ফরাক্কা, 16 মার্চ: উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দিতে বাড়ি থেকে পালিয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হলেন গৃহবধূ ৷ ঘটনাটি ঘটেছে মুর্শিদাবাদে ফরাক্কায় ৷ উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দিতে চান, অথচ অন্তরায় শ্বশুরবাড়ির লোকজন ৷ কোনও উপায় না-দেখে তাই পুলিশের কাছে পৌঁছে গেলেন এক গৃহবধূ ৷ ওই উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থীকে পরীক্ষা দিতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্বামী-সহ শ্বশুর বাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে (Higher Secondary Examinee house wife reaches HS examination centre in Farakka) ৷
জানা গিয়েছে, গৃহবধূকে বাড়ির মূল গেটে তালা দিয়ে আটকে রাখা হয়েছিল ৷ এমনকী তাঁর অ্যাডমিট কার্ড সমেত পরীক্ষার যাবতীয় সরঞ্জাম লুকিয়ে রাখা হয়েছিল বলে অভিযোগ ৷ শ্বশুরবাড়ি থেকে কোনওরকমে পালিয়ে এসে সোজা থানার দ্বারস্থ হন ওই পরীক্ষার্থী ৷ মুর্শিদাবাদের ফরাক্কা থানার অন্তর্গত বিন্দুগ্রামের ওই উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থী গৃহবধূর নাম সুলতানা খাতুন ৷ পুলিশই তাঁর ইংরেজি পরীক্ষায় বসার বন্দোবস্ত করে ৷ সুলতানা খাতুন বলেন, "আমি পড়তে ভালোবাসি। উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দিতে চাই । স্বামী আটকে রেখেছিল ৷ পুলিশকে বলায় আমার পরীক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা করে দেন তাঁরা ৷"
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর কুড়ির সুলতানা খাতুনের বিয়ে হয় বিন্দুগ্রামের বাসিন্দা বান্টি শেখের সঙ্গে ৷ তাঁর পরীক্ষাকেন্দ্র নিউ ফরাক্কা উচ্চ বিদ্যালয়ে ৷ প্রসঙ্গত, 2023 সালের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা আরম্ভ হয়েছে 14 মার্চ থেকে ৷ প্রথমদিন তিনি পরীক্ষা দিতে পেরেছিলেন ৷ কিন্তু তারপরই তাঁর স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির অন্য সদস্যরা এর বিরোধিতা করে ৷ সুলতানার পরীক্ষায় দেওয়া নিয়ে আপত্তি জানায় পরিবার ৷ ফরাক্কা থানার আইসি জানিয়েছেন, অভিযোগের ভিত্তিতে বাড়িতে গিয়ে বাড়ির পাশেই জঙ্গল থেকে ব্যাগটা খুঁজে পায়। ওই ব্যাগেই অ্যাডমিট কার্ড ছিল। স্কুলে গিয়ে অনুরোধ করায় পরীক্ষার ব্যবস্থা করে দেন শিক্ষকরা।
সুলতানা খাতুনের মনে মনে জেদ ছিল যতই বাধা আসুক না কেন, তিনি পরীক্ষা দেবেন ৷ এই নিয়ে শ্বশুরবাড়ির লোকজনের সঙ্গে তাঁর বচসা বাধে ৷ তাঁর অ্যাডমিট কার্ড, বই লুকিয়ে রাখে সুলতানার শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা ৷ এমনকী পরীক্ষা দিতে যাওয়া রুখতে বুধবার সন্ধে থেকে তাঁকে তালা দিয়ে আটকে রাখা হয় । বৃহস্পতিবার সকালে তিনি কোনওভাবে বাড়ির পাঁচিল টপকে বেরিয়ে সোজা ফরাক্কা থানায় পৌঁছন ৷ পুলিশের কাছে সব কথা খুলে বলেন ৷ এরপর পুলিশের উদ্যোগে পরীক্ষায় বসলেন উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থী গৃহবধূ ৷
আরও পড়ুন: হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের নিষ্ক্রিয়তায় এক ঘণ্টা দেরিতে পরীক্ষায় বসলেন চিকিৎসাধীন পরীক্ষার্থী