কৃষ্ণনগর, 1 জুন : রমজান মাসের আর পাঁচটা দিনের মতো আজও রোজ়া রেখেছিলেন ওসমান । কিন্তু, একজন শিশুর প্রাণ বাঁচাতে রোজ়া ভাঙলেন তিনি । নিজের রক্তদান করলেন থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত এক নাবালিকাকে । রক্ত দেওয়ার পর হাসিমুখে বললেন, "রোজ়া ভেঙেছি একজনের প্রাণ বাঁচাতে । আমার রক্তে যদি কারও জীবন রক্ষা পায় তাহলে তো ভালোই । ওকে রক্ত দিতে পেরেছি । ও এখন ভালো আছে, আমি এতেই খুশি ।"
থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত ওই নাবালিকার বাড়ি ঘূর্ণীর পানিনালায় । এখন সে কৃষ্ণনগর সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন । ডাক্তাররা বলেছেন, রক্ত লাগবে । নাহলে প্রাণ সংশয় হতে পারে । একথা শোনার পর থেকে আর বসে থাকেননি নাবালিকার মা । রক্ত খুঁজছেন তিনি । অনেকের কাছে আবেদন-নিবেদন করেছেন । বিভিন্ন ব্লাড ব্যাঙ্কে খোঁজ নিয়েছেন । সেখানেও রক্ত পাননি । কেউ কেউ রক্তদানের প্রতিশ্রুতি দিয়েও আসেনি । এই পরিস্থিতিতে কী করবেন, ভেবে পাচ্ছিলেন না তিনি । ঠিক সেসময় ত্রাতার ভূমিকায় অবতীর্ণ হন ওসমান । ওই মহিলা জানিয়েছেন, প্রতিবেশীদের কাছে রক্তের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছিলেন । প্রতিবেশীদের মাধ্যমেই ওসমানের সাথে যোগাযোগ হয় । ওসমান রক্ত দিতে রাজি হয় ।

স্বাভাবিকভাবেই ওসমানের প্রতি কৃতজ্ঞ নাবালিকার মা । তিনি বলেন, "ডোনার না পেয়ে খুব অসহায় হয়ে পড়েছিলাম । এখন স্বস্তি । ওসমানকে যে কী বলে ধন্যবাদ দেব বুঝতে পারছি না ।" তবে ওসমান নির্লিপ্ত । নাবালিকাকে রক্ত দেওয়ার বিষয়টিকে খুব বড় করে দেখতে নারাজ তিনি । রক্ত দিয়ে শুধু বললেন, "রক্তের জন্য যেন কারও প্রাণ না যায় সেটা প্লিজ় দেখবেন । আমি যেভাবে একজনের পাশে দাঁড়ালাম আপনারাও অন্যকে রক্ত দিয়ে সাহায্য করুন । তাহলেই হবে ।"