মালদা, 11 মার্চ : ইতিহাসপ্রসিদ্ধ মালদার পর্যটন সার্কিটে ইংরেজবাজারের পাতালচণ্ডী মন্দিরকে অন্তর্ভুক্ত করতে জোর তৎপরতা শুরু হয়েছে প্রশাসনিক মহলে ৷ এর আগে এই মন্দিরে যাওয়ার রাস্তা পাকা করার উদ্যোগ নিয়েছিল প্রশাসন ৷ সঙ্গে করা হয়েছিল বিদ্যুতের ব্যবস্থাও ৷ প্রশাসনের সঙ্গে পাতালচণ্ডী মন্দিরকে পর্যটন মানচিত্রে ঠাঁই দিতে উদ্যোগী হয়েছেন এলাকার বিধায়কও ৷ প্রশাসনের পক্ষ থেকে ফের এই মন্দিরকে কেন্দ্র করে নতুন প্রকল্পে হাত পড়ল ৷ এবার 28 লাখ টাকায় মন্দির সৌন্দর্যায়নের কাজে হাত দিল প্রশাসন ৷ আজ সেই কাজের উদ্বোধন করেন ইংরেজবাজার পৌরসভার পৌরপ্রধান নীহাররঞ্জন ঘোষ ও BDO সৌগত চৌধুরি ৷ উপস্থিত ছিলেন ইংরেজবাজার পঞ্চায়েত সমিতির সভানেত্রী লিপিকা বর্মণ ঘোষসহ আরও অনেকে ৷
পাতালচণ্ডী মন্দিরটি বাংলার প্রাচীন রাজধানী গৌড়ের কাছে ৷ মালদা শহর থেকে দূরত্ব প্রায় 8 কিলোমিটার ৷ রাজা বল্লাল সেন যখন গৌড়ের অধিপতি ছিলেন, তখন এই মন্দির নির্মিত হয় বলে জানিয়েছেন ইতিহাসবিদরা ৷ সেই সময় ডাকাতদের হাতেই মন্দির তৈরি হয় ৷ সেই সময় মন্দিরের পাশ দিয়ে বয়ে যেত পাগলা নদী ৷ লোকমুখে প্রচলিত, নৌকা মন্দিরের ঘাটে বেঁধে ডাকাত দল পাতালচণ্ডীকে পুজো করে ডাকাতি করতে বের হত ৷ বর্তমানে নদী অবশ্য বেশ খানিকটা দূরে সরে গেছে ৷ তবে এখনও মন্দিরের পাশে রয়েছে একটি বড় ঝিল ৷ এই মন্দির ঘিরেই নতুন পর্যটনকেন্দ্র তৈরি করার চেষ্টা চালাচ্ছে জেলা প্রশাসন ৷
আজ মন্দির সৌন্দর্যায়নের কাজের উদ্বোধন করেন ইংরেজবাজার পৌরসভার পৌরপ্রধান নীহাররঞ্জন ঘোষ ৷ নীহারবাবু বলেন, " দীর্ঘদিন ধরেই স্থানীয় বাসিন্দা ও ভক্তদের দাবি, মন্দিরে যাতায়াতের জন্য পাকা রাস্তা ও আলোর ব্যবস্থা করে দিতে হবে ৷ সেই কাজ আমরা ইতিমধ্যেই করে দিয়েছি ৷ খানিকটা রাস্তার কাজ বাকি থাকলেও তা দ্রুত শেষ হয়ে যাবে ৷ এবার আমরা শুরু করেছি দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ ৷ এই মন্দিরের সৌন্দর্যায়নের জন্য প্রায় 28 লাখ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল ৷ আজ থেকে সেই কাজ শুরু হচ্ছে ৷ মন্দির ঘিরে পেপার ব্লক বসানো হবে ৷ ভক্তদের জন্য শৌচাগার ও জলের ব্যবস্থা করা হবে ৷ ইতিহাস বলে, এই পাতালচণ্ডী মায়ের কামধেনু মন্দির রয়েছে ৷ গৌড় যখন বাংলার রাজধানী ছিল, তখন থেকেই এই মন্দিরের নাম আমরা জানতে পারি ৷ পরবর্তীকালে অনেক খোঁজাখুঁজির পর এই মন্দির পাওয়া যায় ৷ "
ইংরেজবাজারের BDO সৌগত চৌধুরি বলেন, " জেলার পর্যটন সার্কিটে পাতালচণ্ডী মন্দিরকে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য আমরা দীর্ঘদিন ধরেই চেষ্টা করছি ৷ তার জন্য মন্দির ঘিরে দফায় দফায় কাজ শুরু হয়েছে ৷ প্রথমে আমরা 718 মিটার রাস্তা তৈরি করতে পেরেছি ৷ তার জন্য BADP প্রকল্পে প্রায় 30 লাখ এবং বিধায়কের উন্নয়ন তহবিল থেকে প্রায় 5 লাখ টাকা খরচ হয়েছে ৷ এখনও প্রায় 500 মিটার রাস্তার কাজ বাকি রয়েছে ৷ টাকা এলেই সেই কাজে হাত দেওয়া হবে ৷ আজ মন্দিরের সৌন্দর্যায়নের জন্য প্রায় 28 লাখ টাকায় কাজ শুরু হল ৷ পরে আরও কিছু কাজ করা হবে ৷ যেভাবেই হোক, আমরা এই মন্দিরকে জেলার পর্যটন মানচিত্রে অন্তর্ভুক্ত করতে বদ্ধপরিকর ৷ "