ETV Bharat / state

লকডাউনের 18 দিন; সাহায্যের আর্জি ট্রাক চালক, খালাসিদের

author img

By

Published : Apr 11, 2020, 2:33 PM IST

আজ লকডাউনের 18 নম্বর দিন । গড়বেতা, চন্দ্রকোনায় আটকে বহু ট্রাক চালক ও খালাসি । রাস্তায় সব দোকান বন্ধ থাকায় খাবার জুটছে না তাঁদের । অর্থের অভাবে একই অবস্থা এরাজ্যের চালক ও খালাসিদেরও ।

Midnapur
Midnapur

গড়বেতা,11 এপ্রিল : কোরোনার জেরে 21 দিন ধরে লকডাউন দেশে । অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ছাড়া বন্ধ সমস্ত পরিবহন পরিষেবা । নানা পার্কিংয়ে কোটি কোটি টাকার মাল নিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে ট্রাকগুলি । সমস্যায় পরিবহন ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত কয়েক হাজার চালক, খালাসি,গাড়ির মালিক, ট্রান্সপোর্টার ,গ্যারেজের মেকানিক । এই পরিস্থিতিতে দু'বেলা দু'মুঠো খাবার জোগাতে পারছেন না তাঁরা । পরিবারের মুখেও অন্ন তুলে দিতে পারছেন না । শুধু এরাজ্যেরই নয়, লকডাউনে আটকে পড়া বাকি রাজ্যের চালক, খালাসিদেরও একই অবস্থা । রাস্তায় খাবার দোকান বন্ধ, রেস্তরাঁ বন্ধ, রান্না করবেন কোথায়, কী দিয়ে কেউ জানেন না । এই পরিস্থিতিতে প্রশাসনের কাছে সাহায্যের আর্জি জানাচ্ছেন সকলে ।

আজ লকডাউনের 18 নম্বর দিন । লকডাউনের জেরে সবথেকে বেশি সমস্যায় দিন আনা দিন খাওয়া মানুষজন । আয় নেই । 18 দিন বিনা রোজগারে সঞ্চয়ও প্রায় শেষ । ফলে একবেলা খেয়ে বা দু'দিনে একবার খেয়ে দিন কাটছে তাঁদের । এই দিন আনা দিন খাওয়া মানুষগুলোর মতোই অবস্থা রাজ্যের পরিবহন পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত মানুষদের । তাঁরাও আয়ের অভাবে, কেউ বাড়ি ফিরতে না পেরে কোনওমতে অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছেন । পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার সবচেয়ে বেশি আমদানি- রপ্তানি হয় চন্দ্রকোনা ও গড়বেতা এলাকায় । বিশেষ করে জেলার আলু, ধান সহ একাধিক কৃষিজ ফসলের আমদানি হয় এখান থেকেই । প্রতিদিন কয়েক হাজার এরাজ্যের ও ভিন রাজ্যের গাড়ি আসে এখানে । চলে লোডিংয়ের কাজ, হিসাবের কাজ । কিন্তু বর্তমানে এই এলাকায় শুধুই দাঁড়িয়ে রয়েছে সারি সারি ট্রাক । নেই পণ্য । এলাকার চিত্রটা একদম আলাদা ।

উত্তরপ্রদেশ থেকে রসুন নিয়ে এরাজ্যে এসেছিলেন ট্রাক চালক অজয় রায় । তিনি বলেন, "সব বন্ধ । হোটেল, ধাবা, রেস্তরাঁ । খাবার মিলছে না । আমরা খাব কী ? কোথায় যাব জানি না । রোজ খাবারের দুশ্চিন্তায় আমরা অস্থির হয়ে উঠছি । আতঙ্কে আছি । কেউ যদি আমাদের সাহায্য করে তাহলে খুব ভালো হয় । তাছাড়া পরিবারের সদস্যরা রয়েছে সেই রাজ্যে, তাদের জন্যও চিন্তা হচ্ছে । খুব সমস্যায় রয়েছি ।"

ঝাড়খণ্ড থেকে আরেক ট্রাক চালক পিন্টু সিমেন্ট নিয়ে এরাজ্যে এসেছিলেন । লকডাউনে আটকে পড়েছেন । তাঁর কথায়, "খাবার-দাবার মিলছে না । এখানে তো সব বন্ধ । আর ক'দিন এমন চললে কী হবে জানি না । আমরা খাবার পাব কোথায় ?"

