ETV Bharat / state

শিক্ষাকর্মীদের হাতে ঘেরাও গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার

author img

By

Published : Feb 7, 2020, 12:45 AM IST

ROPA 2019 অনুযায়ী বেতন সহ 10 দফা দাবিতে আন্দোলন করছেন গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মীরা ৷ আজ রেজিস্ট্রার বিপ্লব গিরি সেখানে পৌঁছতেই তাকে ঘেরাও করেন আন্দোলনকারীরা ৷ দাবি না মানলে রেজিস্ট্রারের পদত্যাগের দাবি তুলেছেন আন্দোলনকারী শিক্ষাকর্মীরা ৷

University of Gaur Banga
বিক্ষোভে সামিল শিক্ষাকর্মীরা

মালদা, 6 ফেব্রুয়ারি : গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার বিপ্লব গিরিকে ঘেরাও করলেন শিক্ষাকর্মীরা ৷ আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, তাদের দাবি পূরণ না করতে পারলে পদত্যাগ করতে হবে রেজিস্ট্রারকে ৷ শীতের রাতে এখনও পর্যন্ত তাঁকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেন গেটের বাইরে, খোলা আকাশের নীচে আটক করে রেখেছে আন্দোলনকারীরা ৷ বিপ্লববাবু জানিয়েছেন, শিক্ষাকর্মীদের দাবি চিন্তা করে তাঁদের প্রত্যেকের জন্য প্রতি মাসে ৪২০০ টাকা অন্তর্বর্তী ভাতা ঘোষণা করা হয়েছে ৷ যতদিন না রাজ্য সরকার অস্থায়ী কর্মীদের জন্য ROPA 2019 অনুযায়ী বেতন চালু করে, ততদিন প্রত্যেককে এই ভাতা দেওয়া হবে ৷ কিন্তু সরকারি নির্দেশিকা ছাড়া অস্থায়ী শিক্ষাকর্মীদের ROPA 2019 অনুযায়ী বেতন দেওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে সম্ভব নয় ৷ এরই প্রতিবাদে গত চারদিন ধরে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন শিক্ষাকর্মীরা ৷ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কাজকর্ম কার্যত অচল হয়ে পড়েছে ৷ তাঁদের দ্রুত কাজে যোগ দেওয়ার আবেদন জানানো হয়েছে ৷

গত 24 জানুয়ারি কলকাতায় এগজিকিউটিভ কাউন্সিলের বৈঠকের পর আজ বিকেলে গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেন রেজিস্ট্রার বিপ্লব গিরি ৷ এদিকে নিজেদের 10 দফা দাবিতে গত চারদিন ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেন গেটের বাইরে অবস্থান বিক্ষোভ চালাচ্ছেন গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাকর্মীরা ৷ আজ সেখানে পৌঁছতেই ঘেরাও করা হয় বিপ্লববাবুকে ৷ কেন তাঁদের দাবি পূরণ করা হচ্ছে না তা নিয়ে তাঁকে প্রশ্ন করেন আন্দোলনকারীরা ৷ তবে এদিন বিপ্লববাবুর পদত্যাগের দাবিতেই বেশি সোচ্চার ছিলেন শিক্ষাকর্মীরা ৷ আন্দোলনকারীদের পক্ষে সারা বাংলা শিক্ষাবন্ধু সমিতি, গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক শম্পা মিত্র বলেন, “হয় আজ তিনি আমাদের সমস্যার সমাধান করবেন, অথবা পদত্যাগ করে ভিতরে যাবেন ৷ উনি আমাদের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন ৷ এর আগে EC-র একটি ভুয়ো রেজ্যুলেশন দেখিয়ে উনি আমাদের আন্দোলন তুলে দিয়েছিলেন ৷ তিনি নিজেই বলেছিলেন, আমাদের দাবি পূরণ না করতে পারলে আমরা যেন তাঁকে নিয়ে বসে পড়ি ৷ আজ আমরা তাঁর সেই নির্দেশই পালন করছি ৷ তাঁরা এখন বলছেন, রাজ্য সরকারের নির্দেশ ছাড়া আমাদের ROPA 2019 অনুযায়ী বেতন দেওয়া যাবে না ৷ কথার জাল বুনে আমাদের ভাঁওতা দেওয়ার চেষ্টা করছেন ৷ ইচ্ছে করলে তারা সব করতে পারেন ৷ আমারা সরকারি কর্মী নই ৷ আমাদের বেতন বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব তহবিল থেকে দেওয়া হয় ৷ এখানে সরকারের কোনও বিষয় নেই ৷ আমরা চাই, এই রেজিস্ট্রার পদত্যাগ করুন ৷ তাঁর জায়গায় যোগ্য কাউকে রেজিস্ট্রার করা হোক ৷”

