিগন্যালিং ব্যবস্থা । যার ফলে বেপরোয়া গতির বলি হতে হচ্ছে কাউকে না কাউকে । তারপরও পুলিশ প্রশাসনের কোনও ভ্রুক্ষেপ নেই । খুব আতঙ্কের মধ্যে চলাচল করতে হয় এখান থেকে । আমরা চাই এর একটা সুষ্ঠু সমাধান হোক ৷"
একই সুর শোনা গিয়েছে দেবানন্দ রায় নামে অপর এক বাসিন্দার গলাতেও । তাঁর কথায়, ট্রাফিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা দরকার গুরুত্বপূর্ণ এই মোড়ে । নইলে বড়সড় দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছি আমরা ৷"
আরও পড়ুন: প্রয়াত রামোজি গ্রুপের প্রাক্তন অধিকর্তা, বাল্যবন্ধুকে শেষশ্রদ্ধা জানালেন রামোজি রাও
এদিকে দুর্ঘটনা বাড়ায় স্থানীয়দের মতো তিনিও যে উদ্বেগে রয়েছেন তা একপ্রকার স্বীকার করে নিয়েছেন বারাসত পৌরসভার 10 নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর দেবব্রত পাল । তিনি বলেন, "যে কোনও মৃত্যুই দুঃখজনক । কালীবাড়ি মোড়টি সাধারণের কাছে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ । ওখানে যে ট্রাফিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকা দরকার তা নেই বলেই আমার মনে হয়েছে । যেটুকু রয়েছে তাঁদেরও ঠিকমতো দায়িত্ব পালন করা উচিত । শীঘ্রই বিষয়টি নিয়ে আমি জেলার পুলিশ সুপারের দ্বারস্থ হব । আশা করছি, কোনও না কোনও সমাধান সূত্র বেরিয়ে আসবে ৷"