এই বিষয়ে চন্দ্রকোনা রোড- ঘাটাল ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক প্রদীপ মণ্ডল জানান, পরিবহন কর্মীরা খুব সমস্যার মধ্যে আছেন । তাঁদের খুব সংকটজনক পরিস্থিতি । পরিবহন ব্যবস্থাটা একবারে শেষ পর্যায়ে । এর সঙ্গে যাঁরা জড়িত তাঁদের অবস্থা দিন আনা দিন খাওয়া লোকের মতো হয়ে গেছে । গাড়ি এখন চলছে না, ফেরা যাচ্ছে না নিজের রাজ্যে । গাড়ির মাল পাওয়া যাচ্ছে না, কলকারখানা সব বন্ধ । এখানে আনুমানিক দেড় থেকে দু'হাজার গাড়ি আটকে আছে । পরিবহনকর্মীর সংখ্যা প্রায় কয়েক হাজার । ভিন রাজ্যে মাল যাচ্ছে না মাল আসছে না । ড্রাইভার হেল্পারদের অর্থনৈতিক অবস্থা তলানিতে । এরকম চলতে থাকলে আর কিছুদিন পরে এঁদের বাড়িতে আর হাঁড়ি চড়বে না । দীর্ঘদিন যদি লকডাউন চলতে থাকে তাহলে গাড়ির কিস্তি কীভাবে মেটাবেন তা নিয়েও চিন্তায় রয়েছেন । পরবর্তী ক্ষেত্রে একসঙ্গে অনেকটা টাকা ইনস্টলমেন্ট হিসাবে দেবে কী করে ?

যদিও পুরো বিষয়টি শুনে সাহায্য়ের আশ্বাস দিয়েছেন গড়বেতা 3 নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি আকাশদীপ সিংহ । তিনি বলেন, "ভিন রাজ্যের ট্রাক ড্রাইভার, হেল্পার ও এরাজ্যের পণ্য় পরিবহনে যুক্ত কর্মীরা, যাঁরা অসুবিধায় পড়েছেন, তাঁরা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে আমরা সাহায্য করব । এখানে একটা লঙ্গরখানা খুলেছি । সেখানে তাঁদের খাওয়ার ব্যবস্থা করেছি । কয়েকদিন আগে আমরা ভিন রাজ্যের ড্রাইভার হেল্পারদের হাতে 50 কেজি চাল ও আলু তুলে দিয়েছিলাম । এবারও সাহায্য করব ।"

গড়বেতা,11 এপ্রিল : কোরোনার জেরে 21 দিন ধরে লকডাউন দেশে । অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ছাড়া বন্ধ সমস্ত পরিবহন পরিষেবা । নানা পার্কিংয়ে কোটি কোটি টাকার মাল নিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে ট্রাকগুলি । সমস্যায় পরিবহন ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত কয়েক হাজার চালক, খালাসি,গাড়ির মালিক, ট্রান্সপোর্টার ,গ্যারেজের মেকানিক । এই পরিস্থিতিতে দু'বেলা দু'মুঠো খাবার জোগাতে পারছেন না তাঁরা । পরিবারের মুখেও অন্ন তুলে দিতে পারছেন না । শুধু এরাজ্যেরই নয়, লকডাউনে আটকে পড়া বাকি রাজ্যের চালক, খালাসিদেরও একই অবস্থা । রাস্তায় খাবার দোকান বন্ধ, রেস্তরাঁ বন্ধ, রান্না করবেন কোথায়, কী দিয়ে কেউ জানেন না । এই পরিস্থিতিতে প্রশাসনের কাছে সাহায্যের আর্জি জানাচ্ছেন সকলে ।

