ETV Bharat / state

চিন-ভারত টানাপোড়েনে সংকটে বেলডাঙার মোবাইল যন্ত্রাংশের কারবার - চিন-ভারত টানাপোড়েনে সংকটে বেলডাঙা

একাধিক হাত ঘুরে গেলেও বেলডাঙা থেকে চিন, চিন থেকে বেলডাঙা, কতকটা এমন প্রক্রিয়াতেই চলত বেলডাঙার পুরোনো মোবাইল যন্ত্রাংশের কারবার ৷ ভারত-চিন যুদ্ধের আবহাওয়ায় যে ব্যবসা আপাতত স্তব্ধ ৷ সংকটে জেলার কয়েক হাজার ব্যবসায়ী ৷

crisis in second hand mobile parts business
মোবাইল যন্ত্রাংশের কারবার
author img

By

Published : Jun 29, 2020, 5:34 PM IST

বেলডাঙা, 29 জুন : প্রথমে লকডাউন, পরে চিনের সঙ্গে ভারতের তিক্ত সম্পর্ক ৷ দুইয়ে মিলে সংকটে বেলডাঙার পুরোনো মোবাইল যন্ত্রাংশের কারবারিরা ৷ ছাঁটাই মালের হকারদের থেকে বিকল মোবাইল কিনে তার যন্ত্রাংশগুলি বেচাই এখানকার কুটির শিল্প ৷ যার বড় অংশ রপ্তানি হত চিনে । চিনা কোম্পানিগুলি সেই যন্ত্রাংশ কিনে ফের তা ফের ব্যবহারযোগ্য করে তুলত ৷ তৈরি হত নতুন হ্যান্ডসেট । কিন্তু, এই ব্যবসা আপাতত ঝিমোচ্ছে ৷ ভবিষ্যতের চিন্তায় জেরবার হকার থেকে শুরু করে যন্ত্রাংশের পাইকারি ব্যবসায়ীরা ৷

বেলডাঙা তথা মুর্শিদাবাদ জেলায় হকার, শ্রমিক, ব্যবসায়ী মিলিয়ে কয়েক হাজার মানুষ এই পেশার সঙ্গে জড়িত । 15 টাকায় সাধারণ মোবাইল সেট কেনেন হকাররা । অ্যান্ড্রয়েড ফোন হলে দাম 400 টাকা পর্যন্ত ওঠে । পাইকারি ব্যবসায়ীদের গুদামে বেশ কয়েকজন কর্মী কাজ করেন ৷ যাঁদের কাজ হল, হকারদের আনা পুরোনো ফোন খুলে টিন, দস্তা, তামার মতো ধাতুগুলিকে আলাদা করা ৷ অন্যদিকে, ফোনের স্পিকার, ক্যামেরা, ডিসপ্লে বোর্ড, সার্কিট বোর্ডগুলিকেও আলাদা করা হয় । টিন, তামা, দস্তা বিক্রি হয় দেশের বাজারে । বাকি যন্ত্রাংশ জেলা ছাড়িয়ে, দেশের সীমা ডিঙিয়ে পৌঁছে যায় চিনে । সে দেশের মোবাইল কোম্পানিগুলিও অপেক্ষা করে থাকে ভারত থেকে আমদানিকৃত পুরোনো মোবাইলের যন্ত্রাংশের জন্যে । গত কয়েক বছরে বেলডাঙা ভারতে এই ব্যবসার চেনা ঠিকানা হয়ে উঠেছে ।

crisis in second hand mobile parts business
চলছে মোবাইল থেকে যন্ত্রাংশ আলাদা করার কাজ ৷

পুরোনো ফোনের যন্ত্রাংশের ব্যবসায়ী মোহাম্মদ ফুরকান আলি জানালেন, সাধারণ ফোনের সার্কিট বোর্ড 15 টাকায় বিক্রি হয় । কেনা দাম উঠে আসে তাতে । অন্যদিকে, ফোনের ডিসপ্লে বোর্ড, স্পিকার, ক্যামেরা বিক্রি থেকে লাভ হয় । সাধারণ মানের ফোনের ডিসপ্লে বিক্রি হয় 80 থেকে 90 টাকায় । ক্যামেরা আর স্পিকারের প্রতিটির দাম এক টাকা । সেখানে অ্যান্ড্রয়ডের সার্কিট বিক্রি হয় 200-400 টাকায় । ডিসপ্লে বোর্ড বিক্রি হয় একই দামে । অ্যান্ড্রয়ডের ক্যামেরা ও স্পিকারের দামও বেশি । ব্যবসায়ীরা জানান, ধাতব পাতগুলি যায় দিল্লিতে ৷ কিন্তু ডিসপ্লে, ক্যামেরা, স্পিকার চলে যায় চিনে । অনেক ক্ষেত্রে চিনা কোম্পানির প্রতিনিধিরা বেলডাঙার বাজারে এসে নিজেরাই মাল কিনে নিয়ে যেতেন । অধিকাংশ সময় টাকা পাঠিয়ে রপ্তানির নির্দেশ দিত চিনারা । সমস্তটাই এখন অতীত ৷ লকডাউনের পর গোদের উপর বিষফোঁড়া হয়েছে চিন-ভারত যুদ্ধের আবহাওয়া ।

এক ব্যবসায়ী ইকবাল হোসেন বলেন, "চিনের সঙ্গে সম্পর্কের তিক্ততায় প্রভাব পড়েছে আমাদের ব্যবসায় । সম্পর্ক স্বাভাবিক না হলে ক্ষতি তো হবেই ৷ এমনকী বিকল্প আয়ের সন্ধান করতে হবে । বন্ধ হয়ে গেছে রপ্তানি ৷ এখন যা অবস্থা, তাতে চিনের কোম্পানিগুলোর প্রতিনিধিদের বেলডাঙায় আসার কোনও সম্ভাবনাই নেই । ভবিষ্যৎ কী জানি না !"

