নন্দীগ্রাম, 23 অক্টোবর: শুভেন্দু’র গড় নন্দীগ্রামেই এবার বিজেপিতে ভাঙন (BJP Factionalism in Nandigram) ৷ আদি-নব্যের দ্বন্দ্বের জেরে বিজেপির একঝাঁক পুরনো নেতা ও কর্মী বিজেপি ছেড়ে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিলেন (Nandigram BJP Leaders Threatening to Quit Party) ৷ আর সেই সঙ্গে রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikari) বিরুদ্ধেই তাঁদের সব ক্ষোভ উগড়ে দিলেন ৷ অভিযোগ, শুভেন্দু অধিকারী বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর থেকে তাঁদের কেউ গুরুত্ব দেয় না ৷ যাদের হাত ধরে 2019 লোকসভায় বিজেপি রাজ্যে নিজেদের শক্তি দেখিয়েছিল, তাদেরই আজ ব্রাত্য করে রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে ৷
আর সেই ক্ষোভেই এ দিন সাংবাদিক বৈঠক করে নন্দীগ্রামের সেইসব বিজেপি নেতারা সমস্ত পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন ৷ স্বভাবতই চাপে রাজ্যের বিরোধী দল ৷ সামনেই রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচন ৷ আর আগে বিজেপির সংগঠনের দায়িত্বে থাকা নেতারা পদত্যাগ করায়, মাথায় হাত পড়েছে জেলা বিজেপি নেতৃত্বের ৷ এদিন সেই সব বিজেপি ছাড়া নেতারা অভিযোগ করেছেন, শুভেন্দু অধিকারী বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর থেকেই তাঁদের কোণঠাসা করে দেওয়া হয়েছে ৷ তাঁরা সংগঠনের দায়িত্বে থাকলেও, মতামতকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না ৷
বিক্ষুব্ধ ওই বিজেপি নেতারা জানিয়েছেন, শাসকদলের অত্যাচারের শিকার তাঁরা নন ৷ কিন্তু, বিজেপির মধ্যে থেকেই মানসিকভাবে নির্যাতিত হচ্ছেন তাঁরা ৷ এ নিয়ে 31 অক্টোবর পর্যন্ত রাজ্য নেতৃত্বকে সময় দিয়েছেন তাঁরা ৷ এই সময়ের মধ্যে সমস্যার সমাধান না করলে, পরবর্তী ক্ষেত্রে কঠোর সিদ্ধান্ত নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তাঁরা ৷ পূর্ব মেদিনীপুর বিজেপির এই বিক্ষুব্ধদের নেতা হলেন, বটকৃষ্ণ দাস ৷ তিনি বিজেপির যুবমোর্চা কাঁথি সাংগঠনিক জেলার দায়িত্বে ছিলেন আগে ৷ পাশাপাশি, বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্যও ছিলেন ৷ জেলা কমিটির সদস্য তথা নন্দীগ্রামের বিজেপি নেতা শিবশঙ্কর সাহু-সহ বেশ কয়েকজন মণ্ডল সভাপতির নাম ওই তালিকায় রয়েছে ৷
আরও পড়ুন: শাসক-বিরোধী কাজিয়া, শুভেন্দুর সভার আগে উত্তপ্ত নন্দীগ্রাম
এ দিন বিজেপি নেতা জয়দেব দাস সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, ‘‘2019 সালের তৎকালীন তৃণমূলের নেতাদের চোখে চোখ রেখে বিজেপি করেছিলাম ৷ কিন্তু, এখন আমাদেরকে নিয়ে জেলা নেতৃত্বরা একবারও বসে না ৷ এমনকী আমরা রাজ্য নেতৃত্বকে জানালে বলা হয়, এটা শুভেন্দু অধিকারী বিধানসভা কেন্দ্র ৷ তাঁর সম্মতি ছাড়া আমরা আপনাদের সঙ্গে বৈঠক করতে পারব না ৷ আর আমি চণ্ডীপুরে দায়িত্ব থাকলেও, নন্দীগ্রাম আমার বাসস্থান ৷ তাই দলীয় কোনও কর্মসূচিতে আমাকে ডাকতে হবে, এইটাই দলের শৃঙ্খলা ৷ সেই শৃঙ্খলা কোনও মতেই মানা হচ্ছে না ৷’’
যদিও তমলুক সাংগঠনিক জেলা বিজেপির সহ-সভাপতি প্রলয় পাল বলেন, ‘‘এটা খুবই দুঃখজনক ঘটনা ৷ ওঁরা দলের পুরনো নেতা, দলের সম্পদ ৷ দল থেকে ছেড়ে যাওয়া খুবই দুঃখজনক ব্যাপার ৷ আশাকরি দল এদের সঙ্গে আলোচনা করে আবার ফিরিয়ে আনবে ৷’’
এ নিয়ে বিজেপিকে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি তৃণমূল ৷ নন্দীগ্রাম 1 ব্লকের তৃণমূল সভাপতি বাপ্পাদিত্য কর বলেন, ‘‘এটা বিজেপির আভ্যন্তরীণ বিষয় ৷ এইটুকু বলতে পারি শুভেন্দু অধিকারী যেদিন থেকে বিজেপিতে যোগদান করেছেন, সেই দিন থেকে আদি বিজেপিরা গুরুত্ব হারিয়েছেন ৷ তাই এখন বিজেপির মধ্যে আদি ও নব্য বিজেপির মধ্যে দড়ি টানাটানি চলছে ৷’’