ETV Bharat / state

300 বছরের পুরনো সিঁদুরে বাঁধা ইতিহাস-বর্তমান

author img

By

Published : Oct 25, 2020, 8:14 PM IST

Updated : Oct 26, 2020, 5:46 PM IST

বড়বাড়ি । বাগানবাড়ি । এই দুই বাড়ির ঐতিহ্য একসূত্রে বেঁধে অমলিন চকদিঘির জমিদারবাড়ির দুর্গাপুজো । নানা আচারে-উপাচারে আজও স্বতন্ত্র । 300 বছর পার করেও ।

chakdighi-zamindar
300 বছরের পুরনো সিঁদুরে বাঁধা ইতিহাস-বর্তমান

অভিজাত জমিদারবাড়ি তখন গমগম করত লোক-লস্করে, হাতি-ঘোড়ায়, দান-ধ্যানে । আসতেন কত গণ্যমান্য । বুন্দেলখণ্ডের মাটিতে প্রোথিত যাঁদের পরম্পরা, কয়েক পুরুষ ধরে বাংলার মাটিকে সমৃদ্ধ করেছে যাঁদের জনকল্যাণ - আজও তাঁদের উঠোনে পা ছুঁইয়ে গোটা শরীর শিহরিত হয়ে ওঠে । ষষ্ঠীর আবাহনে, সপ্তমীর আলাপে, অষ্টমীর সৌন্দর্যে, নবমীর ঐতিহ্যে একাকার হয়ে যায় ইতিহাস-বর্তমান । 300 বছরেরও বেশি ইতিহাস ছুঁয়ে এখনও সে ঐতিহ্য বুকে নিয়ে বর্তমান পূর্ব বর্ধমানের চকদিঘি জমিদারবাড়ির পুজো । সিংহরায় পরিবারের দুর্গাপুজো ।

তখন মোগল আমল । বুন্দেলখণ্ডে স্বমহিমায় প্রবল পরাক্রমী রাজপুত শাসক-যোদ্ধাদের আধিপত্য । বিখ্যাত যোদ্ধা আলহা ও উদলের সাহস এবং পরাক্রম লোকমুখে ছড়িয়ে পড়েছে । বুন্দেলখণ্ডের কালিঞ্জর ও মাহোবা এলাকার দুই দুর্গ থেকে কার্যক্রম পরিচালনা করতেন তাঁরা । লড়েছেন ৫২টির মতো যুদ্ধ। এবং প্রত্যেকটিতেই বিজয়ী হয়েছেন । জনশ্রুতি - সিংহরায় পরিবারের পূর্বপুরুষ হিসেবে এই আলহা ও উদলের নাম জড়িয়ে । মতান্তরে, রাজা মান সিংহের অধীনে দশহাজারি মনসবদার হিসেবে রাজ্যে পা পড়েছিল সিংহরায় পরিবারের প্রথম পুরুষের । পারিবারিক সূত্রে প্রাপ্ত বংশলতিকা অনুযায়ী, সম্রাট অওরঙ্গজেবের আমলে রাজনৈতিক কোনও কারণে রাজ্যে পা পড়ে সিংহরায় পরিবারের সদস্যদের । নীল ও রেশম কারখানা সূত্রে প্রভূত সম্পত্তির অধিকারী হন তাঁরা ।

রাজ্যে প্রথম এসেছিলেন বিখারি সিংহরায় (মতান্তরে হাদ সিংহ)। তাঁর পরবর্তী পুরুষ যথাক্রমে মনপার সিংহ রায়, শোভাব সিংহরায়, নল সিংহরায় । বিভিন্ন বইপত্র এবং লেখাজোখা থেকে অবশ্য নল সিংহরায়কে সিংহরায় পরিবারের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে ধরা হয় । নল সিংহরায়ের চার সন্তান । এবং তাঁদের মধ্যে হরি সিংহরায়ের কয়েক পুরুষ উত্তরাধিকারীরাই বর্তমান সিংহরায় পরিবারের পতাকা বয়ে নিয়ে চলেছেন । তবে, হরি সিংহরায়ের তৃতীয় ভাই ভৈরব সিংহরায়ের কথা এখানে না উল্লেখ করলেই নয় । কারণ তাঁর এক নাতি সারদাপ্রসাদ সিংহরায়ের (অম্বিকা সিংহরায়ের ছেলে) কর্মকুশলতার জেরে সিংহরায় পরিবার প্রভূত খ্যাতির অধিকারী হয় বাংলায় । সারদাপ্রসাদ ছিলেন নল সিংহরায়ের প্রপৌত্র ।

Chakdighi Zamindar Bari
সারদাপ্রসাদ সিংহরায়
Chakdighi Zamindar Bari
বাগানবাড়ির বৈঠকখানা