বিপ্লববাবুর দাবি, “আমি কয়েকদিন আগেই মালদায় এসেছি ৷ এসে দেখি, এখানে আন্দোলন চলছে ৷ বিভিন্ন আধিকারিককে বিভিন্ন সময় ঘেরাও করা হচ্ছে ৷ অসুস্থতার জন্য আমি কয়েকদিন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে ঘর থেকেই কাজ করেছি ৷ শিক্ষাকর্মীরা প্রথমে তিন দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন ৷ পরে দাবির সংখ্যা বেড়ে 10 হয় ৷ এর মধ্যে EC-র অনুমতিক্রমে আমরা অনেক দাবিই মেটাতে পেরেছি ৷ কিন্তু 122 জনের স্থায়ীকরণ করা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয় বলে তা উচ্চশিক্ষা দপ্তরে পাঠিয়েছি ৷ উচ্চশিক্ষা দপ্তরে প্রত্যেক শিক্ষাকর্মীর নথিপত্রও পাঠানো হয়েছে ৷ শিক্ষাকর্মীদের আরও দাবি ছিল, গ্রুস সি ও ডি ভাগ করা ৷ তার কাজ চলছে ৷ ROPA 2019-এর এন্ট্রি লেভেল অনুযায়ী শিক্ষাকর্মীদের বেতন দিতে হবে ৷ কিন্তু গত 9 জানুয়ারি জারি করা সরকারি নির্দেশিকা অনুযায়ী, এই বেতনক্রম চালু করা যাবে শুধুমাত্র স্থায়ী কর্মীদের ক্ষেত্রে ৷ কিন্তু পরবর্তীতে অস্থায়ী কর্মীদেরও এর আওতায় আনা হবে বলে জানা গিয়েছে ৷ তাই আপাতত আমরা প্রত্যেক শিক্ষাকর্মীর জন্য মাসিক 4200 টাকা অন্তর্বর্তী ভাতা ঘোষণা করেছি ৷ যতদিন না তাঁরা ROPA 2019-এর এন্ট্রি লেভেল অনুযায়ী বেতন পাচ্ছেন, ততদিন তাঁদের এই ভাতা দেওয়া হবে ৷ তার নোটিসও আমরা দিয়েছি ৷ কিন্তু তা সত্বেও আজ আমাকে শীতের মধ্যে মেন গেটের সামনে বসিয়ে রাখা হয়েছে ৷”

ঘেরাও গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বিপ্লব গিরি

অন্যদিকে আজ বিকেলে আন্দোলনরত শিক্ষাকর্মীদের বিরুদ্ধে ডেপুটি রেজিস্ট্রার সাদেক আলিকে হেনস্থার অভিযোগ ওঠে । এই বিষয়ে তখনই উপাচার্যকে নালিশ জানান সাদেক সাহেব । তাঁর অভিযোগ পেয়েই এক শিক্ষাকর্মী কার্তিক রায়কে সাসপেন্ড করেন উপাচার্য স্বাগত সেন । সেই নির্দেশিকা ইতিমধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে পৌঁছেছে । গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অচলাবস্থা দূর করতে গতকাল রাতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও আন্দোলনকারী শিক্ষাকর্মীদের নিয়ে বিশেষ বৈঠক করেন জেলা তৃণমূল সভানেত্রী মৌসম নূর ৷ তবে সেই বৈঠকে কোনও সমাধান সূত্র পাওয়া যায়নি ৷ গতকাল রাতেই কলকাতা চলে যান মৌসম ৷ তিনি জানিয়েছেন, বিষয়টি নিয়ে তিনি শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলবেন ৷ শিক্ষামন্ত্রীকে এই ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করার আর্জি জানাবেন ৷

