শক্তিগড়, 14 জানুয়ারি: প্যারামেডিকেলের তৃতীয় বর্ষের এক ছাত্রীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধারকে ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়াল শক্তিগড়ের বাম এলাকায়। মৃত ছাত্রীর নাম বৃষ্টি বেরা (20) । তার বাড়ি বাঁকুড়া জেলায় বলে জানা গিয়েছে। শনিবার রাতে পুলিশ এক ভাড়া বাড়ি থেকে দেহ উদ্ধার করে ৷ ছাত্রীর ঘরের দরজা খোলাই ছিল ৷ ফলে সেটা আত্মহত্যা নাকি এর পিছনে অন্য কোনও কারণ আছে তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এবং ডিউটি ইনচার্জের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে ছাত্রীর পরিবার।
ছাত্রীর পরিবারের অভিযোগ, শক্তিগড়ের একটা বেসরকারি হাসপাতালে সে প্রশিক্ষণ নিচ্ছিল। ওই হাসপাতালে প্যারামেডিকেল ডিএমএলটি কোর্সেরই ছাত্রী ছিল সে। সেখানে ডিউটি ইনচার্জ তাকে খারাপ নজরে দেখত বলে অভিযোগ। এমনকী মানসিকভাবে নির্যাতনও করা হত তাকে। পুলিশি তদন্তে আসল ঘটনা সামনে আসুক চাইছে ছাত্রীর পরিবার।
মৃতের পিসেমশাই সন্দীপ সামন্ত বলেন, "বছর দেড়েক ধরে হাসপাতালে ট্রেনিং নিচ্ছিল। গতকাল রাতে জানতে পারি সে আত্মহত্যা করেছে। কী কারণ বুঝতে পারছি না। তবে ওর বাবার কাছে শুনেছি যে এই নার্সিংহোমের বেশ কিছু চিকিৎসক তার সঙ্গে খারাপ আচরণ করত ৷ এছাড়া অন্য কোনও কিছু বিষয় আছে নাকি আমরা কিছুই বুঝতে পারছি না।" সম্প্রতি ওই ছাত্রী 10 দিন ছুটি নিয়ে বাড়ি গিয়েছিল। বাড়িতে তার মাকে ইনচার্জের নামে অভিযোগও করে ৷ কুপ্রস্তাব দেওয়ার কথাও বাড়িতে জানায় সে ৷
অন্যদিকে, মেয়েটির বাবা শুভেন্দু বেরা বলেন, "আমার মেয়ে এই হাসপাতালে প্যারামেডিকেল ডিএমএলটি কোর্সের ছাত্রী ছিল। কাল রাতে ফোনে জানতে পারি ঘটনার কথা। এসে দেখলাম ঘরের দরজায় ছিটকিনি দেওয়া ছিল না। এই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের খোসবাগান এলাকায় একটা চেম্বার আছে। ওই চেম্বারে আমার মেয়েকে প্রতিদিন আট ঘন্টা করে ডিউটি করতে হত। তাকে মানসিক চাপ দোয়া হত ৷ মেয়ে অনেকবার আমাদের সেসব জানায়। এছাড়া তাদের ইনচার্জ ওকে কুনজরে দেখত। ইনচার্জের বিরুদ্ধেই আমাদের মূল অভিযোগ। হাসপাতালের তরফে এখনও কেউ আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি। আমরা গরিব মানুষ। যে বা যারা যুক্ত পুলিশ যেন তদন্ত করে দেখে।"
ইন্সটিটিউটের ম্যানেজার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায় বলেন, "মেয়েটি এখানকার ছাত্রী। খুব শান্ত প্রকৃতির মেয়ে। পড়াশোনায় ভালো ছিল। শুনলাম আত্মহত্যা করেছে। পুলিশ তদন্ত করছে। তবে এখানে কাউকে কাজ নিয়ে মানসিক চাপ দেওয়া হয় না। তবে যেহেতু হাসপাতাল এটা তাই ইমারজেন্সি অনেক কাজ করতে হয়। ফলে কাজের ক্ষেত্রে সময় বেশি দিতে হতেই পারে। এখানে সবাই পরিবারের মতোই থাকে।"
আরও পড়ুন
ব্যারাকপুরে ফের দুষ্কৃতী দৌরাত্ম্য, তোলা না পেয়ে ব্যবসায়ীকে কোপানোর অভিযোগ
জাতীয় সড়কে গাড়ি উলটে 3 মহিলার মৃত্যু
কাঁটাতার পেরিয়ে মানবিকতা, জিরো লাইনে বাবার শেষকৃত্যে থাকার অনুমতি বাংলাদেশি মেয়েকে