দুর্গাপুর, 18 জানুয়ারি: কানে হেডফোন। হেলমেট ঝুলছে লুকিং গ্লাস থেকে। মদ্যপান করতে করতে বাইক চালাচ্ছেন যুবক ৷ আর সেই যুবককে নরকের টিকিট দিতে গদা উঁচিয়ে সামনে দাঁড়িয়ে রয়েছেন স্বয়ং যমরাজ । মানুষকে ট্রাফিক নিয়মের পাঠ দিতে এবার অভিনব উদ্যোগ নেওয়া হল দুর্গাপুরে ৷ শহরের গান্ধি মোড়ে আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের পক্ষ থেকে বসানো হয়েছে নয়া মূর্তি ৷ তাতেই দেখা যাচ্ছে যমরাজ এবং বেপরোয়াভাবে বাইক চালানো এক যুবককে ৷
এই মূর্তিগুলির পাশে লেখা, বাইক চালানোর সময় মদ্যপান করবেন না। হেলমেট ছাড়া বাইক চালাবেন না। হেডফোন ব্যবহার করবেন না। বেপরোয়া গাড়ির গতিতে শহরের রাজপথ থেকে অলিগলি সর্বত্রই প্রাণ যায় নিরীহ মানুষের। প্রাণ হারান বেপরোয়া বাইক চালকরাও। এই দুর্ঘটনার রুখতে রাজ্যজুড়ে 'সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ' কর্মসূচির চলছে ৷ এই কর্মসূচির মাধ্যমে মানুষকে সচেতন করতে রাজ্যজুড়ে ট্রাফিক মহল নানা উদ্যোগ নিচ্ছে । রাস্তায় বেরিয়ে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে এক বিন্দু রক্ত যাতে না ঝরে তাই শিল্পাঞ্চল দুর্গাপুর জুড়ে পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ সচেতনতার পাঠ দিতে নেমেছে ।
এদিন মূর্তি দুটির উদ্বোধন করলেন আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডিসি ট্রাফিক ভিজি সতীশ পশুমার্থি। উপস্থিত ছিলেন এসিপি ট্রাফিক তুহিন চৌধুরীও। তাছাড়া প্রশাসক মন্ডলীর দুই সদস্য রাখি তিওয়ারি ও ধর্মেন্দ্র যাদব-সহ ট্রাফিক পুলিশের আধিকারিকরা হাজির ছিলেন। মূর্তিগুলির উদ্বোধনের পাশাপাশি বেসরকারি স্কুলের পড়ুয়াদের পদযাত্রার মাধ্যমে এ দিন সচেতনতা বাড়ানো হয়।
সাধারণ মানুষকে বার্তা দেওয়া হয়, ট্রাফিক নিয়ম মেনে গাড়ি চালিয়ে সুস্থভাবে বাড়িতে পৌঁছন। বাড়িতে কেউ আপনার অপেক্ষায় আছেন। রেষারেষি করে রাস্তায় রক্ত না-ঝরিয়ে মানুষের প্রাণ বাঁচাতে রক্ত দিন। চালকদের মধ্যে সচেতনতার বীজ রোপন করার জন্য এ দিন গাড়ির চালক, এলাকার মানুষ ও ট্রাফিক পুলিশদের নিয়ে করা হয় রক্তদান শিবিরও । সঙ্গে বিলি করা হয় হেলমেটও ।
আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডিসি ট্রাফিক ভিজি সতীশ পশুমার্থি বলেন, "জাতীয় সড়ক সুরক্ষা কর্মসূচি চলছে । সমস্ত চালকদের এবং সাধারণ মানুষদের ট্রাফিক নিয়ে সচেতন করা হচ্ছে। পড়ুয়াদের নিয়ে করা হচ্ছে পদযাত্রা । করা হচ্ছে পথনাটিকাও । কোথাও কোথাও মূর্তির মাধ্যমেও সচেতনতার বার্তা দেওয়া হচ্ছে । এই সচেতনতার জেরে বিগত কয়েক বছরের তুলনায় কমেছে পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যুর হার ।"
আরও পড়ুন: