কল্যাণী, 14 জানুয়ারি : বিরল অস্ত্রোপচারে প্রায় 12 কেজি ওজনের টিউমার বাদ দেওয়া হল ৷ এখন রোগীর অবস্থা স্থিতিশীল না হলেও, আশা করা যায় তিনি দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবেন, জানালেন কল্যাণীর জেএনএম হাসপাতালের চিকিৎসক ডাঃ অভিজিৎ হালদার ও তাঁর দল (Kalyanai JNM Hospital doctors successfully operate huge tumour in ovary) ৷
রানাঘাট থানার বাসিন্দা রোগীর বয়স 19 ৷ তিনি বুধবার, 12 জানুয়ারি রানাঘাট মহকুমা হাসপাতালে সন্তান প্রসব করেন ৷ কিন্তু তার পরেও তাঁর পেটের আকৃতি 36 সপ্তাহের গর্ভবতীর মতোই ছিল, যা অস্বাভাবিক ৷ এতেই সন্দেহ হয় চিকিৎসকদের ৷ সদ্য মা হওয়া তরুণীকে নিয়ে আসা হয় নদিয়ার কল্যাণীতে জেএনএম হাসপাতালে ৷
সেখানে স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞরা তাঁকে পরীক্ষা করেন ৷ এর মধ্যে সদ্য মা হওয়া তরুণী পেটে যন্ত্রণা অনুভব করেন ৷ তখন ফের নানাবিধ পরীক্ষা করা হয় ৷ জানা যায়, বাঁদিকের ডিম্বাশয়ে একটি টিউমার আছে এবং ডানদিকের ডিম্বাশয়টিতে ডারময়েড সিস্ট রয়েছে ৷ জরুরি ভিত্তিতে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করে নেন চিকিৎসকেরা ৷ বৃহস্পতিবার, 13 জানুয়ারি ডাঃ অভিজিৎ হালদার-সহ ছয় সদস্যের একটি দল অস্ত্রোপচার করেন ৷
আরও পড়ুন : Rare Surgery in SSKM : এসএসকেএমে বিরল অস্ত্রোপচার, বালকের ফুসফুস থেকে বেরোল বাঁশি
বিরল এবং সঙ্কটাপন্ন রোগীর এই অস্ত্রোপচার প্রসঙ্গে চিকিৎসক অভিজিৎ হালদার বলেন, "শেষ আল্ট্রাসোনোগ্রাফিতে ধরা পড়ে 19 বছর বয়সী রোগীর বাঁদিকের ডিম্বাশয়ে 30 সেন্টিমিটার সাইজের টিউমার রয়েছে ৷ সৌভাগ্যবশত, তাঁর স্বাভাবিক ভাবেই সন্তান প্রসব হয়েছে ৷" তিনি জানান সন্তানের জন্ম দেওয়ার পরেও পেট 36 সপ্তাহের সন্তান ধারণের অবস্থার মতো ফুলে রয়েছে, এটা সম্ভব নয় ৷
রোগী জেএনএম হাসপাতালের আউটডোর বিভাগে আসেন ৷ সেখানে দেখা যায়, পরীক্ষানিরীক্ষায় দু‘টো ডিম্বাশয়ের অবস্থাই খারাপ ৷ তাই অস্ত্রোপচার করে বাঁদিকের ডিম্বাশয় ও নালী, পুরোটাই বাদ দিতে হয়েছে ৷ কিন্তু ভবিষ্যতে যাতে তিনি ফের সন্তান ধারণ করতে পারেন, সেই কথা ভেবে ডানদিকের ডিম্বাশয়টিকে অক্ষত অবস্থায় রাখা হয়েছে ৷ যদিও ডান দিকে ডারময়েড সিস্ট রয়েছে ৷
চিকিৎসক এবং তাঁর দল বিস্মিত, দু‘টো ডিম্বাশয়ই সন্তান ধারণের অনুপযুক্ত ৷ অথচ রোগী কী 1.5 কেজি ওজনের একটি সন্তানের জন্ম দিয়েছেন এবং তা স্বাভাবিক ভাবে, বিনা অস্ত্রোপচারে ৷ অস্ত্রোপচারের পর বর্তমানে রোগীর অবস্থা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, "দেখা গেল যে, আমরা এমন চিকিৎসা করলাম যাতে ভবিষ্যতটা ভাল ভাবে কাটাতে পারেন তিনি ৷ আশা করি, অপারেশন সফল হয়েছে ৷" 24 ঘণ্টা না কাটলে রোগীর সম্বন্ধে কিছু বলা যাবে না, জানান চিকিৎসক ৷ কিন্তু তাঁরা মনে করছেন, একটা ডিম্বাশয় না থাকলেও রোগী বাকি জীবনটা সুস্থ ভাবে কাটাতে পারবে ৷ এরকম জটিল অপারেশন করে সাধারণ মানুষকে উপযুক্ত পরিষেবা দিতে পেরে আপ্লুত চিকিৎসকের দল ।