মহিষাদল, 12 জুলাই : গত বছর করোনার জন্য 245 বছরের প্রাচীন রথের রশিতে টান পড়েনি । আশা ছিল এবছর জগন্নাথদেব রথে চড়ে মাসির বাড়ি যাবেন ৷ কিন্তু এ বছরেও বাধ সাধল করোনা ৷ যেভাবে করোনার ভয়াল থাবা মানুষের স্বাভাবিক জনজীবন বিপর্যস্ত করেছে তাতে এ বছরও বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে পূর্ব মেদিনীপুরের 245 বছরের প্রাচীন মহিষাদলের রথ । আর তাই আজ রথযাত্রায় মন খারাপ মহিষাদলবাসীর ।
প্রায় 245 বছরের প্রাচীন মহিষাদল রাজবাড়ির রথ । ইতিহাস বলছে, রাজা আনন্দলাল উপাধ্যায়ের সহধর্মিণী ধর্মপ্রাণ রানি জানকী দেবী প্রথম মহিষাদলে রথের সূচনা করেছিলেন । যার পর বেশ কয়েকবার এই রথ সংস্কার করা হয়েছে । প্রথমে এই রথ ছিল সতেরো চূড়ার । কিন্তু আজ তা ঠেকেছে তেরো চূড়াতে ।
মহিষাদল রথের ব্যতিক্রমী বিষয় হল এখানকার রথে জগন্নাথদেবের সঙ্গে যান রাজবাড়ির কুলদেবতা শ্রী মদনগোপাল জিঊ । প্রতি বছর এই দিনে রথ টানতে হাজার হাজার ভক্ত ভিড় জমাতেন । ভিড় জমত রথের মেলাতেও । মহিষাদলের রথতলা ও ছোলাবাড়ি প্রাঙ্গণে কয়েকশো দোকান নিয়ে গমগম করত প্রায় একমাস ধরে চলা এই রথের মেলা । কাঁঠালপট্টির কাঁঠালের গন্ধে মম করতো গোটা এলাকা । কিন্তু বিগত দু'বছরে সবকিছুই কেমন যেন ফিকে হয়ে এসেছে ।
আরও পড়ুন : রথের দড়ি টানতে করোনা টিকার দু'টি ডোজ় বাধ্যতামূলক, লাগবে আরটিপিসিআর রিপোর্টও
গত বছরও করোনার জেরে বন্ধ ছিল রথযাত্রা । যার পুনরাবৃত্তি এবছরও, মহিষাদলে গড়াবে না রথের চাকা । এর পরিবর্তে রাজবাড়ির পালকি চড়ে জগন্নাথদেব যাবেন মাসির বাড়ি ৷ প্রাচীন যাবতীয় রীতি মেনেই রথের পুজো সম্পন্ন হবে ৷ কেবল রশিতে পড়বেনা টান ৷ গড়াবে না চাকা ৷
রবিবার বিকেলে অন্যান্য বছরের মতই রথের ওপর চড়ানো হয় রাজবাড়ির কলস । চলে পুজো পাঠও । কিন্তু রথ টানতে পারবেন না ভেবে মন খারাপ ভক্তদের । সামাজিক দূরত্বের কথা মাথায় রেখেই রথযাত্রা বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানান রাজবাড়ির সদস্যরা ।