মেদিনীপুর, 10 জানুয়ারি : CAA ও NRC বিরোধী আন্দোলন নিয়ে রাজ্য সরকারকে আক্রমণ করলেন BJP নেত্রী তথা অভিনেত্রী রিমঝিম মিত্র ৷ আজ মেদিনীপুরের অভিনন্দন সভা থেকে রাজ্য সরকার ও তৃণমূলনেত্রীকে আক্রমণ করেন তিনি ৷ বলেন, " CAA-এর বিরুদ্ধে নোংরা নর্দমার নেংটি ইঁদুরগুলো যতই কুটুস কুটুস কামড়াক কিছুই করতে পারবে না ৷" পাশাপাশি তিনি কমিউনিস্টদের কটাক্ষ করতেও ছাড়েননি ৷ বলেন, " কমিউনিস্টরা বুড়ো আরবি ঘোড়ার দল ৷ যতই দু'পা তুলে লাথি মারুক ,কোনও লাভ নেই ৷ বাংলায় CAA আইন প্রণয়ন হবেই ৷"
রাজ্য BJP-র সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসুও রাজ্য সরকাকে আক্রমণ করেন ৷ গতকালের নৈহাটির বিস্ফোরণ নিয়ে সরকারের সমালোচনা করেন তিনি ৷ কটাক্ষ করেন মুখ্যমন্ত্রীকে ৷ বলেন, "এখন নৈহাটিতে বিস্ফোরণ হয়েছে, যেদিন কালীঘাটে হবে সেদিন দিদিমণি নারকেল গাছে উঠে বসবেন ৷"
আজ CAA-র সমর্থনে মেদিনীপুরে পদযাত্রা করে BJP ৷ টিভি টাওয়ারের ময়দান থেকে শুরু করে এই মিছিল শেষ হয় LIC চকে বিদ্যাসাগরের মূর্তির পাদদেশে ৷ সেখানে অভিনন্দন সভা হয় ৷ সভায় উপস্থিত ছিলেন BJP-র রাজ্য সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু, জেলা সভাপতি সমিত দাস ৷ এছাড়া রিমঝিম মিত্র ,কামাল হোসেন খান, আইনজীবী শুভজিৎ রায়সহ BJP-র রাজ্য নেতা , জেলা নেতা, কর্মী-সর্মথকেরা ৷ সভা থেকে রিমঝিম মিত্র বলেন, "আমরা পশ্চিমবঙ্গকে ভারত থেকে আলাদা হতে দেব না ৷ বাংলায় CAA আইন প্রণয়ন হবেই ৷ আপনারা মিসকল দিয়ে যাঁরা এখনও সদস্য পদ নেননি তাঁরা সদস্য হয়ে যান ৷ আমি আপনাদের নম্বর বলে দিচ্ছি ৷ এই নম্বরে মিসকল দিয়েই সদস্য হতে পারবেন ৷"
এছাড়াও বক্তব্য রাখতে গিয়ে মেদিনীপুরের এক CAA বিরোধী সভাকে কটাক্ষ করেন রিমঝিম ৷ বলেন, "কিছু মা-মাসিদের দল এই CAA বিরোধিতাই নেমেছেন ৷ তাঁদের বলি এত কষ্ট করে কিছুই লাভ নেই ৷ CAA হবেই ৷" মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশে কটাক্ষ করে বলেন, "দিদিমণি সবার মুখ্যমন্ত্রী ৷ তিনি হাতের ভঙ্গিমা পালটে সবাইকেই আশীর্বাদ করুন ৷ শুধুমাত্র একটি সম্প্রদায়কে নয় ৷" পাশাপাশি তিনি বলেন, "মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন CAA করতে হলে তাঁর লাশের উপর দিয়ে হাঁটতে হবে ৷ কিন্তু এমন কথা তো মুখে আনাও পাপ ৷ উনি সুস্থ সবল থাকা অবস্থায় আমরা CAA প্রণয়ন করব ৷ ওনার দুঃস্বপ্ন আমরা সত্যি হতে দেব না ৷"
জনসভা থেকে রাজ্যের শাসকদলের নেত্রীকে তীব্র আক্রমণ করেন সায়ন্তন বসু ৷ বলেন, "নৈহাটিতে বাজি ফাটলে নাগাসাকি, হিরোশিমার মতো মতো অবস্থা হয় ? ওটা বাজি নয়, ওটাকে বোমা বলে ৷ আজ নৈহাটিতে ফাটছে, যেদিন কালীঘাটে ফাটবে সেদিন দিদিমণি নারকেল গাছে উঠে বসবেন ৷ সেদিন বুঝবেন বোমার জোর কতটা ৷ বাংলাকে জেহাদিদের স্বর্গরাজ্য তৈরি করতে চাইছেন ৷ কিন্তু আমরা তা হতে দেব না ৷" এছাড়াও তিনি বলেন, "CAA আইন বাংলাদেশ থেকে আগত অত্যাচারিত, নিপীড়িত হিন্দু ভাইবোনেদের জন্য ৷ যারা ধর্মরক্ষা, মানরক্ষা, সম্নানরক্ষা, সম্পদরক্ষার কারণে এসেছেন তাঁদের জন্য এই আইন ৷ তাঁরা এখানে এসে ভারতের নাগরিক হবেন ৷ দিদিমণি বাংলাদেশের লুঙ্গিওয়ালার জন্য চিৎকার করছেন, চেঁচামেচি করছেন ৷ তবে আমরা বাংলাদেশের কোনও লুঙ্গিওয়ালাকে এখানে থাকতে দেব না ৷ তাদের লাথি মেরে দেশ থেকে তাড়াব ৷ তারজন্য যদি আপনাদের চেহারা শ্মশানযাত্রীদের মতো হয়ে যায় তবে আমাদের কিছু করার নেই ৷" তিনি আরও বলেন, "দিদিমণিকে দেখে মনে হচ্ছে যে রোজই শ্মশানে গিয়ে বসে আছেন ৷ উনি লিখে রাখুন ৷ ওনার বেঁচে থাকা, ভালো থাকাকালীন এই আইন বাংলায় কার্যকর করব ৷ আমরা হিন্দুদের নাগরিকত্ব দেব ৷ দিদি আটকাতে পারবেন না ৷ মেহবুবা মুফতিও বলেছিলেন কাশ্মীরে 370 ধারা রাখতে হবে ৷ 35-A ধারা রাখতে হবে ৷ নয়তো ওনার মৃতদেহের উপর দিয়ে হাঁটতে হবে ৷ কিন্তু আজও উনি বেঁচে আছেন, ভালো আছেন ৷ কিন্তু কাশ্মীরে 370 ধারা নেই ৷ আমরা বাংলাদেশের মুসলমানদের তাড়িয়ে দেব ৷ এখানকার মুসলমানদের চিন্তা নেই ৷ তাঁরা ভারতের নাগরিক ৷ তাঁরা এখানেই থাকবেন ৷"