কলকাতা 7 ডিসেম্বর : ঠিক কতজনের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে একাধিকবার টাকা ঢুকেছে কেন পরিষ্কার করে বলছে না রাজ্য! মামলাকারী আবদুল মান্নানের আইনজীবীর অভিযোগ, মালদা জেলায় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের টাকা দেওয়া নিয়ে দুর্নীতি হয়েছে, তারপরও তা বারবার আড়াল করার চেষ্টা করে চলেছে রাজ্য (plaintiff's Lawyer criticized state government in the malda flood corruption case) । মামলা হওয়ার পর রাজ্য স্বীকার করে নিয়েছিল যে প্রথম দফায় 315 জনের অ্যাকাউন্টে ভুল করে টাকা চলে গিয়েছিল । তার একটি তালিকাও দেওয়া হয়েছিল আদালতে ৷ যার জেরে ফেরত আসে প্রায় 10 লক্ষ 40 হাজার টাকা ।
পরে ফের প্রায় 10 লাখ 50 হাজার টাকা ফেরত দেন আরও 15 জন । মামলাকারী আইনজীবী প্রশ্ন তোলেন রাজ্য কেন প্রকৃত সংখ্যা আদালতের সামনে প্রকাশ করছে না । মঙ্গলবার মামলাকারীকে প্রকৃত অর্থ প্রাপকদের একটি তালিকা স্থানীয় ব্লক উন্নয়ন আধিকারিককে দেওয়ার নির্দেশ দেন প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব ও বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চ । আগামী 17 ফেব্রুয়ারি সেই তালিকা খতিয়ে দেখে হাইকোর্টে রিপোর্ট দেবে রাজ্য। উল্লেখ্য মামলাকারী প্রায় 1200 জনের একটি তালিকা এই মামলায় হলফনামা হিসেবে আদালতে দিয়েছিল ।
কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলাটি দায়ের হওয়ার পর, হরিশ্চন্দ্রপুর থানার এসপি হাইকোর্টের নির্দেশে এই মামলার আগের শুনানিতেই একটি হলফনামা দিয়ে জানিয়েছিলেন, স্থানীয় ব্লক উন্নয়ন আধিকারিকের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ইতিমধ্যেই ছজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ । পাশাপাশি যে 315 জন ভুল করে টাকা নিয়েছিলেন তাঁরা প্রত্যেকেই সেই টাকা ফেরত দিয়েছেন । প্রায় 10 লক্ষ 40 হাজার টাকা রাজস্ব দপ্তরের অ্যাকাউন্টে ফেরত দেওয়া হয়েছে । আজ আরেকটি হলফনামায় তিনি জানিয়েছেন 10 লক্ষ 50 হাজার টাকা ফেরত দিয়েছেন আরও 15 জন ।
পাশাপাশি গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে 7 জনের নামে । আজ মামলার শুনানিতে মামলাকারীর আইনজীবী শ্রীজীব চক্রবর্তী ও অনিন্দ্য ঘোষ বলেন," যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছিল তাদের বেশিরভাগই এখন জামিনে মুক্ত । এই ব্যাপারে রাজ্য দীর্ঘদিন ধরে কিছু করেনি । বিডিও বলেছেন তিনি অত্যন্ত চাপের মধ্যে ছিলেন । এই ঘটনার যথাযথ তদন্ত হওয়া দরকার। "
আরও পড়ুন : কলকাতায় কোভিড নেই ! পৌরভোট সংক্রান্ত মামলায় আদালতে কটাক্ষ বিজেপির আইনজীবীর
যদিও রাজ্যের তরফ এজি সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় বলেন, "পুলিশ কিছু করছে না, এই অভিযোগ করে জনস্বার্থ মামলা হয়েছিল । টাকা দেওয়া হয়েছিল পঞ্চায়েতের দেওয়া সার্টিফিকেটের ভিত্তিতেই । প্রধান সার্টিফিকেট দিয়েছিলেন । পুলিশ অভিযোগের ভিত্তিতে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে । " উল্লেখ্য মালদা জেলায় 2017 সালের অগস্ট মাসে বন্যায় ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয় বড়ই গ্রাম পঞ্চায়েত । ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা করতে একটি প্রকল্প বিশেষ প্রকল্প এনেছিল রাজ্য সরকার । প্রকল্প অনুযায়ী বন্যায় যাঁদের ঘর -বাড়ি একেবারে নষ্ট হয়ে গিয়েছে তাঁদের 70000 আর যাঁদের অল্প ক্ষতি হয়েছে তাঁদের 3300 টাকা করে দেওয়ার কথা জানানো হয় । কিন্তু পরে দেখা যায় এই টাকা খুব কমই প্রকৃত প্রাপকদের হাতে গেছে । বেশি টাকাই চলে গিয়েছে স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতের হাতে । পঞ্চায়েত প্রধান থেকে শুরু করে এলাকার নেতা-নেত্রীরা নিজেদের পছন্দমতো ব্যক্তিদের নাম তুলে দিয়েছেন তালিকায় । এক এক জনের নামে একাধিক বার টাকা ঢুকেছে । তার বিরুদ্ধেই কলকাতা হাইকোর্টে দায়ের হয়েছিল এই জনস্বার্থ মামলা ।