এখন চকদিঘি জমিদারবাড়ির দুটি অংশ । বড়বাড়ি ও বাগানবাড়ি । এছাড়াও জমিদারবাড়ির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে মণিরামবাটির পুজো । সারাবছর সিংহরায় পরিবারের সদস্যদের কেউই প্রায় থাকেন না চকদিঘিতে । তবে মানসিকভাবে প্রত্যেককেই জড়িয়ে থাকে চকদিঘির পৈতৃক-ভিটে । আর পুজোর সময় তো কথাই নেই । পরিবারের সদস্য়দের উপস্থিতিতে পুজো সম্পন্ন হয় জমিদারবাড়িতে । নানা আচার, উপাচারে । পুরনো ঐতিহ্য মেনে । সেসব আচারের কথায় পরে আসছি ।

Chakdighi Zamindar Bari
জমিদার বাড়ির দুর্গাদালান

সারদাপ্রসাদ সিংহরায়ের আমল থেকে সম্ভবত চকদিঘি জমিদারবাড়ির দুর্গাপুজোর খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে । পারিবারিক সূত্রে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, সারদাপ্রসাদ সিংহরায় নিঃসন্তান ছিলেন । তিনি দত্তক নেন তাঁরই ভাগ্না ললিতমোহন সিংহরায়কে । অর্থাৎ ললিতমোহন সিংহরায় সারদাপ্রসাদ সিংহরায়ের দত্তকপুত্র । এই দত্তক সংক্রান্ত ইশু নিয়ে পরিবারের মধ্যে মনোমালিন্যও শুরু হয়েছিল বলে শোনা যায় । সারদাপ্রসাদ ললিতমোহন সিংহরায়কে দত্তকপুত্র হিসেবে গ্রহণ করুন, তা চাননি সারদাপ্রসাদ-পত্নী রাজেশ্বরী দেবী। সারদাপ্রসাদের মৃত্যুর পর (১৮৬৮) এই সংক্রান্ত সমস্যা গড়িয়েছিল আদালত পর্যন্ত । মামলা করেছিলেন রাজেশ্বরী দেবী । এখানে বলে নেওয়া ভালো, সারদাপ্রসাদ সিংহ রায়ের সঙ্গে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর মহাশয়ের সখ্য ছিল সর্বজনবিদিত । বিদ্যাসাগর মহাশয় চকদিঘি জমিদারবাড়িতে আসতেন । থাকতেন । নানাবিধ পারস্পরিক পরামর্শ আদানপ্রদানও চলত ।

Chakdighi Zamindar Bari
ললিতমোহন সিংহরায় তখন ছোট, তাঁর সঙ্গে সারদাপ্রসাদ সিংহরায়

তো রাজেশ্বরী দেবী দত্তক ও সম্পত্তি সংক্রান্ত যে মামলা করেছিলেন, তাতে সাক্ষ্য হিসেবে পাশে পেয়েছিলেন বিদ্যাসাগর মহাশয়কে । তবে জিততে পারেননি । রায় গিয়েছিল ললিতমোহন সিংহরায়ের পক্ষেই । এরপরই বাগানবাড়ি ছেড়ে চলে যান রাজেশ্বরীদেবী । তখন নাবালক ললিতমোহন সিংহরায় । সেসময় ব্রিটিশ সরকার দায়িত্ব নেয় জমিদারবাড়ির । ললিতমোহন প্রাপ্তবয়স্ক হওয়া অবধি ।

মণিরামবাটির জমিদারবাড়ির সঙ্গে সম্পর্ক

এই ললিতমোহন সিংহরায়ের সঙ্গে বিবাহসূত্রে আবদ্ধ হন প্রিয়ম্বদা দেবী । যিনি মণিরামবাটির মেয়ে । উত্তরাধিকার সূত্রে কোনও পুরুষ ওই জমিদারবাড়িতে না থাকায় প্রিয়ম্বদা দেবী ও ললিতমোহন সিংহরায়ই মণিরামবাটির জমিদারির সর্বেসর্বা ছিলেন । প্রিয়ম্বদা দেবী-ললিতমোহন সিংহরায়ের উত্তরাধিকার বলতে ছিলেন তিন মেয়ে । যাঁদের মধ্য়ে বড় ও মেজো বিবাহসূত্রে আবদ্ধ হন বড়বাড়িতে । পুত্র সন্তান না থাকায় পরিবার থেকে দত্তক সন্তান নেওয়ার নজিরও রয়েছে জমিদারবাড়িতে । যেমন ললিতমোহন সিংহরায় দত্তক নিয়েছিলেন লীলামোহন সিংহরায়কে (প্রিয়ম্বদা দেবী ও ললিতমোহন সিংহরায়ের প্রপৌত্র) । পারিবারিক নানা নিয়মে বর্তমানে বড়বাড়ি ও বাগানবাড়ির উত্তরাধিকার পরিবারেরই দুটি পক্ষের হাতে ন্যস্ত । এবং মণিরামবাটির পুজো বাগানবাড়ির উত্তরাধিকারীরাই করে থাকেন ।

