কৃষ্ণনগর, 30 ডিসেম্বর : কৃষ্ণনগরের মাটির পুতুল ৷ জগৎ বিখ্যাত ৷ শুধু দেশ নয়, বিদেশ থেকেও মানুষ আসেন এখানকার মৃৎশিল্পীদের হাতের ছোঁয়ায় তৈরি অনবদ্য সৃষ্টি দেখতে ও কিনতে ৷ এখানকার বিশেষত্ব হল রিয়্যালিস্টিক হিউম্যান ফিগার ৷ কিন্তু বর্তমানে মৃৎশিল্পীদের একাংশের আশঙ্কা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে হারিয়ে যেতে বসেছে এই শিল্প ৷ নতুন প্রজন্মের শিল্পীদের কৃষ্ণনগর ঘরানার সঙ্গে পরিচয় করানো প্রয়োজন ৷ আর তারজন্যই দরকার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ৷ দাবি, সরকারি উদ্যোগে কৃষ্ণনগরে তৈরি হোক আর্ট কলেজ ৷
রাষ্ট্রপতি পুরষ্কারপ্রাপ্ত মৃৎশিল্পী তড়িৎ পাল বলেন, "আমরা চাই কৃষ্ণনগরে একটা আর্ট কলেজ হোক ৷ এখানে একটা আর্ট কলেজ হলে স্থানীয় ছেলে-মেয়েরা প্রশিক্ষণ নিতে পারবে ৷ " রাষ্ট্রপতি পুরষ্কারপ্রাপ্ত আরও এক মৃৎশিল্পী সুবীর পাল বলেন, " দীর্ঘদিন ধরেই আমরা একটা দাবি করে আসছি যে, কৃষ্ণনগরে মৃৎশিল্প শেখার কোনও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র নেই ৷ তাই অবশ্যই একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র তৈরি হওয়া দরকার ৷ যাতে নতুন প্রজন্মের ছেলে-মেয়েরা শিখতে পারে ৷ "
কিন্তু কৃষ্ণনগর থেকে কলকাতার দূরত্ব মাত্র 100 কিলোমিটার ৷ কলকাতায় আর্ট কলেজ রয়েছে ৷ তা সত্ত্বেও কৃষ্ণনগরে প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের দাবি তুলছেন শিল্পীরা ৷ কিন্তু কেন ? উত্তরে সুবীরবাবু জানান, "কৃষ্ণনগরের নিজস্ব ঘরানা আছে ৷ বিশেষত্ব হল রিয়ালিস্টিক হিউম্যান ফিগার ৷ তাই এখানে যদি আর্ট কলেজ হয় , এবং যদি এখানকার শিল্পীদের দিয়েই শেখানো হয় তাহলে সেটা ভালো হবে ৷ নইলে এই শিল্পকে বাঁচানো যাবে না ৷ "
এই শিল্পকে বাঁচাতে এর আগেও বহুবার মৃৎশিল্পীদের তরফে সরকারের কাছে প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের দাবি জানানো হয়েছিল ৷ পাঁচবছর আগে সরকারি উদ্যোগে ঘূর্ণিতে একটি সংগ্রহশালাও তৈরি হয়েছিল ৷ উদ্বোধন করেছিলেন তৎকালীন পর্যটনমন্ত্রী ব্রাত্য বসু ৷ কিন্তু উদ্বোধন হলেও এখনও চালু হয়নি সেটি ৷
মৃৎশিল্পীদের প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের দাবি প্রসঙ্গে অতিরিক্ত জেলা শাসক তেনজি নি ভার্মা ভুটিয়া বলেন, "এই মুহূর্তে এরকম কোনও প্রস্তাব আমার কাছে আসেনি ৷ তবে নিশ্চয়ই এটা একটা ভালো প্রস্তাব ৷ ঘূর্ণির যারা মৃৎশিল্পীরা রয়েছেন আমরা সব সময় তাদের পাশে আছি ৷ ওখানে ইতিমধ্যেই 'মৃত্তিকা', একটি সংগ্রহশালা তৈরি করেছি ৷ সেটাকেও আমরা এই কাজে লাগাতে পারি ৷ এ রকম প্রস্তাব এলে আমরা সরকারের সঙ্গে কথা বলতে পারি ৷ "