পুরুলিয়া, 21 জুলাই: 100 শতাংশ বিশেষভাবে সক্ষম হয়েও কোনওরকম সাহায্য বা সুবিধা তো দূরঅস্ত নিজের প্রাপ্য রেশন টুকুও পায় না পুরুলিয়া 2 নম্বর ব্লকের ভাঙড়া পঞ্চায়েতের কড়চা গ্রামের বাসিন্দা সুনীতা বাগদি । বুধবার ইটিভি ভারতের কাছে বিষয়টি জানার পরই পুরুলিয়া 2 নম্বর ব্লকের বিডিও দেবজিত রায় জানিয়েছিলেন দ্রুত বিষয়টি দেখছি বলে (Sunita Bagdi is Deprived of Facilities Despite Being Specially Abled) । তারপরই বৃহস্পতিবার 24 ঘণ্টার আগেই সুনীতার বাড়িতে পৌঁছে গেল ব্লকের তরফে একটি প্রতিনিধি দল । এই বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে বিডিও দেবজিত রায় বলেন, "ব্লকের প্রতিনিধি দল ওনার বাড়িতে পরিদর্শনে গিয়েছিলেন, প্রয়োজনীয় আশ্বাস দেওয়া হয়েছে ।"
সুনীতাদের প্রতিবেশী সুকুমার বাউরি বলেন, "আজ ব্লকের প্রতিনিধি দল এবং পঞ্চায়েত প্রধান এসেছিলেন উনারা এসে আশ্বাস দিয়েছেন সুনীতার আধার কার্ড করিয়ে দেওয়া হবে । আপাতত তারা 25 কেজি চাল দিয়ে গিয়েছেন এবং আশ্বাস দেওয়া হয়েছে যতদিন পর্যন্ত না তার রেশন চালু হচ্ছে ততদিন পর্যন্ত জিআর-এর ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে । সুনীতা বাগদিকে স্থানীয় কড়চা জুনিয়র স্কুলে ক্লাস সিক্সে ভর্তি করা হয়েছে এবং সুনীতার মায়ের সঙ্গে তার একটা যুগ্ম অ্যাকাউন্ট খোলার ব্যবস্থা করা হচ্ছে ।"
আরও পড়ুন : ঘর ছেড়েছে স্বামী, বিশেষভাবে সক্ষম দুই সন্তানকে নিয়ে আতান্তরে ক্যান্সার আক্রান্ত মহিলা
বছর ষোলোর সুনীতা বাগদির জন্ম থেকেই সম্পূর্ণ অন্ধ । 100 শতাংশ বিশেষভাবে সক্ষম সে । ডাক্তারের দেওয়া বিশেষভাবে সক্ষমের শংসাপত্র আছে অথচ সমস্ত রকম সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত সুনীতা । কারণটা জানালেন সুনিতার মা সরস্বতী বাগদি । মেয়ে জন্মান্ধ হওয়ায় তার আধার কার্ড হয়নি । আধার কার্ড না-থাকার ফলে আধারের সঙ্গে রেশন কার্ড লিংক করাতে না-পারার ফলে তার রেশনও বন্ধ । বিশেষভাবে সক্ষম শংসাপত্র থাকা সত্ত্বেও মেয়ের 'প্রতিবন্ধী ভাতা' চেয়েও পাননি সরস্বতী দেবী । বাবা অজিত বাগদি একবার লোহার কাজ করতে গিয়ে উপর থেকে পড়ে হাত ভেঙে যায় । হাত ভাঙার পর আর তিনি ভারি কাজ করতে পারেন না ।
এখনও কোনও মতে দিন মজুরির কাজে তাদের সংসার টেনেটুনে চলে বলে জানালেন সরস্বতীদেবী । আর সুনীতার দিন কাটে বাড়িতে খেলাধুলা করে । মাঝে মধ্যেই চুপ চাপ এক জায়গায় বসে থাকে । তবে হ্যাঁ গান করতে ভালোবাসে সে । ইটিভি ভারতের কাছে গান গেয়ে শোনায় । তবে সরকারি সুযোগ সুবিধা কোনওটাই পায় না সুনীতা । কথা বলায় কোনওরকম আড়ষ্ঠতা নেই তার । রেশনের চাল-গম কি পাও তুমি ? জিজ্ঞাসা করতেই সুনীতা বলে, সে কিছুই পায় না । কী করে খাবার খায় সে ? জিজ্ঞাসা করাতে বলে "আন্দাজে কোনওমতে হাতড়ে হাতড়ে খাই ।"
আরও পড়ুন : বাড়িতে এসে ভ্যাকসিন দেওয়ার আর্জি বিশেষভাবে সক্ষমদের