Chakdighi Zamindar Bari
প্রিয়ম্বদা দেবী
Chakdighi Zamindar Bari
সিংহরায় পরিবারের বংশলতিকা

কুলদেবতার সিঁদুর

তিনবাড়িতে তিনটি পুজো হয় এখনও । এর মধ্যে আদিপুজো বড়বাড়ির । পারিবারিক সূত্রে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, পূর্বপুরুষ হরি সিংহরায়ের আমল থেকে বড়বাড়ির পুজো শুরু হয় । আরেকটি পুজো পৃথকভাবে হয় বাগানবাড়িতে । আগেই উল্লেখ করা হয়েছে, নানা আচার-উপাচারে এখনও পূর্বপুরুষদের ঐতিহ্য মেনে চলেন পরিবারের সদস্যরা । তারমধ্যে একটি কুলদেবতার 300 বছরের পুরনো সিঁদুরের ব্যবহার । কথিত আছে, মোগল আমলে বাংলায় চলে আসার সময় কুলদেবতার সিঁদুর সঙ্গে করে নিয়ে এসেছিলেন সিংহরায় পরিবারের সদস্য । প্রতি বছর নবমীতে সেই সিঁদুরের পুজো হয় চকদিঘি জমিদারবাড়িতে । কুলদেবতা হিসেবে । পুজোর পরে প্রসাদ পাঠানো হয় বাগানবাড়িতে ।

Chakdighi Zamindar Bari
বড়বাড়ির দুর্গা প্রতিমা

এছাড়াও উল্লেখযোগ্য কয়েকটি আচার রয়েছে পুজোর । যেমন এখনও যৌথভাবে পায়েসভোগ রান্না হয় দুইবাড়িতে । যার চাল আসে বাগানবাড়ি থেকে । দুধ বড়বাড়ির । পায়েসভোগ রান্না হয় বড়বাড়িতেই ।

রথের দিন থেকেই শুরু হয় পুজোর তোড়জোড় । প্রতিপদ থেকে শুরু হয় পুজো । চলে দশদিন । নিয়ম অনুযায়ী, প্রাণপ্রতিষ্ঠার পর আর ছবি তোলা যায় না দুর্গাপ্রতিমার । আর আজও তিনমহলা জমিদারবাড়ির অন্দরমহল থেকে পুজোমণ্ডপ পর্যন্ত পরদা (চিক) টাঙানো হয় । সে পথে মণ্ডপে এসে অঞ্জলি দেন বাড়ির মহিলারা । আগে বলিপ্রথা চালু ছিল । মোষ বলি হত । এখন বন্ধ । বদলে সন্দেশ বলির রীতি চালু রয়েছে । অষ্টমীতে ধুনো পোড়ানোর রেওয়াজ রয়েছে বাড়িতে ।

chakdighi-zamindar
বড়বাড়িতে অষ্টমীতে ধুনো পোড়ানো হচ্ছে

এতো গেল পুজোর রীতিনীতির কথা । সিংহরায় পরিবারের কর্মকুশলতার কথা আগেই উল্লেখ করা হয়েছে । এবার সেদিকে আলোকপাত করা যাক । পরিবারের প্রত্যেকেই কিছু না কিছু কৃতিত্বের অধিকারী হলেও, সারদাপ্রসাদ সিংহ রায় ও স্যার বিপি সিংহরায়ের কথা উল্লেখ না করলেই নয় । সারদাপ্রসাদ সিংহরায় এলাকার শিক্ষাপ্রসার, সমাজসংস্কারে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নিয়েছিলেন । তখন সমাজ সংস্কারক হিসেবে বিদ্যাসাগর মহাশয় অতি পরিচিত বাংলায় । বর্ধমান জেলার শিক্ষাপ্রসারে তিনি পাশে পেয়েছিলেন গুণী সারদাপ্রসাদ সিংহরায়কে । সখ্য বেড়েছিল ক্রমশ । একাধিকবার চকদিঘি জমিদারবাড়িতে এসেও ছিলেন বিদ্যাসাগর মহাশয় । কথিত আছে, বিদ্যাসাগর মহাশয় এলে "জলমহল"-এ থাকতেন । একটি লাইব্রেরিও গড়ে তোলা হয়েছিল জমিদারবাড়িতে । 1857 সালে (মতান্তরে 1863) চকদিঘিতে অ্যাংলো সংস্কৃত স্কুল গড়ে তুলেছিলেন সারদাপ্রসাদ । পরে স্কুলটির নামকরণ হয় চকদিঘি সারদাপ্রসাদ ইনস্টিটিউশন । দাতব্য চিকিৎসালয়, বালিকা বিদ্যালয় স্থাপন করেছিলেন সারদাপ্রসাদ সিংহ রায় । মেমারি থেকে চকদিঘি রাস্তাও তাঁরই অবদান । বহুবিবাহ বন্ধ ও বিধবা বিবাহ প্রচলনে তাঁর অবদান উল্লেখযোগ্য । ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরকে সক্রিয় সহযোগিতা করেছিলেন তিনি । বিদ্যাসাগর-সারদাপ্রসাদ সখ্যের নানা নির্দশন এখনও রয়ে গিয়েছে চকদিঘি জমিদারবাড়িতে । রয়েছে জমিদারবাড়িতে আঁকা বিদ্যাসাগর মহাশয়ের একটি তৈলচিত্রও । সময়ে সময়ে এ বাড়িতে পা পড়েছে ইংরেজ সরকারের বিখ্যাত ব্যক্তিত্বদেরও । এসেছেন লেফটেনন্ট গভর্নর স্যার অ্যান্ড্রু ফ্রেজার । এসেছেন জন অ্যান্ডারসন । স্যার বি পি সিংহরায়ের সঙ্গে সখ্য ছিল তাঁর ।