মালদা, 6 ফেব্রুয়ারি : গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার বিপ্লব গিরিকে ঘেরাও করলেন শিক্ষাকর্মীরা ৷ আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, তাদের দাবি পূরণ না করতে পারলে পদত্যাগ করতে হবে রেজিস্ট্রারকে ৷ শীতের রাতে এখনও পর্যন্ত তাঁকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেন গেটের বাইরে, খোলা আকাশের নীচে আটক করে রেখেছে আন্দোলনকারীরা ৷ বিপ্লববাবু জানিয়েছেন, শিক্ষাকর্মীদের দাবি চিন্তা করে তাঁদের প্রত্যেকের জন্য প্রতি মাসে ৪২০০ টাকা অন্তর্বর্তী ভাতা ঘোষণা করা হয়েছে ৷ যতদিন না রাজ্য সরকার অস্থায়ী কর্মীদের জন্য ROPA 2019 অনুযায়ী বেতন চালু করে, ততদিন প্রত্যেককে এই ভাতা দেওয়া হবে ৷ কিন্তু সরকারি নির্দেশিকা ছাড়া অস্থায়ী শিক্ষাকর্মীদের ROPA 2019 অনুযায়ী বেতন দেওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে সম্ভব নয় ৷ এরই প্রতিবাদে গত চারদিন ধরে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন শিক্ষাকর্মীরা ৷ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কাজকর্ম কার্যত অচল হয়ে পড়েছে ৷ তাঁদের দ্রুত কাজে যোগ দেওয়ার আবেদন জানানো হয়েছে ৷

গত 24 জানুয়ারি কলকাতায় এগজিকিউটিভ কাউন্সিলের বৈঠকের পর আজ বিকেলে গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেন রেজিস্ট্রার বিপ্লব গিরি ৷ এদিকে নিজেদের 10 দফা দাবিতে গত চারদিন ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেন গেটের বাইরে অবস্থান বিক্ষোভ চালাচ্ছেন গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাকর্মীরা ৷ আজ সেখানে পৌঁছতেই ঘেরাও করা হয় বিপ্লববাবুকে ৷ কেন তাঁদের দাবি পূরণ করা হচ্ছে না তা নিয়ে তাঁকে প্রশ্ন করেন আন্দোলনকারীরা ৷ তবে এদিন বিপ্লববাবুর পদত্যাগের দাবিতেই বেশি সোচ্চার ছিলেন শিক্ষাকর্মীরা ৷ আন্দোলনকারীদের পক্ষে সারা বাংলা শিক্ষাবন্ধু সমিতি, গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক শম্পা মিত্র বলেন, “হয় আজ তিনি আমাদের সমস্যার সমাধান করবেন, অথবা পদত্যাগ করে ভিতরে যাবেন ৷ উনি আমাদের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন ৷ এর আগে EC-র একটি ভুয়ো রেজ্যুলেশন দেখিয়ে উনি আমাদের আন্দোলন তুলে দিয়েছিলেন ৷ তিনি নিজেই বলেছিলেন, আমাদের দাবি পূরণ না করতে পারলে আমরা যেন তাঁকে নিয়ে বসে পড়ি ৷ আজ আমরা তাঁর সেই নির্দেশই পালন করছি ৷ তাঁরা এখন বলছেন, রাজ্য সরকারের নির্দেশ ছাড়া আমাদের ROPA 2019 অনুযায়ী বেতন দেওয়া যাবে না ৷ কথার জাল বুনে আমাদের ভাঁওতা দেওয়ার চেষ্টা করছেন ৷ ইচ্ছে করলে তারা সব করতে পারেন ৷ আমারা সরকারি কর্মী নই ৷ আমাদের বেতন বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব তহবিল থেকে দেওয়া হয় ৷ এখানে সরকারের কোনও বিষয় নেই ৷ আমরা চাই, এই রেজিস্ট্রার পদত্যাগ করুন ৷ তাঁর জায়গায় যোগ্য কাউকে রেজিস্ট্রার করা হোক ৷”

