ডেবরা, 9 অগস্ট : ছেলে জ্বর, শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৷ ভরসা বলতে বৃদ্ধা মা ৷ হাসপাতালে মা-ই সর্বক্ষণ দেখভাল করত ৷ সেই মাও আজ থেকে আর ছেলের পাশে নেই ৷ গতকাল রাতের বেলায় হঠাৎ হাসপাতালের তিনতলার ছাদ থেকে ঝাঁপ দেন । মৃতের নাম কাজল সিং (60) ৷ রাতের বেলায় কয়েকজন স্থানীয় তাঁকে হাসপাতালের তিনতলা থেকে ঝাঁপ দিতে দেখে ৷ তাঁর দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে । এটা আত্মহত্যা কি না তা ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসার পরই জানা যাবে ৷ বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করছে ডেবরা থানার পুলিশ ।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, দিন কয়েক আগেই জ্বর ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে খড়গপুর লোকাল থানার কনিকা গ্রামের মন্টু সিং ডেবরা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন । বয়স চল্লিশের কাছাকাছি । করোনা পরীক্ষা করালে তাঁর রিপোর্ট নেগেটিভ আসে ৷ কিন্তু শ্বাসকষ্টের সমস্যা থাকায় তাঁকে সারি ওয়ার্ডে রাখা হয়েছিল। তাঁর চিকিৎসা চলছিল । অবস্থা মোটামুটিভাবে স্থিতিশীল । তাঁর বাড়ির অন্য কোনও পুরুষ সদস্য না আসায় তাঁর মা-ই ছেলের কাছে থাকতেন । এই বিষয়ে ছেলেকে বারবার জিজ্ঞাসা করলে বাড়ি থেকে অন্য কেউ আসবে বলে জানাতেন । কিন্তু কেউ না আসায় বাধ্য হয়েই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাঁর মা’কে থাকতে দিয়েছিলেন । হাসপাতালে অন্য রোগীর চাপও তেমন ছিল না ৷ হঠাৎ করেই সোমবার ভোররাতে হাসপাতালের তিনতলায় (আনুমানিক 2টো থেকে 3টের দিকে) ভর্তি থাকা মন্টু সিংয়ের মা কাজল সিং অনেক উঁচুতে থাকা জানালায় উঠে পড়েন । সেখান থেকে ঝাঁপ দেন । সেইসময় দু-একজন বিষয়টি প্রত্যক্ষ করেন ৷ তবে কেন বা কী কারণে তা বলতে পারছেন না কেউই । তবে এই বিষয়ে হাসপাতালের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
আরও পড়ুন, Lightning death : বজ্রাঘাতে কাকা-ভাইপো-সহ তিনজনের মৃত্যু, জখম মহিলা
হাসপাতালের সুপার তথা BMOH আরিফ জানিয়েছেন, ওঁর ছেলে চিকিৎসাধীন । উনি ছেলের সঙ্গে থাকতেন । অন্য আর কেউ না আসায় একপ্রকার বাধ্য হয়েই আমরা অনুমতি দিয়েছিলাম । আর উনি যেখান থেকে লাফ দিয়েছেন সেই জানালা অনেকটাই উঁচুতে । গভীর রাতে কীভাবে সকলের নজর এড়িয়ে উঠে পড়েছেন তা আশ্চর্যের । রোগী হলে আমরা বলতে পারতাম কিছুটা । ওনার ছেলে মোটামুটি স্থিতিশীল বলা যায় । ডেবরা থানার পক্ষ থেকে ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত শুরু করা হয়েছে ।