Chakdighi Zamindar Bari
লেফটেনন্ট গভর্নর স্যার অ্যান্ড্রু ফ্রেজার এসেছিলেন চকদিঘি জমিদারবাড়িতে
Chakdighi Zamindar Bari
বাগানবাড়িতে জন অ্যান্ডারসন, ইতিহাসের সাক্ষী এই ছবি
Chakdighi Zamindar Bari
ইতিহাসের পাতায় চকদিঘি জমিদারির উল্লেখ

পরোপকারে কম কিছু ছিলেন না রাজা মনিলাল সিংহরায়। 1913 সালে যেভাবে তিনি বন্যা থেকে মানুষকে বাঁচাতে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন, পরে তা ভূয়সী প্রশংসা কুড়িয়েছিল । 1913 সালের 9 অগাস্ট রাতে দামোদর ফুঁসে উঠে বাঁধ ভেঙে গোটা চকদিঘি এলাকাকে ডুবিয়ে দিয়েছিল । সারারাত জেগে প্রায় 25টি গ্রামের মানুষকে সেই ভয়ংকর বিপদের হাত থেকে বাঁচিয়েছিলেন রাজা মনিলাল । Bengalee পত্রিকা 7 নভেম্বর 1913 সালে এই বিষয়টি নিয়ে "An Appreciation" শিরোনামে লিখেছিল -

"The flood has stimulated the beneficence of every section of our community, notably of the Zamindars who have on this occasion at any rate played their usual role of the protector of the people. We cannot sufficiently praise the activities of Rai Moniloll Singh Bahadur of Chakdighi, whose whole hearted co-operation with the volunteers is worthy of imitation by other members of our landed aristocracy. We hope Rai Bahadur Moniloll will not abate his zeal till his stricken countrymen are again set up on their legs."

রাজা রজনীলাল সিংহরায়ের ছেলে বিজয়প্রসাদ সিংহরায়ও ছিলেন পরিবারের অন্যতম স্বনামধন্য ব্যক্তি । স্যার উপাধি পান তিনি । পরিচিত ছিলেন স্যার বি পি সিংহরায় নামে । পারিবারিক সূত্রে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, স্যার বি পি সিংহরায়ও ছিলেন অগ্রণী সমাজ সংস্কারক । স্বাধীনতা পূর্বে 1921 সালে তিনি বেঙ্গল লেজিসলেটিভ কাউন্সিলের সদস্য নির্বাচিত হন । নির্বাচিত হয়েছিলেন মন্ত্রী হিসেবেও । কলকাতার শেরিফ হিসেবেও দায়িত্ব সামলেছেন । 1943 সাল থেকে 1947 সাল পর্যন্ত তিনি বেঙ্গল লেজিসলেটিভ অ্যাসেম্বলির চেয়ারম্যান ছিলেন । ধর্মীয় সংরক্ষণ ইশুতে কলকাতায় বৈঠক করেছেন গান্ধিজির সঙ্গে । 1958 সাল থেকে 1959 সাল পর্যন্ত FICCI-র চেয়ারম্যান হয়েছিলেন স্যার বি পি সিংহরায় । দু'বার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন তিনি ।

Chakdighi Zamindar Bari
জওহরলাল নেহরু ও ফিরোজ গান্ধির সঙ্গে স্যার বি পি সিংহরায়
Chakdighi Zamindar Bari
বর্ধমান তারকেশ্বর রাস্তা, চকদিঘি জমিদার বাড়ির সামনে

