ETV Bharat / state

ঝড় কেড়েছে নীড়, পাখিদের বাসা বাঁধছে টুনিঘাটার যুবক-যুবতিরা - হাবড়া

20 মে বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড় আমফানের দাপটে মানুষ তো গৃহহীন হয়েছেই । সঙ্গে গৃহহীন হয়েছে পাখিরাও । গৃহহীন পাখিদের আশ্রয় দিতে উদ্যোগী হল হাবড়ার কুমড়া, কাশীপুর ও টুনিঘাটা এলাকার একদল যুবক-যুবতি ৷

A group of young people built artificial nests for homeless birds
গৃহহীন পাখিদের কৃত্রিম বাসা
author img

By

Published : Jun 21, 2020, 12:11 AM IST

হাবড়া, 20 জুন : ঘূর্ণিঝড় আমফানে বিপর্যস্ত জনজীবন । বিপর্যস্ত পাখিরাও । গাছের সঙ্গে ভেঙেছে তাদের বাসাও। সেই গৃহহীন পাখিদের আশ্রয় দিতে উদ্যোগী উত্তর 24 পরগনার হাবড়া থানার টুনিঘাটা গ্রামের একদল যুবক-যুবতি । তারা জঙ্গলে ঘুরে ঘুরে পাখিদের জন্য কৃত্রিম বাসা বেঁধে দিচ্ছে ।

20 মে বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড় আমফানে রাজ্যের 14টি জেলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে । উত্তর 24 পরগনার 22টি ব্লকের মধ্যে হাবড়াতেও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে । হাবড়ার খাড়ো, রুদ্রপুর, কাশীপুর, কুমড়া, ফুলতলা ও সংহতি-সহ বিভিন্ন গ্রামের বাড়িঘর, গাছপালা তছনছ হয়ে গিয়েছে । মানুষ তো গৃহহীন হয়েছেই । সঙ্গে গৃহহীন হয়েছে পাখিরাও । ঝড়ের দাপটে নষ্ট হয়েছে বহু পাখির বাসা । পাখি মারাও পড়েছে অসংখ্য । গৃহহীন পাখিদের আশ্রয় দিতে উদ্যোগী হলেন হাবড়ার কুমড়া, কাশীপুর ও টুনিঘাটা এলাকার সমীরণ কাঞ্জিলাল, সঞ্জীব কাঞ্জিলাল, সজল মালাকার, রুমা মণ্ডল-সহ একদল যুবক-যুবতি । তারা জঙ্গল ঘুরে ঘুরে বিভিন্ন গাছে কৃত্রিম বাসা বেঁধে দিচ্ছে । ওই যুবক-যুবতিরা পাখির বাসা তৈরি করার জন্য কিনেছেন ছোটো ছোটো মাটির ভাঁড় । সেগুলোকে ছিদ্র করে উপরটা আর একটা সরা দিয়ে ঢেকে দিচ্ছেন । ভাঁড়ের ভিতরে পাখিদের আরামদায়ক বিছানা তৈরির জন্য বিচালির টুকরোও ভরে দিচ্ছেন । শুধু তা-ই নয়, কাগজের কাপে করে পাখিদের খাবারও ওই বাসার মধ্যে দিয়ে দেওয়া হচ্ছে । ওই যুবকরা সকাল হলেই মই আর মাটির ভাঁড়ের তৈরি পাখির বাসা নিয়ে ফুলতলা, সংহতি, কুমড়া, রুদ্রপুর ও টুনিঘাটার জঙ্গলে জঙ্গলে ঘুরছেন । গাছে গাছে বেঁধে দিচ্ছেন কৃত্রিম ওই পাখির বাসা ।

হাবড়া শ্রীচৈতন্য কলেজের ছাত্রী রুমা মণ্ডল বলেন, "আমফান ঘূর্ণিঝড়ে শুধু মানুষই ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি । ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পাখিরাও। গাছ ভেঙে পড়েছে। তাহলে পাখির বাসা কি আর থাকে? সেই পাখিদের আমরা ফিরিয়ে আনতে চাই । তাই গাছে গাছে আমরা কৃত্রিম পাখির বাসা বেঁধে দিচ্ছি ।"

