পুরুলিয়া : পুরুলিয়ার দেউলঘাটায় আড়াই হাজার বছরের পুরানো দুর্গামূর্তি পূজিত হয় ৷ বৌদ্ধমন্দিরের আদলে তৈরি এই মন্দির ৷ মন্দিরের গায়ে রয়েছে পাথরের ভাস্কর্য ৷ এক সময় তাম্রলিপ্তের বণিকরা ঝড়িখণ্ডিতে বাণিজ্যের কাজে আসতেন ৷ কংসাবতী নদীর পাশে দেউলঘাটায় নৌকা বেঁধে রাখতেন তাঁরা ৷ এই মন্দিরটিতে এসে তাঁরা দেবীর কাছে পুজো দিতেন ৷ তারপর দু'হাজার বছরের বেশি কেটে গেছে । এখন আর সেভাবে মন্দিরের রক্ষণাবেক্ষণ হয় না ৷ ঐতিহ্যই ভাঙাচোরা মন্দিরটির একমাত্র সম্পদ ৷
সাধারণত, দুর্গা মূর্তিতে দেবীর বাঁ পা মহিষের উপর থাকে ৷ এই মূর্তির ক্ষেত্রে তা উলটো ৷ পাথরের তৈরি এই মূর্তিতে দেবীর ডান পা মহিষের উপর রয়েছে ৷ এখনও নিত্য পুজো হয় দেবীর ৷
মন্দিরের সাধিকা মিঠু মুখার্জি । তিনি তাঁর গুরুদেবের সঙ্গে এই মন্দিরে প্রথম আসেন ৷ তাঁর কাছেই মিঠু শোনেন প্রথমে দেবীর পুজো হত গাছের নিচে ৷ দেউলঘাটা মন্দির থাকলেও মন্দিরের ভেতরে এই মূর্তির প্রতিষ্ঠা ছিল না ৷ কিন্তু খোলা আকাশের নীচে মূর্তি নষ্ট হয়ে যেতে পারে এই আশঙ্কায় তা মন্দিরের ভেতরে প্রতিষ্ঠা করা হয় ৷
মিঠু মুখোপাধ্যায় জানান, পুজোর চারদিন ভিড় বাড়ে মন্দিরে ৷ প্রচুর দর্শনার্থী আসেন সেই সময় ৷ বাইরের রাজ্য থেকেও অনেকে আসেন ৷ শহরের পুজোর জাঁকজমক তাঁদের এখানে নেই । আছে শুধু ভক্তি ও নিষ্ঠা । এই মন্দির প্রকৃতির । এই পুজো তাই প্রকৃতির কোলেই হয় ৷ সামনেই পুজো, আজ তৃতীয়া ৷ ষষ্ঠীতে দেবীর বোধন । নিয়ম মেনে এখন তারই প্রস্তুতি চলছে দেউলঘাটার এই দুর্গা মন্দিরে ৷