আজ লকডাউনের 18 নম্বর দিন । লকডাউনের জেরে সবথেকে বেশি সমস্যায় দিন আনা দিন খাওয়া মানুষজন । আয় নেই । 18 দিন বিনা রোজগারে সঞ্চয়ও প্রায় শেষ । ফলে একবেলা খেয়ে বা দু'দিনে একবার খেয়ে দিন কাটছে তাঁদের । এই দিন আনা দিন খাওয়া মানুষগুলোর মতোই অবস্থা রাজ্যের পরিবহন পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত মানুষদের । তাঁরাও আয়ের অভাবে, কেউ বাড়ি ফিরতে না পেরে কোনওমতে অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছেন । পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার সবচেয়ে বেশি আমদানি- রপ্তানি হয় চন্দ্রকোনা ও গড়বেতা এলাকায় । বিশেষ করে জেলার আলু, ধান সহ একাধিক কৃষিজ ফসলের আমদানি হয় এখান থেকেই । প্রতিদিন কয়েক হাজার এরাজ্যের ও ভিন রাজ্যের গাড়ি আসে এখানে । চলে লোডিংয়ের কাজ, হিসাবের কাজ । কিন্তু বর্তমানে এই এলাকায় শুধুই দাঁড়িয়ে রয়েছে সারি সারি ট্রাক । নেই পণ্য । এলাকার চিত্রটা একদম আলাদা ।

উত্তরপ্রদেশ থেকে রসুন নিয়ে এরাজ্যে এসেছিলেন ট্রাক চালক অজয় রায় । তিনি বলেন, "সব বন্ধ । হোটেল, ধাবা, রেস্তরাঁ । খাবার মিলছে না । আমরা খাব কী ? কোথায় যাব জানি না । রোজ খাবারের দুশ্চিন্তায় আমরা অস্থির হয়ে উঠছি । আতঙ্কে আছি । কেউ যদি আমাদের সাহায্য করে তাহলে খুব ভালো হয় । তাছাড়া পরিবারের সদস্যরা রয়েছে সেই রাজ্যে, তাদের জন্যও চিন্তা হচ্ছে । খুব সমস্যায় রয়েছি ।"

ঝাড়খণ্ড থেকে আরেক ট্রাক চালক পিন্টু সিমেন্ট নিয়ে এরাজ্যে এসেছিলেন । লকডাউনে আটকে পড়েছেন । তাঁর কথায়, "খাবার-দাবার মিলছে না । এখানে তো সব বন্ধ । আর ক'দিন এমন চললে কী হবে জানি না । আমরা খাবার পাব কোথায় ?"

এই বিষয়ে চন্দ্রকোনা রোড- ঘাটাল ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক প্রদীপ মণ্ডল জানান, পরিবহন কর্মীরা খুব সমস্যার মধ্যে আছেন । তাঁদের খুব সংকটজনক পরিস্থিতি । পরিবহন ব্যবস্থাটা একবারে শেষ পর্যায়ে । এর সঙ্গে যাঁরা জড়িত তাঁদের অবস্থা দিন আনা দিন খাওয়া লোকের মতো হয়ে গেছে । গাড়ি এখন চলছে না, ফেরা যাচ্ছে না নিজের রাজ্যে । গাড়ির মাল পাওয়া যাচ্ছে না, কলকারখানা সব বন্ধ । এখানে আনুমানিক দেড় থেকে দু'হাজার গাড়ি আটকে আছে । পরিবহনকর্মীর সংখ্যা প্রায় কয়েক হাজার । ভিন রাজ্যে মাল যাচ্ছে না মাল আসছে না । ড্রাইভার হেল্পারদের অর্থনৈতিক অবস্থা তলানিতে । এরকম চলতে থাকলে আর কিছুদিন পরে এঁদের বাড়িতে আর হাঁড়ি চড়বে না । দীর্ঘদিন যদি লকডাউন চলতে থাকে তাহলে গাড়ির কিস্তি কীভাবে মেটাবেন তা নিয়েও চিন্তায় রয়েছেন । পরবর্তী ক্ষেত্রে একসঙ্গে অনেকটা টাকা ইনস্টলমেন্ট হিসাবে দেবে কী করে ?

যদিও পুরো বিষয়টি শুনে সাহায্য়ের আশ্বাস দিয়েছেন গড়বেতা 3 নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি আকাশদীপ সিংহ । তিনি বলেন, "ভিন রাজ্যের ট্রাক ড্রাইভার, হেল্পার ও এরাজ্যের পণ্য় পরিবহনে যুক্ত কর্মীরা, যাঁরা অসুবিধায় পড়েছেন, তাঁরা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে আমরা সাহায্য করব । এখানে একটা লঙ্গরখানা খুলেছি । সেখানে তাঁদের খাওয়ার ব্যবস্থা করেছি । কয়েকদিন আগে আমরা ভিন রাজ্যের ড্রাইভার হেল্পারদের হাতে 50 কেজি চাল ও আলু তুলে দিয়েছিলাম । এবারও সাহায্য করব ।"

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.