রামনগর, 18 জুলাই: ভোট পরবর্তী হিংসার বলি স্থানীয় তৃণমূল নেতা। ঘটনাটি পূর্ব মেদিনীপুর জেলার রামনগর বিধানসভার রামনগর 1 নম্বর ব্লকের হলদিয়া দু'নম্বর অঞ্চলের কনিওরা দক্ষিণ বুথের। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ওই এলাকার তৃণমূল কর্মী চন্দন সামন্ত 1998 সাল থেকে তৃণমূল কংগ্রেস করেন। এবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনে হেরে যান। তারপর চন্দন সামন্তকে এলাকার বিজেপির কর্মকর্তা নির্মল সামন্ত নামে এক ব্যক্তি মানসিক নির্যাতন করতে থাকে বলে অভিযোগ।
তিনি মানসিকভাবে মর্মাহত হয়ে পড়েন। গতকাল, সোমবার রাতে খাওয়া-দাওয়ার পর ঘরের দরজা দিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। আজ, মঙ্গলবার বেলা গড়াতে পরিবারের লোকজনরা দেখেন দরজা বন্ধ রয়েছে। অনেক ডাকাডাকি করলেও দরজা না-খোলায় জানলা দিয়ে দেখেন চন্দন সামন্ত গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুলে রয়েছেন। তারপর খবর দেওয়া হয় রামনগর থানায়। ঘটনাস্থলে রামনগর থানার পুলিশ এসে মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কাঁথি মহকুমা হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
তবে, মৃত তৃণমূল নেতা চন্দন সামন্তের কাছ থেকে একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার করেছে পুলিশ। তাতে লেখা রয়েছে, "আমি চন্দন সামন্ত আমার মৃত্যুর জন্য দায়ী নির্মল সামন্ত ওরফে অপু ও তার পিতা প্রভাত সামন্ত।" এ নিয়ে প্রাক্তন প্রধান রবিন মহম্মদ বলেন, "1998 সাল থেকে আমার সঙ্গে উনি তৃণমূল কংগ্রেস করতেন। এলাকায় ওনার নেতৃত্বে আমরা জয়লাভ করতাম। এবার পঞ্চায়েত নির্বাচনে তিনি পরাজিত হন ৷ তারপর থেকে নির্মল সামন্ত ওরফে অপু প্রতিনিয়ত মানসিক নির্যাতন করত। উনি মানসিক নির্যাতন সহ্য করতে না-পেরে আত্মহত্যা করেছেন। আমি চাই প্রশাসন যথাযথ ব্যবস্থা নিক।"
যদিও এই সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছে বিজেপি। বিজেপির কাঁথির সাংগঠনিক জেলার সহসভাপতি অসীম মিশ্র বলেন, "তৃণমূল, বিজেপি কার্যকর্তাদের মিথ্যে মামলায় ফাঁসানোর চক্রান্ত করছে। চন্দন সামন্ত দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন। আজ উনি সুসাইড করেছেন। তার পাশে একটি সুসাইড নোট পাওয়া গিয়েছে। তৃণমূলের দাবি এটা উনি লিখে গিয়েছেন। তখন কি তৃণমূলের নেতারা সেই সময় দাঁড়িয়ে দেখছিল? আইন আছে পুলিশ আছে, এর তদন্ত করবে।" এ বিষয়ে রামনগর থানা ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক বলেন, "এখনও পর্যন্ত লিখিত কোনও অভিযোগ হয়নি। অভিযোগ পেলে তা খতিয়ে দেখা হবে।"
আরও পড়ুন: ভোট পরবর্তী হিংসা থেকে বাঁচতে অসমে পাড়ি মালদার বিজেপি কর্মীদের