বিপ্লববাবুর দাবি, “আমি কয়েকদিন আগেই মালদায় এসেছি ৷ এসে দেখি, এখানে আন্দোলন চলছে ৷ বিভিন্ন আধিকারিককে বিভিন্ন সময় ঘেরাও করা হচ্ছে ৷ অসুস্থতার জন্য আমি কয়েকদিন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে ঘর থেকেই কাজ করেছি ৷ শিক্ষাকর্মীরা প্রথমে তিন দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন ৷ পরে দাবির সংখ্যা বেড়ে 10 হয় ৷ এর মধ্যে EC-র অনুমতিক্রমে আমরা অনেক দাবিই মেটাতে পেরেছি ৷ কিন্তু 122 জনের স্থায়ীকরণ করা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয় বলে তা উচ্চশিক্ষা দপ্তরে পাঠিয়েছি ৷ উচ্চশিক্ষা দপ্তরে প্রত্যেক শিক্ষাকর্মীর নথিপত্রও পাঠানো হয়েছে ৷ শিক্ষাকর্মীদের আরও দাবি ছিল, গ্রুস সি ও ডি ভাগ করা ৷ তার কাজ চলছে ৷ ROPA 2019-এর এন্ট্রি লেভেল অনুযায়ী শিক্ষাকর্মীদের বেতন দিতে হবে ৷ কিন্তু গত 9 জানুয়ারি জারি করা সরকারি নির্দেশিকা অনুযায়ী, এই বেতনক্রম চালু করা যাবে শুধুমাত্র স্থায়ী কর্মীদের ক্ষেত্রে ৷ কিন্তু পরবর্তীতে অস্থায়ী কর্মীদেরও এর আওতায় আনা হবে বলে জানা গিয়েছে ৷ তাই আপাতত আমরা প্রত্যেক শিক্ষাকর্মীর জন্য মাসিক 4200 টাকা অন্তর্বর্তী ভাতা ঘোষণা করেছি ৷ যতদিন না তাঁরা ROPA 2019-এর এন্ট্রি লেভেল অনুযায়ী বেতন পাচ্ছেন, ততদিন তাঁদের এই ভাতা দেওয়া হবে ৷ তার নোটিসও আমরা দিয়েছি ৷ কিন্তু তা সত্বেও আজ আমাকে শীতের মধ্যে মেন গেটের সামনে বসিয়ে রাখা হয়েছে ৷”

ঘেরাও গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বিপ্লব গিরি

অন্যদিকে আজ বিকেলে আন্দোলনরত শিক্ষাকর্মীদের বিরুদ্ধে ডেপুটি রেজিস্ট্রার সাদেক আলিকে হেনস্থার অভিযোগ ওঠে । এই বিষয়ে তখনই উপাচার্যকে নালিশ জানান সাদেক সাহেব । তাঁর অভিযোগ পেয়েই এক শিক্ষাকর্মী কার্তিক রায়কে সাসপেন্ড করেন উপাচার্য স্বাগত সেন । সেই নির্দেশিকা ইতিমধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে পৌঁছেছে । গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অচলাবস্থা দূর করতে গতকাল রাতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও আন্দোলনকারী শিক্ষাকর্মীদের নিয়ে বিশেষ বৈঠক করেন জেলা তৃণমূল সভানেত্রী মৌসম নূর ৷ তবে সেই বৈঠকে কোনও সমাধান সূত্র পাওয়া যায়নি ৷ গতকাল রাতেই কলকাতা চলে যান মৌসম ৷ তিনি জানিয়েছেন, বিষয়টি নিয়ে তিনি শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলবেন ৷ শিক্ষামন্ত্রীকে এই ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করার আর্জি জানাবেন ৷

