দুর্গাপুর, 15 এপ্রিল : দুর্গাপুরের এক হোটেলে কাজ করেন প্রৌঢ় । হঠাৎই লকডাউন ঘোষণা হওয়ায় আর বাড়ি ফেরা হয়নি । তারপর থেকে হোটেলের বাইরে এক তক্তাপোশেই কেটেছে 18 দিন । লকডাউনের 19 নম্বর দিনে এক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন পথ কুকুরদের খাবার দিতে এসে দেখতে পায় তাঁকে । এই কদিনে একবারও দেখা করতে আসেননি হোটেলের মালিক । খবরটি প্রকাশ্যে আসতেই বীরভূমের ওই প্রৌঢ় কার্তিক চট্টোপাধ্যায়ের পাশে দাঁড়িয়েছে এলাকাবাসী । দেখা করে গেছেন হোটেলের মালিকও । এখনও বাড়ি ফিরতে পারেননি প্রৌঢ় । তবে দু'বেলা খাবার পাচ্ছেন । সুস্থ আছেন ।
দুর্গাপুর সিটি সেন্টারের সরকারি বাস টার্মিনালের পাশে ফুটপাথের একটি হোটেলে কাজ করেন কার্তিক চট্টোপাধ্যায় । লকডাউনে বাস পরিষেবা বন্ধ । তাই আর বোলপুরে নিজের বাড়ি ফিরতে পারেননি । লকডাউনের প্রথম দিন থেকে হোটেলের বাইরে থাকা তক্তাপোশে শুয়ে-বসে দিন কাটাচ্ছিলেন। লকডাউনের 19 নম্বর দিনে হঠাৎই তাঁকে দেখতে পান কয়েকজন যুবক । এলাকার কুকুরগুলিকে খাবার দিতে এসেছিলেন তাঁরা । যুবকদের কাছে খাবার চাইছিল ওই প্রৌঢ় । তাঁর সঙ্গে কথা বলে জানা যায় পুরো ঘটনা । প্রৌঢ় জানান, এভাবেই কেটেছে 18 দিন । যখন খাবার পেতেন, খেতেন । নাহলে জল খেয়েই পেট ভরাতেন । স্বল্পভাষী কার্তিকবাবু বলেন, "খাবার চাইতে খারাপ লাগত । তবুও যা পেতাম, খেয়ে দিন কেটে যেত ।"
Etv ভারতে সেই খবর প্রথম প্রকাশিত হয় । তারপরই অনেকে ব্যক্তিগত উদ্যোগে, কখনও আবার স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন খাবার দিয়ে যান ওই প্রৌঢ়কে । খবর পেয়ে হোটেল মালিক কার্তিক চট্টোপাধ্যায়ের কাছে আসেন । পাশাপাশি তাঁর হাতে মাস মাইনের টাকা ও অতিরিক্ত আরও 500 টাকা,সঙ্গে 10 কেজি চালও দিয়ে যান। খবর পেয়ে পৌঁছায় সিটি সেন্টার ফাঁড়ির পুলিশ । ইতিমধ্যে বেশ কয়েকবার তার খোঁজও নিয়েছেন পুলিশকর্মীরা ।
আজ এলাকার কয়েকজন একসঙ্গে সুক্তো ,ডাল, মুরগির মাংস ,মাছ রেঁধে নিয়ে এসেছেন তাঁর জন্য । কার্তিক চট্টোপাধ্যায় বলেন, "এখন ভালো আছি। দুবেলা দু'মুঠো খেয়ে সুস্থ আছি।"