বর্ধমান, 19 অক্টোবর: পুজোয় বেনারস যাওয়ার প্ল্যান করেও যেতে পারেননি? গঙ্গার বুকে সন্ধ্যারতি দেখতে না-পেয়ে মনমরা? চিন্তা নেই কিছুটা হলেও সেই স্বাদ পেতে পারেন বর্ধমান শহরে বসেই। সুদূর বেনারস থেকে আসা পুরোহিতরা এসে গঙ্গারতি করছেন এখানে। চলছে মন্ত্রোচ্চারণ থেকে পুজোপাঠ। রাতের অন্ধকারে এই মনোমুগ্ধকর আধ্যাত্মিক পরিবেশ ফুটিয়ে তুলেছে বর্ধমানের ইছলাবাদের কিরণ সংঘ। 67তম বর্ষে ইছলাবাদ কিরণ সংঘের থিম বেনারস ঘাট।
এমনিতে বেনারসের সন্ধ্যারতি নাকি হরিদ্বারের সন্ধ্যারতি এই দুইয়ের মধ্যে কোনটা সেরা, তা নিয়ে তর্কবিতর্ক চলেই থাকে। তবে বেনারসের সন্ধ্যারতির টানে হাজার হাজার মানুষ বেনারসে ছোটেন বছর-বছর। গঙ্গার বুকে অন্ধকার নামলেই শুরু হয় সন্ধ্যারতি। তবে বেনারসে যাওয়ার পিছনে অন্যতম কারণ থাকে বেনারস ঘাটে সন্ধ্যারতি দেখা। সেখানকার 84টি ঘাটের মধ্যে এক একটা ঘাট, এক একটা দেশের এক একটা ইতিহাসকে তুলে ধরে ৷ সেখানকার বিখ্যাত ঘাটগুলির মধ্যে আছে মণিকর্ণিকা ঘাট, হরিশচন্দ্র ঘাট, দশাশ্বমেধ ঘাট, পঞ্চগঙ্গা ঘাট, কেদার ঘাট, রানামহল ঘাট, মুন্সিঘাট, দ্বারভাঙাঘাট, চেতসিং ঘাট ইত্যাদি।
প্রতিটি ঘাটে সাতজন করে আরতি করেন। দ্বারভাঙা ঘাট ও চেতসিং ঘাটে আছে বড় মহল। সেই ঘাটগুলির মধ্যে বর্ধমানের ইছলাবাদের কিরণ সংঘ তুলে ধরেছে চেতসিং ঘাটকে। সন্ধ্যে নামলেই নামলেই গঙ্গার বুকে এক অন্য পরিবেশ। বেনারস থেকে আসা পাঁচ জন পুরোহিত পুজোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এরপরেই শুরু মন্ত্রোচ্চারণ। গঙ্গারতি থেকে মন্ত্রোচ্চারণ লাইভ এই আরতি যেন দর্শকদের নিমেষেই বেনারসের গঙ্গার ঘাটে নিয়ে যায়। লাইভ আরতির পাশাপাশি দেখা যাচ্ছে লাইট অ্যান্ড সাউন্ডের খেলা। যা দর্শকদের মন জয় করছে।
দর্শনার্থী শ্রাবণী মুখোপাধ্যায় বলেন, "খুব ভালো লেগেছে। এখানকার প্রতিমা, প্যান্ডেল বিশেষ করে গঙ্গার বুকে সন্ধ্যারতি মন কেড়ে নিচ্ছে। বেনারস কোনওদিন যাইনি তবে যাওয়ার ইচ্ছে আছে। তবে এখানে যে আরতি দেখলাম মন ছুঁয়ে গিয়েছে।" আরও এক দর্শনার্থী কমলাকান্ত চট্টোপাধ্যায় বলেন, "এটা একটু অন্য ধরনের থিম। বিশেষ করে সন্ধ্যারতি ও আলো সাউন্ডের খেলা খুব ভালো লাগল। বিশেষ করে গঙ্গার বুকে যেভাবে সুন্দর আরতি পরিবেশটাই বদলে দিয়েছে। আমরা তো প্রায় দেড় ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে। তারপর মণ্ডপে ঢুকলাম। তবে দেখে মন ভরে গিয়েছে।"
আরও পড়ুন: ছোটবাজার সর্বজনীন দুর্গোৎসবে এ বছরের থিম 'অন্তর শক্তি', দেখুন পুজো পরিক্রমা