এবার বরং ফিরে আসা । শত-দুই বছরের পার থেকে দু'হাজার কুড়ির শারদ-কালে । পরতে পরতে । হেঁটে চলা নবমীর গোধূলি থেকে দশমীর প্রাতে ।

তথ্য ও ছবি সহায়তা - শ্রী প্রসেনজিৎ সিংহরায় (চকদিঘি জমিদারবাড়ির বর্তমান সদস্য)

অভিজাত জমিদারবাড়ি তখন গমগম করত লোক-লস্করে, হাতি-ঘোড়ায়, দান-ধ্যানে । আসতেন কত গণ্যমান্য । বুন্দেলখণ্ডের মাটিতে প্রোথিত যাঁদের পরম্পরা, কয়েক পুরুষ ধরে বাংলার মাটিকে সমৃদ্ধ করেছে যাঁদের জনকল্যাণ - আজও তাঁদের উঠোনে পা ছুঁইয়ে গোটা শরীর শিহরিত হয়ে ওঠে । ষষ্ঠীর আবাহনে, সপ্তমীর আলাপে, অষ্টমীর সৌন্দর্যে, নবমীর ঐতিহ্যে একাকার হয়ে যায় ইতিহাস-বর্তমান । 300 বছরেরও বেশি ইতিহাস ছুঁয়ে এখনও সে ঐতিহ্য বুকে নিয়ে বর্তমান পূর্ব বর্ধমানের চকদিঘি জমিদারবাড়ির পুজো । সিংহরায় পরিবারের দুর্গাপুজো ।

তখন মোগল আমল । বুন্দেলখণ্ডে স্বমহিমায় প্রবল পরাক্রমী রাজপুত শাসক-যোদ্ধাদের আধিপত্য । বিখ্যাত যোদ্ধা আলহা ও উদলের সাহস এবং পরাক্রম লোকমুখে ছড়িয়ে পড়েছে । বুন্দেলখণ্ডের কালিঞ্জর ও মাহোবা এলাকার দুই দুর্গ থেকে কার্যক্রম পরিচালনা করতেন তাঁরা । লড়েছেন ৫২টির মতো যুদ্ধ। এবং প্রত্যেকটিতেই বিজয়ী হয়েছেন । জনশ্রুতি - সিংহরায় পরিবারের পূর্বপুরুষ হিসেবে এই আলহা ও উদলের নাম জড়িয়ে । মতান্তরে, রাজা মান সিংহের অধীনে দশহাজারি মনসবদার হিসেবে রাজ্যে পা পড়েছিল সিংহরায় পরিবারের প্রথম পুরুষের । পারিবারিক সূত্রে প্রাপ্ত বংশলতিকা অনুযায়ী, সম্রাট অওরঙ্গজেবের আমলে রাজনৈতিক কোনও কারণে রাজ্যে পা পড়ে সিংহরায় পরিবারের সদস্যদের । নীল ও রেশম কারখানা সূত্রে প্রভূত সম্পত্তির অধিকারী হন তাঁরা ।

রাজ্যে প্রথম এসেছিলেন বিখারি সিংহরায় (মতান্তরে হাদ সিংহ)। তাঁর পরবর্তী পুরুষ যথাক্রমে মনপার সিংহ রায়, শোভাব সিংহরায়, নল সিংহরায় । বিভিন্ন বইপত্র এবং লেখাজোখা থেকে অবশ্য নল সিংহরায়কে সিংহরায় পরিবারের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে ধরা হয় । নল সিংহরায়ের চার সন্তান । এবং তাঁদের মধ্যে হরি সিংহরায়ের কয়েক পুরুষ উত্তরাধিকারীরাই বর্তমান সিংহরায় পরিবারের পতাকা বয়ে নিয়ে চলেছেন । তবে, হরি সিংহরায়ের তৃতীয় ভাই ভৈরব সিংহরায়ের কথা এখানে না উল্লেখ করলেই নয় । কারণ তাঁর এক নাতি সারদাপ্রসাদ সিংহরায়ের (অম্বিকা সিংহরায়ের ছেলে) কর্মকুশলতার জেরে সিংহরায় পরিবার প্রভূত খ্যাতির অধিকারী হয় বাংলায় । সারদাপ্রসাদ ছিলেন নল সিংহরায়ের প্রপৌত্র ।

Chakdighi Zamindar Bari
সারদাপ্রসাদ সিংহরায়
Chakdighi Zamindar Bari
বাগানবাড়ির বৈঠকখানা

এখন চকদিঘি জমিদারবাড়ির দুটি অংশ । বড়বাড়ি ও বাগানবাড়ি । এছাড়াও জমিদারবাড়ির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে মণিরামবাটির পুজো । সারাবছর সিংহরায় পরিবারের সদস্যদের কেউই প্রায় থাকেন না চকদিঘিতে । তবে মানসিকভাবে প্রত্যেককেই জড়িয়ে থাকে চকদিঘির পৈতৃক-ভিটে । আর পুজোর সময় তো কথাই নেই । পরিবারের সদস্য়দের উপস্থিতিতে পুজো সম্পন্ন হয় জমিদারবাড়িতে । নানা আচার, উপাচারে । পুরনো ঐতিহ্য মেনে । সেসব আচারের কথায় পরে আসছি ।

