বর্ধমান, 3 অগস্ট: আল-কায়েদা জঙ্গি সন্দেহে গুজরাতে গ্রেফতার করা হয়েছে বাংলার তিন যুবককে। এদের মধ্যে দু'জনের বাড়ি পূর্ব বর্ধমান জেলায়। এদের একজন শুকুর আলি শেখের বাড়ি নাদনঘাট এলাকায় ৷ সইফের বাড়ি কালনা এলাকায়। শুকুর আলির বিরুদ্ধে জঙ্গি সংগঠনে যুবকদের নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ ওঠে ৷ যদিও সেই অভিযোগ মানতে রাজি নয় শুকুরের পরিবার ৷ প্রতিবেশীরাও শুকুরের বিরুদ্ধে অভিযোগ শুনে কার্যত তাজ্জব ৷
ধৃতদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, মগজ ধোলাই করে জঙ্গি সংগঠনের যোগ দেওয়ার জন্য এলাকার যুবকদের টানত নাদনঘাটের ঘোলা গ্রামের বাসিন্দা আবদুল শুকুর ৷ এই অভিযোগে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে খবর। শুকুরের বাড়ির লোকের অভিযোগ মিথ্যে মামলায় শুকুরকে ফাঁসানো হয়েছে। পাড়া-প্রতিবেশীরাও বলছেন, শুকুর বাড়ি থেকে বিশেষ বের হত না। পাড়ার কারও সঙ্গে তার মেলামেশা ছিল না বলেও জানাচ্ছেন এলাকাবাসীরা। এমনকী শুকুর আলি সারাক্ষণ ধর্মীয় আলোচনা নিয়েই থাকত বলেও জানাচ্ছে এলাকাবাসীরা।
অন্যদিকে, জানা গিয়েছে অন্য এক ধৃত সইফ গুজরাতে সোনার দোকানে কাজ করতে গিয়েছিল। এলাকায় সে ভদ্রসভ্য ছেলে হিসেবেই পরিচিত। বাড়ির লোকের চাপে সে নামাজ পড়া শুরু করে বলে দাবি পরিবারের। শুকুর আলি শেখের মা ডালিয়া শেখ বলেন, "গুজরাতের রাজকোটে সোনার দোকানে কাজ করত সে। সোনার কাজ করলে পাপ হবে এই কথা শোনার পর সে মুদিখানা দোকানে কাজ করতে শুরু করে। সেখানে কাজ করে আর নামাজ পড়ে। গতবছর কালী পুজোর সময় সে কাজে যায়। তাকে কেন পুলিশ ধরে নিয়ে গিয়েছে জানি না। তবে শুনছি সে অনেক ছেলেকে নামাজ পড়ানো শেখায়, সেই জন্য তাকে আতঙ্কবাদী বলে ধরেছে। এই গ্রাম থেকে অনেকেই কাজে গিয়েছে। বাড়িতে ফিরলে কোথাও যেত না। দিনে পাঁচবার নামাজ পড়ত ৷ আর মসজিদে যেত। খুব ভালো ছেলে। তাকে মিথ্যে কেসে ফাঁসানো হয়েছে। সে নামাজ রোজা ভক্তি নিয়েই থাকে।"
সইফের বাবা আবু শাহি বলেন, "আমার ছেলে গুজরাতের রাজকোটে সোনার দোকানে কাজ করার জন্য গিয়েছিল। গত মঙ্গলবার দুপুর নাগাদ জানতে পারি তাকে পুলিশ তুলে নিয়ে গিয়েছে। তবে আমি এটুকু বলতে পারি আমার ছেলে সাদাসিধে সৎ ছেলে। তাকে ফাঁসানো হচ্ছে। গত বছরে ঈদের সময়ে বাড়ি এসে তিন মাস ছিল। তার সঙ্গে যে জঙ্গি সংগঠনের জড়িয়ে কথা উঠছে সেটা বিশ্বাসযোগ্য নয়। সে এতটাই সহজ সরল যে এই ধরনের কাজ করতে পারে না। সে ধর্ম নিয়ে খুব একটা কিছু ছিল না। আমাদের চাপে পড়ে নামাজ কিছুদিন নিয়মিত পড়ছে। তার নামে মিথ্যে অপবাদ দেওয়া হচ্ছে।"
সইফের মা কোহিনূর বেগম জানান, ছেলে এই ধরনের কোন কাজ করতে পারে না বলেই তাঁর বিশ্বাস। কীভাবে, কী হল কিছুই তারা বুঝতে পারছেন না। তিনি বলেন, "তার আচরণে কোনও অস্বাভাবিক কিছু লক্ষ্য করিনি।"