মালদা, 25 জুলাই : লকডাউন কার্যকর করতে পথে নেমে আক্রান্ত হন এক সিভিক ভলান্টিয়ার ৷ এরপর পুলিশকে আরও কড়া ব্যবস্থা নিতে দেখা গেল মালদায় । লকডাউন অমান্যকারীদের লাঠিচার্জও করতে দেখা যায় পুুলিশকে । ইংরেজবাজার থানা এলাকাতেই গ্রেপ্তার হয়েছে 100 জনের বেশি । ধৃতদের বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন থানার IC ৷ তবে কয়েকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা বাদ দিলে জেলাজুড়ে লকডাউন মেনে চলার দৃশ্যই চোখে পড়েছে ।
লকডাউন ভঙ্গকারীদের লাঠিচার্জ করছে পুলিশ এই মুহূর্তে উত্তরের কোরোনা হাব হয়ে উঠেছে মালদা জেলা ৷ জেলায় সংক্রমিতের সংখ্যা 1900 ছুঁইছুঁই ৷ এখনও পর্যন্ত মোট সংক্রমণ 1898 ৷ মৃত্যুর সংখ্যাও বাড়ছে ৷ গত 24 ঘণ্টায় তিন সংক্রমিতের মৃত্যুর খবর মিলেছে ৷ মৃতদের মধ্যে রয়েছেন জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক রবিউল ইসলাম, বিশিষ্ট আইনজীবী আমজাদ আলি ৷ আমজাদ সাহেব বেশ কিছুদিন আগেই কোরোনা সংক্রমিত হয়ে পুরাতন মালদার COVID হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন ৷ মৃত্যুর পর রবিউল সাহেবের লালারসের নমুনায় কোরোনা সংক্রমণ ধরা পড়ে ৷ আজ জেলায় সংক্রমণের সংখ্যা কিছুটা কমেছে বলে স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে খবর ৷ নতুন সংক্রমণের সংখ্যা 22 ৷ তবে সংক্রমণের সংখ্যা নিয়ে স্বস্তির কিছু নেই বলে জানাচ্ছে স্বাস্থ্য বিভাগের একাংশ ৷ লালারসের নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা বাড়লেই পজ়িটিভের সংখ্যা বেড়ে যাবে বলে জানাচ্ছে ওই মহল ৷ এদিকে সাধারণ মানুষের অভিযোগ, জেলায় কোরোনা সংক্রমণের গতিবিধি বুঝে লালারসের নমুনা সংগ্রহের মাত্রা কিছুটা কমিয়ে দেওয়া হয়েছে ৷ মালদা মেডিকেলে গিয়ে অনেকে নিজেদের লালারস পরীক্ষা করাতে চাইলেও নমুনা নেওয়া হচ্ছে না ৷ যদিও এই নিয়ে মেডিকেল কর্তৃপক্ষের কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি ৷
তবে জেলার কোরোনা পরিস্থিতি যে উদ্বেগজনক তার প্রমাণ মিলেছে আজকের লকডাউনে পুলিশি ভূমিকায় ৷ সকাল থেকেই মালদা শহরের রাস্তায় নেমে পড়েছে পুলিশ ৷ শহরেই কোরোনা সংক্রমিতের সংখ্যা প্রায় 450 ৷ তাই সংক্রমণে রাশ টানতে আজ লকডাউন নিয়ন্ত্রণে সকাল থেকেই কড়া হতে দেখা গেছে পুলিশকে ৷ লাঠি হাতে রাস্তায় দেখা গেছে একাধিক পুলিশ অফিসার, এমনকী ICকেও ৷ আজ কাউকেই রেয়াত করেননি পুলিশকর্মীরা ৷ এরই মধ্যে বালুচর এলাকায় অকারণে বেশ কয়েজনকে আড্ডা দিতে দেখা যায় ৷ তা দেখতে পেয়েই তাড়া করেন পুলিশ ও সিভিক পুলিশ কর্মীরা ৷ একজনকে ধরেও ফেলেন তাঁরা ৷ তখনই ওই ব্যক্তি ও তাঁর এক সঙ্গী এক সিভিক পুলিশের কলার ধরে মারধর করে ৷ এক পুলিশ অফিসারকেও নিগ্রহ করে তারা ৷ এরপরেই আরও কঠোরভাবে পরিস্থিতি সামলাতে দেখা যায় পুলিশকে । শুরু হয় বেধড়ক লাঠিচার্জ ৷ গোটা শহর ও শহরতলি এলাকায় লকডাউন ভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে পুলিশি অভিযান শুরু হয় ৷ যেসব জায়গায় হাতে গোনা কিছু দোকান খোলা ছিল, সেগুলি বন্ধ করে দেওয়া হয় ৷ চলে লাঠিচার্জ ৷ গ্রেপ্তার করা হয় একাধিকজনকে ৷
মালদায় লকডাউন কার্যকর করতে কড়া হাতে ব্যবস্থা নিল পুলিশ ইংরেজবাজার থানার IC মদনমোহন রায় বলেন, " মুখ্যমন্ত্রী কোরোনা নিয়ন্ত্রণ করতে প্রতিনিয়ত প্রচার করছেন ৷ রাজ্য সরকারের তরফে এই নিয়ে প্রচার করা হচ্ছে । লকডাউন কার্যকর করতে সবাইকে অনুরোধ করা হচ্ছে ৷ পুলিশ প্রশাসন সরকারেরই অঙ্গ ৷ আমরাও সবসময় মানুষকে সচেতন করে যাচ্ছি ৷ কিন্তু সবাই সমান নয় ৷ এর মধ্যেই অনেকে লকডাউন ভাঙছে ৷ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে তাদের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি ৷ আজ বালুচর এলাকায় এক ব্যক্তি আমাদের কাজে বাধা দেয় ৷ সেখানে কয়েক জমায়েত করে দাঁড়িয়েছিল ৷ পুলিশ বোঝাতে গেলে তাদের মধ্যে একজন পুলিশকর্মীদের উপর চড়াও হয় ৷ এতে দুই পুলিশকর্মী সামান্য জখম হয়েছেন ৷ ওই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৷ এখনও পর্যন্ত পুলিশি অভিযানে শতাধিক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৷ আমাদের অভিযান চলতে থাকবে ৷"