Chakdighi Zamindar Bari
জমিদার বাড়ির দুর্গাদালান

সারদাপ্রসাদ সিংহরায়ের আমল থেকে সম্ভবত চকদিঘি জমিদারবাড়ির দুর্গাপুজোর খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে । পারিবারিক সূত্রে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, সারদাপ্রসাদ সিংহরায় নিঃসন্তান ছিলেন । তিনি দত্তক নেন তাঁরই ভাগ্না ললিতমোহন সিংহরায়কে । অর্থাৎ ললিতমোহন সিংহরায় সারদাপ্রসাদ সিংহরায়ের দত্তকপুত্র । এই দত্তক সংক্রান্ত ইশু নিয়ে পরিবারের মধ্যে মনোমালিন্যও শুরু হয়েছিল বলে শোনা যায় । সারদাপ্রসাদ ললিতমোহন সিংহরায়কে দত্তকপুত্র হিসেবে গ্রহণ করুন, তা চাননি সারদাপ্রসাদ-পত্নী রাজেশ্বরী দেবী। সারদাপ্রসাদের মৃত্যুর পর (১৮৬৮) এই সংক্রান্ত সমস্যা গড়িয়েছিল আদালত পর্যন্ত । মামলা করেছিলেন রাজেশ্বরী দেবী । এখানে বলে নেওয়া ভালো, সারদাপ্রসাদ সিংহ রায়ের সঙ্গে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর মহাশয়ের সখ্য ছিল সর্বজনবিদিত । বিদ্যাসাগর মহাশয় চকদিঘি জমিদারবাড়িতে আসতেন । থাকতেন । নানাবিধ পারস্পরিক পরামর্শ আদানপ্রদানও চলত ।

Chakdighi Zamindar Bari
ললিতমোহন সিংহরায় তখন ছোট, তাঁর সঙ্গে সারদাপ্রসাদ সিংহরায়

তো রাজেশ্বরী দেবী দত্তক ও সম্পত্তি সংক্রান্ত যে মামলা করেছিলেন, তাতে সাক্ষ্য হিসেবে পাশে পেয়েছিলেন বিদ্যাসাগর মহাশয়কে । তবে জিততে পারেননি । রায় গিয়েছিল ললিতমোহন সিংহরায়ের পক্ষেই । এরপরই বাগানবাড়ি ছেড়ে চলে যান রাজেশ্বরীদেবী । তখন নাবালক ললিতমোহন সিংহরায় । সেসময় ব্রিটিশ সরকার দায়িত্ব নেয় জমিদারবাড়ির । ললিতমোহন প্রাপ্তবয়স্ক হওয়া অবধি ।

মণিরামবাটির জমিদারবাড়ির সঙ্গে সম্পর্ক

এই ললিতমোহন সিংহরায়ের সঙ্গে বিবাহসূত্রে আবদ্ধ হন প্রিয়ম্বদা দেবী । যিনি মণিরামবাটির মেয়ে । উত্তরাধিকার সূত্রে কোনও পুরুষ ওই জমিদারবাড়িতে না থাকায় প্রিয়ম্বদা দেবী ও ললিতমোহন সিংহরায়ই মণিরামবাটির জমিদারির সর্বেসর্বা ছিলেন । প্রিয়ম্বদা দেবী-ললিতমোহন সিংহরায়ের উত্তরাধিকার বলতে ছিলেন তিন মেয়ে । যাঁদের মধ্য়ে বড় ও মেজো বিবাহসূত্রে আবদ্ধ হন বড়বাড়িতে । পুত্র সন্তান না থাকায় পরিবার থেকে দত্তক সন্তান নেওয়ার নজিরও রয়েছে জমিদারবাড়িতে । যেমন ললিতমোহন সিংহরায় দত্তক নিয়েছিলেন লীলামোহন সিংহরায়কে (প্রিয়ম্বদা দেবী ও ললিতমোহন সিংহরায়ের প্রপৌত্র) । পারিবারিক নানা নিয়মে বর্তমানে বড়বাড়ি ও বাগানবাড়ির উত্তরাধিকার পরিবারেরই দুটি পক্ষের হাতে ন্যস্ত । এবং মণিরামবাটির পুজো বাগানবাড়ির উত্তরাধিকারীরাই করে থাকেন ।

Chakdighi Zamindar Bari
প্রিয়ম্বদা দেবী
Chakdighi Zamindar Bari
সিংহরায় পরিবারের বংশলতিকা