আর এক যুবক সজল মালাকার বলেন, "মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হলে ত্রাণ পায় । কিন্তু পাখিদের কথা ক'জন ভাবেন? অথচ পাখিরাও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার্থে অন্যতম ভূমিকা পালন করে । তাই আমরা তাদের বাসা বেঁধে দিচ্ছি।"

উদ্যোক্তা সঞ্জীব কাঞ্জিলাল বলেন, "বাংলার প্রকৃতি মানে পাখির কলরব। ঘূর্ণিঝড়ের পরে সেই পাখিরা আজ বিপন্ন জীব হয়ে পড়েছে। পরিবেশের বস্তুতন্ত্রের ভারসাম্য রক্ষা করতে হলে পাখিদের বাঁচাতেই হবে। তাই তাদের জন্য আমরা জঙ্গলে বাসা বেঁধে দিচ্ছি ।"

পাখিদের বাঁচাতে ওই যুবকদের উদ্যোগকে কুর্নিশ করেছেন শিক্ষক তথা পরিবেশপ্রেমী শংকর বাগচি । তিনি বলেন, "পাখিরা বাস্তুতন্ত্রের গুরুত্বপূর্ণ শরিক। তারা পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় বিপুল অবদান রাখে । টুনিঘাটার যুবক-যুবতিরা ঝড়ে গৃহহীন হয়ে পড়া পাখিদের বাঁচাতে যে উদ্যোগ নিয়েছে, তাকে স্বাগত জানাচ্ছি । ওই যুবকদের দেখে যদি সবাই এগিয়ে আসেন, তাহলে বাংলার প্রকৃতি আবার পাখির কলরবে ভরে উঠবে ।"

পরিবেশপ্রেমীদের মতে, গোটা দেশে আজ নির্বিচারে পশুপাখি হত্যা চলছে । তা সে কোথাও হাতি তো কোথাও ময়ূর । ঠিক তার উলটো পথে হেঁটে হাবড়ার যুবক-যুবতিরা নীড় ভাঙা পাখিদের জীবনের স্রোতে ফেরাতে বেনজির উদ্যোগই নিয়েছেন ।

হাবড়া, 20 জুন : ঘূর্ণিঝড় আমফানে বিপর্যস্ত জনজীবন । বিপর্যস্ত পাখিরাও । গাছের সঙ্গে ভেঙেছে তাদের বাসাও। সেই গৃহহীন পাখিদের আশ্রয় দিতে উদ্যোগী উত্তর 24 পরগনার হাবড়া থানার টুনিঘাটা গ্রামের একদল যুবক-যুবতি । তারা জঙ্গলে ঘুরে ঘুরে পাখিদের জন্য কৃত্রিম বাসা বেঁধে দিচ্ছে ।