Intro:মালদা, ০৬ ফেব্রুয়ারি : বিশ্ববিদ্যালয়ে পা রাখতেই আন্দোলনরত শিক্ষাকর্মীদের তোপের মুখে পড়লেন ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার বিপ্লব গিরি৷ শীতের রাতেও এখনও পর্যন্ত তাঁকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেইন গেটের বাইরে, খোলা আকাশের নীচে আটক করে রেখেছে আন্দোলনকারীরা৷ শিক্ষাকর্মীদের সাফ কথা, তাদের দাবি পূরণ না করতে পারলে পদত্যাগ করতে হবে রেজিস্ট্রারকে৷ এদিকে বিপ্লববাবু জানাচ্ছেন, শিক্ষাকর্মীদের দাবি চিন্তা করে তাঁদের প্রত্যেকের জন্য প্রতি মাসে ৪২০০ টাকা অন্তর্বর্তী ভাতা ঘোষণা করা হয়েছে৷ যতদিন না রাজ্য সরকার অস্থায়ী কর্মীদের জন্য রোপা ২০১৯ অনুযায়ী বেতন চালু করে ততদিন প্রত্যেককে এই ভাতা দেওয়া হবে৷ কিন্তু সরকারি নির্দেশিকা ছাড়া অস্থায়ী শিক্ষাকর্মীদের রোপা ২০১৯ অনুযায়ী বেতন দেওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে সম্ভব নয়৷ গত চারদিন ধরে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন শিক্ষাকর্মীরা৷ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কাজকর্ম কার্যত অচল হয়ে পড়েছে৷ তাঁদের দ্রুত কাজে যোগ দেওয়ার আবেদন জানানো হয়েছে৷