কুলদেবতার সিঁদুর

তিনবাড়িতে তিনটি পুজো হয় এখনও । এর মধ্যে আদিপুজো বড়বাড়ির । পারিবারিক সূত্রে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, পূর্বপুরুষ হরি সিংহরায়ের আমল থেকে বড়বাড়ির পুজো শুরু হয় । আরেকটি পুজো পৃথকভাবে হয় বাগানবাড়িতে । আগেই উল্লেখ করা হয়েছে, নানা আচার-উপাচারে এখনও পূর্বপুরুষদের ঐতিহ্য মেনে চলেন পরিবারের সদস্যরা । তারমধ্যে একটি কুলদেবতার 300 বছরের পুরনো সিঁদুরের ব্যবহার । কথিত আছে, মোগল আমলে বাংলায় চলে আসার সময় কুলদেবতার সিঁদুর সঙ্গে করে নিয়ে এসেছিলেন সিংহরায় পরিবারের সদস্য । প্রতি বছর নবমীতে সেই সিঁদুরের পুজো হয় চকদিঘি জমিদারবাড়িতে । কুলদেবতা হিসেবে । পুজোর পরে প্রসাদ পাঠানো হয় বাগানবাড়িতে ।

Chakdighi Zamindar Bari
বড়বাড়ির দুর্গা প্রতিমা

এছাড়াও উল্লেখযোগ্য কয়েকটি আচার রয়েছে পুজোর । যেমন এখনও যৌথভাবে পায়েসভোগ রান্না হয় দুইবাড়িতে । যার চাল আসে বাগানবাড়ি থেকে । দুধ বড়বাড়ির । পায়েসভোগ রান্না হয় বড়বাড়িতেই ।

রথের দিন থেকেই শুরু হয় পুজোর তোড়জোড় । প্রতিপদ থেকে শুরু হয় পুজো । চলে দশদিন । নিয়ম অনুযায়ী, প্রাণপ্রতিষ্ঠার পর আর ছবি তোলা যায় না দুর্গাপ্রতিমার । আর আজও তিনমহলা জমিদারবাড়ির অন্দরমহল থেকে পুজোমণ্ডপ পর্যন্ত পরদা (চিক) টাঙানো হয় । সে পথে মণ্ডপে এসে অঞ্জলি দেন বাড়ির মহিলারা । আগে বলিপ্রথা চালু ছিল । মোষ বলি হত । এখন বন্ধ । বদলে সন্দেশ বলির রীতি চালু রয়েছে । অষ্টমীতে ধুনো পোড়ানোর রেওয়াজ রয়েছে বাড়িতে ।

chakdighi-zamindar
বড়বাড়িতে অষ্টমীতে ধুনো পোড়ানো হচ্ছে

এতো গেল পুজোর রীতিনীতির কথা । সিংহরায় পরিবারের কর্মকুশলতার কথা আগেই উল্লেখ করা হয়েছে । এবার সেদিকে আলোকপাত করা যাক । পরিবারের প্রত্যেকেই কিছু না কিছু কৃতিত্বের অধিকারী হলেও, সারদাপ্রসাদ সিংহ রায় ও স্যার বিপি সিংহরায়ের কথা উল্লেখ না করলেই নয় । সারদাপ্রসাদ সিংহরায় এলাকার শিক্ষাপ্রসার, সমাজসংস্কারে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নিয়েছিলেন । তখন সমাজ সংস্কারক হিসেবে বিদ্যাসাগর মহাশয় অতি পরিচিত বাংলায় । বর্ধমান জেলার শিক্ষাপ্রসারে তিনি পাশে পেয়েছিলেন গুণী সারদাপ্রসাদ সিংহরায়কে । সখ্য বেড়েছিল ক্রমশ । একাধিকবার চকদিঘি জমিদারবাড়িতে এসেও ছিলেন বিদ্যাসাগর মহাশয় । কথিত আছে, বিদ্যাসাগর মহাশয় এলে "জলমহল"-এ থাকতেন । একটি লাইব্রেরিও গড়ে তোলা হয়েছিল জমিদারবাড়িতে । 1857 সালে (মতান্তরে 1863) চকদিঘিতে অ্যাংলো সংস্কৃত স্কুল গড়ে তুলেছিলেন সারদাপ্রসাদ । পরে স্কুলটির নামকরণ হয় চকদিঘি সারদাপ্রসাদ ইনস্টিটিউশন । দাতব্য চিকিৎসালয়, বালিকা বিদ্যালয় স্থাপন করেছিলেন সারদাপ্রসাদ সিংহ রায় । মেমারি থেকে চকদিঘি রাস্তাও তাঁরই অবদান । বহুবিবাহ বন্ধ ও বিধবা বিবাহ প্রচলনে তাঁর অবদান উল্লেখযোগ্য । ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরকে সক্রিয় সহযোগিতা করেছিলেন তিনি । বিদ্যাসাগর-সারদাপ্রসাদ সখ্যের নানা নির্দশন এখনও রয়ে গিয়েছে চকদিঘি জমিদারবাড়িতে । রয়েছে জমিদারবাড়িতে আঁকা বিদ্যাসাগর মহাশয়ের একটি তৈলচিত্রও । সময়ে সময়ে এ বাড়িতে পা পড়েছে ইংরেজ সরকারের বিখ্যাত ব্যক্তিত্বদেরও । এসেছেন লেফটেনন্ট গভর্নর স্যার অ্যান্ড্রু ফ্রেজার । এসেছেন জন অ্যান্ডারসন । স্যার বি পি সিংহরায়ের সঙ্গে সখ্য ছিল তাঁর ।

