নন্দীগ্রাম (পূর্ব মেদিনীপুর), 10 নভেম্বর: শহিদ দিবস পালন ঘিরে পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দীগ্রামে (Nandigram) উত্তেজনা ছড়াল ৷ বৃহস্পতিবার সেখানকার সোনাচূড়ায় শহিদ মিনারে তৃণমূল কংগ্রেসের (Trinamool Congress) তরফ থেকে ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির কর্মসূচি ছিল ৷ ওই কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে শাসক দলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে গোলমাল বাঁধে ৷ আর তার জেরেই উত্তেজনা ছড়ায় বলে অভিযোগ ৷
তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র কুণাল ঘোষের (Kunal Ghosh) সামনেও বিক্ষোভ দেখানো হয় ৷ তিনি অবশ্য এই ঘটনার নেপথ্যে বিজেপির (BJP) চক্রান্ত রয়েছে বলে মনে করেন ৷ যাঁরা গোলমাল করছিলেন, তাঁদের উদ্দেশ্যে তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘‘অনুষ্ঠান বানচাল করার জন্যই কেউ তোমাদের কি পাঠিয়েছে ?’’
প্রসঙ্গত, সকালে তৃণমূলের উদ্যোগে শহিদ দিবস পালন করা হচ্ছে ৷ দুপুর 3টে নাগাদ নন্দীগ্রামের গোকুলনগরে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari) শহিদ দিবস পালন করবেন ৷ তাই তৃণমূলের সভা বানচাল হলে শুভেন্দুও সভা করতে পারবেন না বলে নাম না করে কুণাল ঘোষ হুঁশিয়ারি দেন ৷ তিনি বলেন, ‘‘যদি এই ধরনের কর্মকাণ্ড চলতে থাকে, বিকেল ৩টের সময় মঞ্চ সমেত উপড়ে ফেলে দিয়ে আসব ।’’
প্রসঙ্গত, 2007 সালে নন্দীগ্রাম পুনর্দখলে সিপিএম (CPIM) হামলা চালিয়েছিল বলে অভিযোগ ওঠে ৷ পরে নেতারা সেই ঘটনাকে অপরাশেন সূর্যোদয় বলেছিলেন ৷ তৃণমূলের অভিযোগ, সেদিন 10 জন গ্রামবাসী নিখোঁজ হয়ে যান ৷ তার পর থেকে এই দিনটিতে শহিদ দিবস পালন করা হয় ৷ 2019 সাল পর্যন্ত তৃণমূল কংগ্রেসের উদ্যোগেই এই শহিদ দিবস পালন হয়ে আসছে ৷ কিন্তু 2020 সাল থেকে এই অনুষ্ঠানে চিড় ধরতে শুরু করে ৷ গত বছর তৃণমূল ও বিজেপি আলাদা ভাবে শহিদ দিবস পালন করেছিল ৷
এবারও তেমনভাবে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হচ্ছে ৷ সকালে তৃণমূলের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় ৷ সেই অনুষ্ঠানে তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ, রাজ্যের কারামন্ত্রী অখিল গিরি, নন্দীগ্রামের তৃণমূল নেতা শেখ সুফিয়ান-সহ অন্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন ৷ এঁদের মধ্যে শেখ সুফিয়ানের মঞ্চে থাকা নিয়ে গোলমাল বাঁধে ৷ বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন তৃণমূল কর্মীদের একাংশ ৷
তাঁদের প্রশ্ন, পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুক সাংগঠনিক জেলায় তৃণমূল কংগ্রেসের চেয়ারম্যান পীযূষকান্তি ভূঁইয়াকে কেন মঞ্চে ডাকা হল না ? কেন শেখ সুফিয়ানের মঞ্চে জায়গা হল ? সামনে কুণাল ঘোষকে পেয়ে তাঁকে ঘিরেই চলতে থাকে বিক্ষোভ ৷ সেই বিক্ষোভের জেরে মঞ্চে প্রায় আধঘণ্টা বসে থাকলেও ভাষণ দিতে পারেননি কুণাল ৷
পরে তিনি বিক্ষোভকারীদের থামাতে রীতিমতো ধমক দেন ৷ তিনি বলেন, ‘‘অন্তত 30 মিনিট আগে আমি এসেছি । যদি কিছু বলার থাকত আমাকে বলতে পারতে । শহিদদের অনুষ্ঠান বানচাল করার জন্যই কেউ তোমাদের কি পাঠিয়েছে ? যদি এই ধরনের কর্মকাণ্ড চলতে থাকে বিকেল ৩টের সময় মঞ্চ সমেত উপড়ে ফেলে দিয়ে আসব । এটা ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির সভা । এটা কোনও দলের সভা নয় । আর কোনও আওয়াজ নয় । কে কোন পদে গিয়েছে, আপত্তি থাকতে পারে ভাই । তোমাদের আবেদনও থাকবে । তোমাদের আবোদনও আমরা নেতৃত্ব আছি শুনব ।’’
আরও পড়ুন: বিজেপি দরজায় শুভেন্দুকে বেঁধে রেখেছে শুধুমাত্র ঘেউ ঘেউ করার জন্য: কুণাল