20 মে বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড় আমফানে রাজ্যের 14টি জেলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে । উত্তর 24 পরগনার 22টি ব্লকের মধ্যে হাবড়াতেও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে । হাবড়ার খাড়ো, রুদ্রপুর, কাশীপুর, কুমড়া, ফুলতলা ও সংহতি-সহ বিভিন্ন গ্রামের বাড়িঘর, গাছপালা তছনছ হয়ে গিয়েছে । মানুষ তো গৃহহীন হয়েছেই । সঙ্গে গৃহহীন হয়েছে পাখিরাও । ঝড়ের দাপটে নষ্ট হয়েছে বহু পাখির বাসা । পাখি মারাও পড়েছে অসংখ্য । গৃহহীন পাখিদের আশ্রয় দিতে উদ্যোগী হলেন হাবড়ার কুমড়া, কাশীপুর ও টুনিঘাটা এলাকার সমীরণ কাঞ্জিলাল, সঞ্জীব কাঞ্জিলাল, সজল মালাকার, রুমা মণ্ডল-সহ একদল যুবক-যুবতি । তারা জঙ্গল ঘুরে ঘুরে বিভিন্ন গাছে কৃত্রিম বাসা বেঁধে দিচ্ছে । ওই যুবক-যুবতিরা পাখির বাসা তৈরি করার জন্য কিনেছেন ছোটো ছোটো মাটির ভাঁড় । সেগুলোকে ছিদ্র করে উপরটা আর একটা সরা দিয়ে ঢেকে দিচ্ছেন । ভাঁড়ের ভিতরে পাখিদের আরামদায়ক বিছানা তৈরির জন্য বিচালির টুকরোও ভরে দিচ্ছেন । শুধু তা-ই নয়, কাগজের কাপে করে পাখিদের খাবারও ওই বাসার মধ্যে দিয়ে দেওয়া হচ্ছে । ওই যুবকরা সকাল হলেই মই আর মাটির ভাঁড়ের তৈরি পাখির বাসা নিয়ে ফুলতলা, সংহতি, কুমড়া, রুদ্রপুর ও টুনিঘাটার জঙ্গলে জঙ্গলে ঘুরছেন । গাছে গাছে বেঁধে দিচ্ছেন কৃত্রিম ওই পাখির বাসা ।

হাবড়া শ্রীচৈতন্য কলেজের ছাত্রী রুমা মণ্ডল বলেন, "আমফান ঘূর্ণিঝড়ে শুধু মানুষই ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি । ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পাখিরাও। গাছ ভেঙে পড়েছে। তাহলে পাখির বাসা কি আর থাকে? সেই পাখিদের আমরা ফিরিয়ে আনতে চাই । তাই গাছে গাছে আমরা কৃত্রিম পাখির বাসা বেঁধে দিচ্ছি ।"

আর এক যুবক সজল মালাকার বলেন, "মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হলে ত্রাণ পায় । কিন্তু পাখিদের কথা ক'জন ভাবেন? অথচ পাখিরাও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার্থে অন্যতম ভূমিকা পালন করে । তাই আমরা তাদের বাসা বেঁধে দিচ্ছি।"

উদ্যোক্তা সঞ্জীব কাঞ্জিলাল বলেন, "বাংলার প্রকৃতি মানে পাখির কলরব। ঘূর্ণিঝড়ের পরে সেই পাখিরা আজ বিপন্ন জীব হয়ে পড়েছে। পরিবেশের বস্তুতন্ত্রের ভারসাম্য রক্ষা করতে হলে পাখিদের বাঁচাতেই হবে। তাই তাদের জন্য আমরা জঙ্গলে বাসা বেঁধে দিচ্ছি ।"

পাখিদের বাঁচাতে ওই যুবকদের উদ্যোগকে কুর্নিশ করেছেন শিক্ষক তথা পরিবেশপ্রেমী শংকর বাগচি । তিনি বলেন, "পাখিরা বাস্তুতন্ত্রের গুরুত্বপূর্ণ শরিক। তারা পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় বিপুল অবদান রাখে । টুনিঘাটার যুবক-যুবতিরা ঝড়ে গৃহহীন হয়ে পড়া পাখিদের বাঁচাতে যে উদ্যোগ নিয়েছে, তাকে স্বাগত জানাচ্ছি । ওই যুবকদের দেখে যদি সবাই এগিয়ে আসেন, তাহলে বাংলার প্রকৃতি আবার পাখির কলরবে ভরে উঠবে ।"

পরিবেশপ্রেমীদের মতে, গোটা দেশে আজ নির্বিচারে পশুপাখি হত্যা চলছে । তা সে কোথাও হাতি তো কোথাও ময়ূর । ঠিক তার উলটো পথে হেঁটে হাবড়ার যুবক-যুবতিরা নীড় ভাঙা পাখিদের জীবনের স্রোতে ফেরাতে বেনজির উদ্যোগই নিয়েছেন ।

ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.