তবে, দুশ্চিন্তার মধ্যেও আশায় বুক বাঁধছে বেলডাঙা ৷ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার দিকে তাকিয়ে ব্যবসায়ীরা ।

বেলডাঙা, 29 জুন : প্রথমে লকডাউন, পরে চিনের সঙ্গে ভারতের তিক্ত সম্পর্ক ৷ দুইয়ে মিলে সংকটে বেলডাঙার পুরোনো মোবাইল যন্ত্রাংশের কারবারিরা ৷ ছাঁটাই মালের হকারদের থেকে বিকল মোবাইল কিনে তার যন্ত্রাংশগুলি বেচাই এখানকার কুটির শিল্প ৷ যার বড় অংশ রপ্তানি হত চিনে । চিনা কোম্পানিগুলি সেই যন্ত্রাংশ কিনে ফের তা ফের ব্যবহারযোগ্য করে তুলত ৷ তৈরি হত নতুন হ্যান্ডসেট । কিন্তু, এই ব্যবসা আপাতত ঝিমোচ্ছে ৷ ভবিষ্যতের চিন্তায় জেরবার হকার থেকে শুরু করে যন্ত্রাংশের পাইকারি ব্যবসায়ীরা ৷

বেলডাঙা তথা মুর্শিদাবাদ জেলায় হকার, শ্রমিক, ব্যবসায়ী মিলিয়ে কয়েক হাজার মানুষ এই পেশার সঙ্গে জড়িত । 15 টাকায় সাধারণ মোবাইল সেট কেনেন হকাররা । অ্যান্ড্রয়েড ফোন হলে দাম 400 টাকা পর্যন্ত ওঠে । পাইকারি ব্যবসায়ীদের গুদামে বেশ কয়েকজন কর্মী কাজ করেন ৷ যাঁদের কাজ হল, হকারদের আনা পুরোনো ফোন খুলে টিন, দস্তা, তামার মতো ধাতুগুলিকে আলাদা করা ৷ অন্যদিকে, ফোনের স্পিকার, ক্যামেরা, ডিসপ্লে বোর্ড, সার্কিট বোর্ডগুলিকেও আলাদা করা হয় । টিন, তামা, দস্তা বিক্রি হয় দেশের বাজারে । বাকি যন্ত্রাংশ জেলা ছাড়িয়ে, দেশের সীমা ডিঙিয়ে পৌঁছে যায় চিনে । সে দেশের মোবাইল কোম্পানিগুলিও অপেক্ষা করে থাকে ভারত থেকে আমদানিকৃত পুরোনো মোবাইলের যন্ত্রাংশের জন্যে । গত কয়েক বছরে বেলডাঙা ভারতে এই ব্যবসার চেনা ঠিকানা হয়ে উঠেছে ।

crisis in second hand mobile parts business
চলছে মোবাইল থেকে যন্ত্রাংশ আলাদা করার কাজ ৷

পুরোনো ফোনের যন্ত্রাংশের ব্যবসায়ী মোহাম্মদ ফুরকান আলি জানালেন, সাধারণ ফোনের সার্কিট বোর্ড 15 টাকায় বিক্রি হয় । কেনা দাম উঠে আসে তাতে । অন্যদিকে, ফোনের ডিসপ্লে বোর্ড, স্পিকার, ক্যামেরা বিক্রি থেকে লাভ হয় । সাধারণ মানের ফোনের ডিসপ্লে বিক্রি হয় 80 থেকে 90 টাকায় । ক্যামেরা আর স্পিকারের প্রতিটির দাম এক টাকা । সেখানে অ্যান্ড্রয়ডের সার্কিট বিক্রি হয় 200-400 টাকায় । ডিসপ্লে বোর্ড বিক্রি হয় একই দামে । অ্যান্ড্রয়ডের ক্যামেরা ও স্পিকারের দামও বেশি । ব্যবসায়ীরা জানান, ধাতব পাতগুলি যায় দিল্লিতে ৷ কিন্তু ডিসপ্লে, ক্যামেরা, স্পিকার চলে যায় চিনে । অনেক ক্ষেত্রে চিনা কোম্পানির প্রতিনিধিরা বেলডাঙার বাজারে এসে নিজেরাই মাল কিনে নিয়ে যেতেন । অধিকাংশ সময় টাকা পাঠিয়ে রপ্তানির নির্দেশ দিত চিনারা । সমস্তটাই এখন অতীত ৷ লকডাউনের পর গোদের উপর বিষফোঁড়া হয়েছে চিন-ভারত যুদ্ধের আবহাওয়া ।

এক ব্যবসায়ী ইকবাল হোসেন বলেন, "চিনের সঙ্গে সম্পর্কের তিক্ততায় প্রভাব পড়েছে আমাদের ব্যবসায় । সম্পর্ক স্বাভাবিক না হলে ক্ষতি তো হবেই ৷ এমনকী বিকল্প আয়ের সন্ধান করতে হবে । বন্ধ হয়ে গেছে রপ্তানি ৷ এখন যা অবস্থা, তাতে চিনের কোম্পানিগুলোর প্রতিনিধিদের বেলডাঙায় আসার কোনও সম্ভাবনাই নেই । ভবিষ্যৎ কী জানি না !"

তবে, দুশ্চিন্তার মধ্যেও আশায় বুক বাঁধছে বেলডাঙা ৷ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার দিকে তাকিয়ে ব্যবসায়ীরা ।

ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.