Body:          গত ২৪ জানুয়ারি কলকাতায় এগজিকিউটিভ কাউন্সিলের বৈঠকের পর আজ বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেন রেজিস্ট্রার বিপ্লব গিরি৷ এদিকে নিজেদের ১০ দফা দাবিতে গত চারদিন ধরে মেইন গেটের বাইরে অবস্থান বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছেন গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাকর্মীরা৷ আজ সেখানেই আটকে দেওয়া হয় বিপ্লববাবুকে৷ কেন তাঁদের দাবি পূরণ করা হচ্ছে না তা নিয়ে তাঁকে প্রশ্নবাণে বেঁধেন আন্দোলনকারীরা৷ তবে এদিন বিপ্লববাবুর পদত্যাগের দাবিতেই বেশি সোচ্চার ছিলেন শিক্ষাকর্মীরা৷ এই খবর লেখা পর্যন্ত সেখানেই বসিয়ে রাখা হয়েছে বিপ্লববাবুকে৷
         আন্দোলনকারীদের পক্ষে সারা বাংলা শিক্ষাবন্ধু সমিতি, গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক শম্পা মিত্র বলেন, “হয় আজ তিনি আমাদের সমস্যার সমাধান করবেন, অথবা পদত্যাগ করে ভিতরে যাবেন৷ উনি আমাদের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন৷ এর আগে ইসির একটি ভুয়ো রেজ্যুলেশন দেখিয়ে উনি আমাদের আন্দোলন তুলে দিয়েছিলেন৷ তিনি নিজেই বলেছিলেন, আমাদের দাবি পূরণ না করতে পারলে আমরা যেন তাঁকে নিয়ে বসে পড়ি৷ আজ আমরা তাঁর সেই নির্দেশই পালন করছি৷ তাঁরা এখন বলছেন, রাজ্য সরকারের নির্দেশ ছাড়া আমাদের রোপা ২০১৯ অনুযায়ী বেতন দেওয়া যাবে না৷ আসলে তাঁরা একটি দেহের বারবার ময়নাতদন্ত করছেন৷ কথার জাল বুনে আমাদের ভাঁওতা দেওয়ার চেষ্টা করছেন৷ ইচ্ছে করলে তাঁরা সব করতে পারেন৷ আমারা সরকারি কর্মী নই৷ আমাদের বেতন বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব তহবিল থেকে দেওয়া হয়৷ এখানে সরকারের কোনও বিষয় নেই৷ আমরা চাই, এই রেজিস্ট্রার পদত্যাগ করুন৷ তাঁর জায়গায় যোগ্য কাউকে রেজিস্ট্রার করা হোক৷”
         এদিকে বিপ্লববাবু বলেন, “আমি কয়েকদিন আগেই মালদায় এসেছি৷ এসে দেখি, এখানে আন্দোলন চলছে৷ বিভিন্ন আধিকারিককে বিভিন্ন সময় ঘেরাও করা হচ্ছে৷ অসুস্থতার জন্য আমি কয়েকদিন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি অনুযায়ী ঘরে থেকেই কাজ করেছি৷ শিক্ষাকর্মীরা প্রথমে তিন দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন৷ পরে দাবির সংখ্যা বেড়ে ১০ হয়৷ এর মধ্যে ইসি’র অনুমতিক্রমে আমরা অনেক দাবিই মেটাতে পেরেছি৷ কিন্তু ১২২ জনের স্থায়ীকরণ করা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয় বলে তা উচ্চশিক্ষা দপ্তরে পাঠিয়েছি৷ উচ্চশিক্ষা দপ্তরে প্রত্যেক শিক্ষাকর্মীর নথিপত্রও পাঠানো হয়েছে৷ শিক্ষাকর্মীদের আরও দাবি ছিল, গ্রুস সি ও ডি ভাগ করা৷ তার কাজ চলছে৷ আরও দাবি ছিল রোপা ২০১৯ এন্ট্রি লেভেল অনুযায়ী শিক্ষাকর্মীদের বেতন দিতে হবে৷ কিন্তু গত ৯ জানুয়ারি জারি করা সরকারি নির্দেশিকা অনুযায়ী এই বেতনক্রম চালু করা যাবে শুধুমাত্র স্থায়ী কর্মীদের ক্ষেত্রে৷ কিন্তু পরবর্তীতে অস্থায়ী কর্মীদেরও এর আওতায় আনা হবে বলে জানা গিয়েছে৷ তাই আপাতত আমরা প্রত্যেক শিক্ষাকর্মীকে মাসিক ৪২০০ টাকা অন্তর্বর্তী ভাতা ঘোষণা করেছি৷ যতদিন না তাঁরা রোপা ২০১৯ এন্ট্রি লেভেল অনুযায়ী বেতন পাচ্ছেন, ততদিন তাঁদের এই ভাতা দেওয়া হবে৷ তার নোটিশও আমরা দিয়েছি৷ কিন্তু তা সত্বেও আজ আমাকে শীতের মধ্যে মেইন গেটের সামনে বসিয়ে রাখা হয়েছে৷”
এদিকে আজ বিকেলে আন্দোলনরত শিক্ষাকর্মীদের বিরুদ্ধে ডেপুটি রেজিস্ট্রার সাদেক আলিকে হেনস্তার অভিযোগ ওঠে। তা নিয়ে তখনই উপাচার্যকে নালিশ জানান সাদেক সাহেব। তাঁর অভিযোগ পেয়েই এক শিক্ষাকর্মী কার্তিক রায়কে সাসপেন্ড করেন উপাচার্য স্বাগত সেন। সেই নির্দেশিকা ইতিমধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে পৌঁছেছে। এনিয়ে ফের হওয়া গরম হতে শুরু করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ে।


Conclusion:         এদিকে গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অচলাবস্থা দূর করতে গতকাল রাতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও আন্দোলনকারী শিক্ষাকর্মীদের নিয়ে বিশেষ বৈঠক করেন জেলা তৃণমূল সভানেত্রী মৌসম নূর৷ তবে সেই বৈঠক নিস্ফলা হয়৷ কোনও সমাধানসূত্র বেরিয়ে আসেনি৷ গতকাল রাতেই কলকাতা চলে যান মৌসম৷ তিনি জানিয়েছেন, বিষয়টি নিয়ে তিনি শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলবেন৷ শিক্ষামন্ত্রীকে এব্যাপারে হস্তক্ষেপ করার আর্জি জানাবেন৷
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.