Chakdighi Zamindar Bari
লেফটেনন্ট গভর্নর স্যার অ্যান্ড্রু ফ্রেজার এসেছিলেন চকদিঘি জমিদারবাড়িতে
Chakdighi Zamindar Bari
বাগানবাড়িতে জন অ্যান্ডারসন, ইতিহাসের সাক্ষী এই ছবি
Chakdighi Zamindar Bari
ইতিহাসের পাতায় চকদিঘি জমিদারির উল্লেখ

পরোপকারে কম কিছু ছিলেন না রাজা মনিলাল সিংহরায়। 1913 সালে যেভাবে তিনি বন্যা থেকে মানুষকে বাঁচাতে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন, পরে তা ভূয়সী প্রশংসা কুড়িয়েছিল । 1913 সালের 9 অগাস্ট রাতে দামোদর ফুঁসে উঠে বাঁধ ভেঙে গোটা চকদিঘি এলাকাকে ডুবিয়ে দিয়েছিল । সারারাত জেগে প্রায় 25টি গ্রামের মানুষকে সেই ভয়ংকর বিপদের হাত থেকে বাঁচিয়েছিলেন রাজা মনিলাল । Bengalee পত্রিকা 7 নভেম্বর 1913 সালে এই বিষয়টি নিয়ে "An Appreciation" শিরোনামে লিখেছিল -

"The flood has stimulated the beneficence of every section of our community, notably of the Zamindars who have on this occasion at any rate played their usual role of the protector of the people. We cannot sufficiently praise the activities of Rai Moniloll Singh Bahadur of Chakdighi, whose whole hearted co-operation with the volunteers is worthy of imitation by other members of our landed aristocracy. We hope Rai Bahadur Moniloll will not abate his zeal till his stricken countrymen are again set up on their legs."

রাজা রজনীলাল সিংহরায়ের ছেলে বিজয়প্রসাদ সিংহরায়ও ছিলেন পরিবারের অন্যতম স্বনামধন্য ব্যক্তি । স্যার উপাধি পান তিনি । পরিচিত ছিলেন স্যার বি পি সিংহরায় নামে । পারিবারিক সূত্রে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, স্যার বি পি সিংহরায়ও ছিলেন অগ্রণী সমাজ সংস্কারক । স্বাধীনতা পূর্বে 1921 সালে তিনি বেঙ্গল লেজিসলেটিভ কাউন্সিলের সদস্য নির্বাচিত হন । নির্বাচিত হয়েছিলেন মন্ত্রী হিসেবেও । কলকাতার শেরিফ হিসেবেও দায়িত্ব সামলেছেন । 1943 সাল থেকে 1947 সাল পর্যন্ত তিনি বেঙ্গল লেজিসলেটিভ অ্যাসেম্বলির চেয়ারম্যান ছিলেন । ধর্মীয় সংরক্ষণ ইশুতে কলকাতায় বৈঠক করেছেন গান্ধিজির সঙ্গে । 1958 সাল থেকে 1959 সাল পর্যন্ত FICCI-র চেয়ারম্যান হয়েছিলেন স্যার বি পি সিংহরায় । দু'বার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন তিনি ।

Chakdighi Zamindar Bari
জওহরলাল নেহরু ও ফিরোজ গান্ধির সঙ্গে স্যার বি পি সিংহরায়
Chakdighi Zamindar Bari
বর্ধমান তারকেশ্বর রাস্তা, চকদিঘি জমিদার বাড়ির সামনে

এবার বরং ফিরে আসা । শত-দুই বছরের পার থেকে দু'হাজার কুড়ির শারদ-কালে । পরতে পরতে । হেঁটে চলা নবমীর গোধূলি থেকে দশমীর প্রাতে ।

তথ্য ও ছবি সহায়তা - শ্রী প্রসেনজিৎ সিংহরায় (চকদিঘি জমিদারবাড়ির বর্তমান সদস্য)

Last Updated : Oct 26, 2020, 5:46 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.