বীরসিংহ, 6 জুলাই: সোমবার বিকেলে ভেঙে পড়ে বীরসিংহ গ্রামে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের মায়ের নামে তৈরি ভগবতী উচ্চবিদ্যালয়ের ছাত্রাবাস (Vidyasagar Memorial Hostel Collapsed in Birsingha Village of Paschim Medinipur) ৷ যাকে 2019 সালে হেরিটেজ হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছিল রাজ্য সরকারের তরফে ৷ এ দিন ভেঙে পড়া মাটির দোতলা সেই ছাত্রাবাস পরিদর্শনে আসেন পূর্ত দফতরের আধিকারিক এবং ইঞ্জিনিয়ররা ৷ জানালেন, মাটির এই বাড়ির নিচে ইঁদুর গর্ত করেছে ৷ সেই কারণেই ছাত্রাবাসটি ভেঙে পড়েছে বলে দাবি পূর্ত দফতরের ইঞ্জিনিয়রদের ৷ কিন্তু, সেই যুক্তি মানতে নারাজ গ্রামবাসীরা ৷ তাঁদের অভিযোগ, হেরিটেজ ঘোষিত হওয়া ওই 150 বছরের পুরনো মাটির বাড়িটি সংস্কার করতে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে ৷ তবে, এ নিয়ে বিশেষ মন্তব্য করতে চাননি ভগবতী উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ৷
বীরসিংহ গ্রামে বিদ্যাসাগরের স্মৃতি বিজড়িত ভগবতী উচ্চবিদ্যালয়ের ভেঙে পড়া মাটির ছাত্রাবাসটি পরিদর্শনে যান পূর্ত দফতরের আধিকারিকরা ৷ সেখানে পৌঁছে তাঁরা ভেঙে পড়া অংশ খতিয়ে দেখেন ৷ এর পর ইঞ্জিনিয়রদের তরফে জানানো হয়, দোতলা ওই মাটির বাড়ির নিচে ইঁদুর গর্ত করেছে ৷ তার জেরেই বাড়িটি ভেঙে পড়েছে ৷ কিন্তু, ইঞ্জিনিয়রদের সেই দাবি মানতে নারাজ গ্রামবাসীরা পাল্টা অভিযোগ করেছেন, ওই বাড়িটি সংস্কারের কাজে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে ৷ যা নিয়ে গ্রামবাসী এবং পূর্ত দফতরের আধিকারিকদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয় বলেও অভিযোগ ৷
প্রসঙ্গত, 150 বছরের এই বাড়িটিতে প্রথমে স্কুলের ক্লাস হত ৷ পরবর্তী সময়ে ক্লাস সরিয়ে নিয়ে গিয়ে সেখানে অফিসের কাজ শুরু হয় এবং সবশেষে সেটিকে ছাত্রাবাস করে দেওয়া হয় ৷ ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের মায়ের নামে তৈরি এই বাড়িটিকে 2019 সালে হেরিটেজ ঘোষণা করে রাজ্য সরকার ৷ যার পর গত একবছর ধরে বাড়িটি সংস্কারের কাজ চলছিল ৷ সেই কাজ চলাকালীন সোমবার ভেঙে পড়ে বাড়িটি ৷ গ্রামবাসীদের প্রশ্ন, সংস্কার চলাকালীন ইঁদুরে গর্ত করে দিলে তা শ্রমিকদের নজরে কেন এল না ? তাঁদের অভিযোগ, বাড়িটি সংস্কারে নিম্নমানের সামগ্রী ব্য়বহার করা হয়েছে ৷ এ নিয়ে পূর্ত দফতরের শ্রমিক ইউনিয়নে অভিযোগও করা হয়েছিল বলে জানিয়েছেন গ্রামবাসীরা ৷
আরও পড়ুন: Vidyasagar Birthday: 3 কৃতীকে সংবর্ধনা বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের
তবে, পূর্ত দফতরের ইঞ্জিনিয়র অঞ্জন মিত্র জানান, ‘‘সামগ্রীতে কোনও সমস্যা ছিল না ৷ ইঁদুরে গর্ত করে দিয়েছে বলে এই ঘটনা ঘটেছে ৷’’ তবে, এ নিয়ে ভগবতী উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক প্রদীপ কুমার পাঠক জানান, কাজ নিয়ে তিনি কিছু জানেন না ৷ ঠিকাদার সংস্থা তাঁদের কিছু জানায়নি ৷ কিন্তু, নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ গ্রামবাসীদের ৷ এ নিয়ে তিনি কিছু জানেন না বলে জানান প্রধান শিক্ষক ৷ তবে, এ সবের মাঝে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের কোনও অপমান যাতে না হয়, সেই আবেদন করেছেন প্রদীপ কুমার পাঠক ৷