মেদিনীপুর, 2 সেপ্টেম্বর: মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশকে অমান্য করে মেদিনীপুরে চলছে প্রমোটিং রাজ আর সঙ্গে জলাশয় ও পুকুর ভরাট (Pond filled Illegally)। পুকুর বোঝাচ্ছে ওয়ার্ডের শাসক দলের যুব সভাপতি ৷ আর এতে উদাসীন পৌরসভা ৷
মেদিনীপুর পৌরসভার 1 নম্বর ওয়ার্ডের হবিবপুর তোলাপাড়া এলাকায় প্রাক্তন তৃণমূল যুব সভাপতি উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায়। এলাকায় প্রোমোটার হিসেবেই খ্যাতি যশ রয়েছে তাঁর। তাঁর নামে এর আগেও একাধিক অভিযোগ উঠেছিল। এটিএম এর টাকা আত্মসাৎ করারও অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। তৃণমূল যুব সভাপতির ক্ষমতার দম্ভে এলাকায় একাধিক পুকুর দখলের অভিযোগ রয়েছে। হবিবপুর তোলাপাড়া সংলগ্ন মনোরঞ্জন ভবনের পাশে একটি বড় পুকুরের মাটি কেটে বুজিয়ে দেওয়ার কাজ চলছে ৷ 25 শতাংশ মাটি বোজানোর কাজও হয়ে গিয়েছে। বাকি পুকুর ভরাটের কাজ চলছে দিনে ও রাতের অন্ধকারে। আর তাতেই সরব হয়েছে এলাকাবাসী। স্থানীয়রা ও বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোও চাইছে এই পুকুর ভরাট বন্ধ করুক শাসকদল (TMC) ।
আরও পড়ুন: 1 বছরেই জলাশয় ভরাট, ঘুমিয়ে মালদা প্রশাসন
উল্লেখ্য, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারে বারে নির্দেশিকা দিয়েছেন কোনওভাবেই জলাশয় ও পুকুর ভরাট করে অবৈধভাবে প্রোমোটিং করা যাবে না। কিন্তু সেই নির্দেশিকাকে কেই বা শোনে। নির্দেশিকাকেকে মান্যতা না দিয়েই এখন অবাধে চলছে পুকুর ভরাট। যদিও এই বিষয়ে পৌরসভা সম্পূর্ণভাবে উদাসীন। ঘটনায় খোদ শাসকদলের অন্দরে ছড়িয়েছে বিতর্ক। মেদিনীপুর পৌরসভা কেন এই ধরনের ঘটনায় উদাসীন? তার কৈফত চাওয়া হবে বলেই জানানো হয়েছে।
যদিও এ বিষয়ে এলাকাবাসী সুব্রত চক্রবর্তী বলেন, "শুধু একটা পুকুর নয় এই ওয়ার্ডের ভিন্ন ভিন্ন জায়গায় এই পুকুর ভরাট চলছে আর যাতে জড়িত শাসকদল। আমরা চাইছি এই জলাশয় অবিলম্বে খুলে দেওয়া হোক ওয়ার্ডবাসীর জন্য ৷ দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক।" যদিও এই বিষয়ে এলাকার ওয়ার্ড কাউন্সিলর এবং ভাইস চেয়ারম্যান অনিমা সাহা জেনেও না জানার ভান করে রয়েছেন বলেই অভিযোগ উঠেছে ৷ তবে তিনি খোঁজ নিয়ে দেখবেন এবং যদি এইরকম ঘটনা ঘটে তবে অবশ্যই পৌরসভা কড়া হাতে ব্যবস্থা নেবে বলে তিনি জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: শহরের আবর্জনা ফেলে বিল ভরাটের অভিযোগ ! অস্বীকার পৌরসভার
যদিও এই ঘটনায় খোদ শাসকদলের মধ্যে ছড়িয়েছে ক্ষোভ। তৃণমূল জেলা সভাপতি সুজয় হাজরা বলেন, "অবিলম্বে পৌরসভার কাছে চিঠি দিয়ে জানতে চাইব কেন জলাশয় ভরাট হচ্ছে? কেন মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ অমান্য করে প্রোমোটিং রাজ চলছে ওয়ার্ডে। ওই এলাকার ওয়ার্ড সভাপতিকে বলব ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে ৷" ঘটনায় আঙুল তুলেছে গেরুয়া শিবিরও (BJP)। বিজেপির মুখপাত্র অরূপ দাস বলেন, "শুধু জলাশয় ভরাট তা নয় বড়, বড় পুকুর ইতিমধ্যে বুজিয়ে ফেলছে শাসক দল তৃণমূল ৷ তার বেশি অংশটাই ভাগ যায় তৃণমূল নেত্রীর কাছে। আমরা বহুবার এ নিয়ে বলেছি কিন্তু তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা এই অবৈধ প্রোমোটিংয়ে জড়িত এবং তাঁরাই জলাশয় বুঝিয়ে ফেলছে পৌরসভার নাকের ডগা দিয়ে। তাই পৌরসভা সম্পূর্ণ উদাসীন।"
যদি ওই পুকুর ভরাটের উলটো যুক্তি দেখিয়েছেন প্রোমোটার এবং ওয়ার্ডের প্রাক্তন তৃণমূল যুব সভাপতি উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায়। পুকুর ভরাট হচ্ছে না বরং পাড় তৈরির কাজ চলছে। মূলত পুকুরকে পরিষ্কার করার কাজ চলছে বলে জানান তিনি ৷
আরও পড়ুন: রানিগঞ্জে পুকুর ভরাট করে বহুতল ! অভিযোগ পেয়েই নড়েচড়ে বসল পৌরনিগম