বহরমপুর, 3 সেপ্টেম্বর: মুর্শিদাবাদের (Murshidabad) বহরমপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারের 25 ফিট উঁচু পাঁচিলের বাইরে সুর্য ওঠা দেখেনি আট মাসের যমজ শিশু ভানু ও রবি । জন্ম থেকেই সাজাপ্রাপ্ত বাবা-মায়ের সঙ্গে সংশোধনাগারে বিনা অপরাধে সাজা কাটছে দুই একরত্তির । বহরমপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারেই কয়েক মিনিটের ব্যবধানে জন্ম দুই ভাইয়ের । এক মাসের প্যারোলে মুক্তি পেয়েছেন বাবা-মা (Babies Out From Jail) । আর তার ফলে বাবা-মায়ের সঙ্গে প্রথম সংশোধনাগারের বাইরের পৃথিবীকে দু চোখ ভরে দেখার সুযোগ পেল দুই ছোট্ট প্রাণ ৷
বুদ্ধদেব মেটে আর রুনা খাতুন ৷ দু'জনেই খুনের অপরাধে সাজা খাটছেন বহরমপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে । বুদ্ধদেবের বাড়ি বীরভুমের লাভপুরে । আর রুনা খাতুন মুর্শিদাবাদের জলঙ্গির বাসিন্দা । সংশোধনাগারের বন্দিদের নিয়ে রবি ঠাকুরের 'রক্তকরবী' মঞ্চস্থ করেছিলেন বহরমপুরের প্রখ্যাত নাট্যকার তথা চলচিত্র অভিনেতা প্রদীপ ভট্টাচার্য ওরফে বাবুদা । সেই রক্তকরবী নাটকেই পরিচয় বুধদেব মেটে ও রুনা খাতুনের । তারপর 'তোতাকাহিনী' তাদের আরও ঘনিষ্ট করেছিল ।
আরও পড়ুন: Viswabharati : বিশ্বভারতীর সামনে বিক্ষোভে নিষেধাজ্ঞা জারি কলকাতা হাইকোর্টের
রাজ্য ও রাজ্যের বাইরে বহুবার নাটকগুলি মঞ্চস্থ করে হাততালি কুড়িয়েছেন বুদ্ধ ও রুনা । বছর দেড়েক আগে দু'দশকের সাজাপ্রাপ্ত দুই বন্দির চার হাত এক করার ব্যবস্থা করে দেন তাঁদের বাবুদাই । সংশোধনাগারে এক সন্ধ্যায় মহা সমারোহে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন দুই বন্দি । তার সাক্ষী হন অনেকে ৷ সংবাদমাধ্যমে সে দিন দু'জনের ছবি ও বন্দি জীবনের প্রেমের কাহিনী ফলাও করে প্রকাশিত হয়েছিল ।
আরও পড়ুন: TMC leader Killed : চাঁচলে তৃণমূল নেতাকে কুপিয়ে খুন, গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নাকি পরকীয়া ?
আট মাস আগে যমজ সন্তানের জন্ম দেন রুনা । রবি ঠাকুরের 'রক্তকরবী' তাঁদের নতুন করে সংসার জীবনে ফিরিয়েছে । তাই যমজ সন্তানের নামকরণ করা হয় বিশ্বকবির নাম ও ছদ্মনামে ৷ দুই শিশুর নাম রাখা হয় রবি ও ভানু । দু'দশক সাজা কাটলেও বন্দিদশা এখনও কাটেনি । এক মাসের প্যারোলে মুক্তি পেয়েছেন ওই দম্পতি । বাবা মায়ের কোলে চড়ে প্রথম সংশোধনাগারের বাইরে উদয় হল ভানু ও রবির । এক মাসের জন্য দুই সন্তানকে নিয়ে বাবা-মা পাড়ি দিলেন লাভপুরের দিকে । এক মাস পর আবার ভানু ও রবির জায়গা হবে বহরমপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগার । বিনাদোষে সাজা খাটতে হবে বন্দিদের কোলে কোলে । বাচ্চা দুটোর মুখের দিকে তাকিয়ে যাতে তাঁদের দ্রুত মুক্তির ব্যবস্থা করা হয়, সেই আবেদন জানিয়েছেন বুদ্ধ ও রুনা ৷
আরও পড়ুন, Kaliachak Murder Case : কালিয়াচক হত্যাকাণ্ডে আদালতে 273 পাতার চার্জশিট পেশ পুলিশের