দুর্গাপুর, 8 নভেম্বর: দুর্গাপুরে রাষ্ট্রায়াত্ত দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশনের নতুন ইউনিট গঠনের ক্ষেত্রে অবৈধ দখলদাররা দাবি তুলেছেন যে 'শিল্প পরে, আগে পুনর্বাসন চাই' ৷ তবে এ বার তাদের বিপরীত সুর শোনা গেল দুর্গাপুর নগর নিগমের 36 ও 37 নম্বর ওয়ার্ডের গ্রামবাসীদের গলায় ৷ শিল্পের দাবিতে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তাঁরা পালটা মিছিল করলেন । তাঁদের দাবি, "যাঁরা শিল্পের বিরোধিতা করছেন, তাঁদের জন্য আমরা ঝাঁটা নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকব ৷ আমরা চাই না সিঙ্গুরের ঘটনার পুনরাবৃত্তি হোক । আমরা চাই না দুর্গাপুরের রাষ্ট্রায়ত্ত এমএএমসি কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ার পুনরাবৃত্তি হোক ৷"
রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্প বাঁচাতে গণআন্দোলনে জমিদাতারা । ধুঁকতে ধুঁকতে দুর্গাপুরের রাষ্ট্রায়ত্ত ডিটিপিএস কারখানার চারটি ইউনিটই বন্ধ হয়ে গিয়েছে । অন্ধকার নেমে এসেছে রতুরিয়া, অঙ্গদপুর-সহ বিস্তীর্ণ এলাকা । এ বার পঞ্চম ইউনিট চালু করার উদ্যোগ নিয়েছে দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশনের অধীনস্ত দুর্গাপুর থার্মাল পাওয়ার স্টেশন কর্তৃপক্ষ । রাষ্ট্রায়ত্ত কারখানা সম্প্রসারণের জন্য যখন কর্তৃপক্ষ জমি দখলকারীদের উচ্ছেদ করতে যাচ্ছে, তখনই কিছু রাজনৈতিক দলের মদতে বাধা দিচ্ছে দখলদাররা । সেই বাধার মুখে পড়ে পিছু হঠতে হচ্ছে কারখানা কর্তৃপক্ষকে । এ বার কারখানা কর্তৃপক্ষের পাশে দাঁড়িয়ে কারখানা সম্প্রসারণের দাবি তুলেছেন 1966 সালে যাঁদের জমিতে কারখানা গড়ে উঠেছিল সেইসব জমিদাতারা ।
জমিদাতারা এবং এলাকাবাসীরা চাইছেন, কারখানা সম্প্রসারণ হোক, কারখানার পঞ্চম ইউনিটের কাজ দ্রুত শুরু হোক । আবার জ্বলে উঠুক আলো । কারখানার উৎপাদন পুনরায় শুরু হলে জুটবে কর্মসংস্থান ৷ সেই দাবি নিয়ে মঙ্গলবার বিকেলে রাতুড়িয়া, অঙ্গদপুর, মায়াবাজার পোরশা-সহ পাঁচটি গ্রামের প্রায় তিন হাজার লোক একত্রিত হয়ে মহামিছিল শুরু করে । আন্দোলনকারীরা কারখানা কর্তৃপক্ষের পাশে থেকে কারখানা সম্প্রসারণ করতে চাইছেন । দুর্গাপুরকে সিঙ্গুর হতে দেওয়া যাবে না বলে দাবি তুলছেন তাঁরা । রাজ্যের বুকে শিল্প বাঁচাতে এই আন্দোলন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে বলেও মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল ।
আরও পড়ুন: সিঙ্গুর নিয়ে টাটাকে ক্ষতিপূরণের রায়ের বিরুদ্ধে আইনি পথে রাজ্য
37 নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা প্রিয়াঙ্কা দাস মিছিল শেষে জানান, "আমরা আরও একটা সিঙ্গুর চাই না, আমরা চাই না দুর্গাপুরের এমএএমসি কারখানার মতো পরিণতি । আমরা চাই ডিভিসি নতুন ইউনিট চালু করুক । দুর্গাপুরের ছেলেমেয়েদের ভবিষ্যৎ এই কারখানা । অন্ধকারে দুর্গাপুর ঢেকে যাক এটা কাম্য নয় । কিছু স্বার্থপর মানুষ নিজেদের স্বার্থরক্ষা করার জন্য এই কারখানার ভবিষ্যৎকে অন্ধকারে ঠেলে দিতে চাইছে । আমরা তাদের বিরুদ্ধে আজ রাস্তায় নেমেছি ।"
এই একই কথা শোনা গেল স্থানীয় বাসিন্দা তথা দুর্গাপুর মহকুমা আদালতের বিশিষ্ট আইনজীবী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের কন্ঠে । হাজার হাজার মানুষ শিল্পের পক্ষে স্লোগান তুললেন ।