ডেবরা 9 জুলাই: রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোটে 18 জনের মৃত্যউ মেনে নিতে পারছেন না প্রাক্তন আইপিএস অফিসার তথা ডেবরার তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবির। ভোট শেষ হওয়ার 24 ঘণ্টার মধ্য়েই তিনি ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন ৷ তাঁর স্পষ্ট দাবি, দলের উঁচু স্তরের বার্তা নিচু স্তরের কর্মীরা মেনে নেননি। তৃণমূল বিধায়কের অভিযোগ, "তারা চেয়ার, প্রধান এবং উপপ্রধান হওয়ার লোভে এই কাণ্ড ঘটিয়েছে। আজকের তারিখে এত কিছু থাকার পরও এই মৃত্যুতে বাঙালি হিসাবে আমি দুঃখিত এবং লজ্জিত।"
শনিবারই এক দফায় রাজ্যে হয়েছে পঞ্চায়েত নির্বাচন ৷ আর ওইদিনই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে হিংসা, হানাহানিতে মৃত্যু ঘটেছে 18 জন রাজনৈতিক দলের কর্মী-সমর্থকের। যে মৃত্যুতে গোটা রাজ্যজুড়ে নিন্দার ঝড় উঠেছে। ফাইভ-জি'র যুগের বাস করছে মানুষ। এত উন্নত ব্যবস্থা, এত কিছু জানা সত্ত্বেও ভোটে রাজনৈতিক হানাহানি আটকানো যাচ্ছে না, শুধু তাই নয়, মৃত্যুও ঘটছে আর তাতেই ক্ষুব্ধ এদিন হয়েছেন ডেবরার তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবির। এদিন তিনি বলেন, "এত কিছু পরিকল্পনা করেও মানুষ সজাগ সচেতন হওয়া সত্ত্বেও এই মৃত্যু আমরা আটকাতে পারলাম না। অকালেই ঝরে গেল প্রায় 18টি তাজা প্রাণ।" এর সঙ্গেই, তিনি খোদ নিজের দলের কর্মীদের প্রতি ক্ষোভ উগরে দেন। তিনি স্পষ্টতই বলেন, "অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় নবজোয়ার কর্মসূচি করে বিভিন্নভাবে নেতৃত্ব এবং দলের কর্মীদের সংযত এবং শান্তিপূর্ণ ভোট করানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন ৷ কিন্তু পঞ্চায়েতে প্রধান এবং উপপ্রধান হওয়ার লোভে বহু নেতা-কর্মী এই ধরনের বিশৃঙ্খলা ঘটিয়ে তরতাজা প্রাণ কেড়ে নিয়েছে। যা দেখে খুব কষ্ট হচ্ছে এবং আমি মেনে নিতে পারছি না।"
আরও পড়ুন: বাহিনীকে অন্ধকারে রাখা হয়েছিল, দেওয়া হয়নি স্পর্শকাতর বুথের তালিকা; অভিযোগ বিএসএফের
যদিও 822 কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন নিয়েও তিনি উষ্মা প্রকাশ করেন ৷ তাঁর বক্তব্য, "কেন্দ্রীয় বাহিনী কেন, আমরা রাজ্য পুলিশ দিয়েই শান্তিপূর্ণ ভোট করাতে পারতাম। যদি ভোটের আগে নির্দিষ্ট রুল অনুযায়ী যে কাজগুলো করতে হয় সেই কাজগুলো পুলিশ করত ৷ আমার মনে হয় সেগুলো করা হয়নি।" ভোটের এই চরম অব্যবস্থা নিয়ে তিনি শুধু নিজের দলের বিরুদ্ধে নয় বরং ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন রাজ্য নির্বাচন কমিশনের প্রতিও ৷ ব্যর্থতার দায় থেকে বাদ দেননি পুলিশ, এবং অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলিকেও ৷ তিনি বলেন, "শুধু বাংলা ছাড়া এই ধরনের হিংসা, খুন আর কোথাও হয় বলে আমার মনে হয় না।" একইসঙ্গে, পুনরায় জেলার দশটি বুথে পুননির্বাচন নিয়ে তিনি জানান, জেলাশাসক মনে করলে এখানে রি-পোল করাতে পারেন। একইসঙ্গে তিনি বলেন, "বিএসএফ কী করেছে তা নিয়ে আমার মাথাব্যথা নেই। কারণ এই ঘটনা আজকের নয়, আগেও এই ধরনের ঘটনা ঘটত। তবে আগের ট্র্যাডিশন যদি আমরা এখনও বজায় রাখি তবে আমরা কবে বড় হব। কবে আমরা সমাজকে সচেতন করব ৷ এবং এই খুনোখুনি বন্ধ করতে পারব ? বাঙালি হিসেবে আমি খুব লজ্জিত এবং দুঃখিত।"