মালদা, 27 অক্টোবর : লকডাউনে কাজ হারিয়েছিলেন এক যুবক ৷ আনলক ফাইভেও হারানো কাজ ফিরে পাননি তিনি ৷ এদিকে মাথার উপর 60 হাজার টাকার দেনা ৷ এনিয়ে কয়েকদিন ধরেই মানসিক উৎকণ্ঠায় ভুগছিলেন তিনি ৷ শেষ পর্যন্ত দশমীর রাতে নিজের বাড়িতে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মঘাতী হন তিনি ৷ ঘটনাটি চাঁচল থানার দামাইপুর সংলগ্ন চান্দুয়া গ্রামে ৷ খবর পেয়ে পুলিশ মৃতদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য আজ মালদা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠিয়েছে৷
মৃত যুবকের নাম চন্দন দাস ৷ বয়স 24 বছর ৷ এলাকায় ভোলা নামে পরিচিত ছিলেন তিনি৷ পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, চন্দন এলাকারই একটি আলমারি কারখানায় কাজ করতেন ৷ লকডাউনে সেই কারখানা বন্ধ হয়ে যায় ৷ এখনও পর্যন্ত কারখানা খোলেনি ৷ স্থায়ী রোজগার না থাকায় সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছিলেন তিনি ৷ এদিকে এই পরিস্থিতিতে তিনি স্থানীয় একটি সমবায় থেকে 60 হাজার টাকা ঋণ নেন ৷ সেই ঋণ শোধের চাপও আসছিল ৷ এই পরিস্থিতিতে এবার পুজোয় স্ত্রী শিপ্রা ও একমাত্র মেয়ে সোহাগকে জামাকাপড় কিনে দিতে পারেননি ৷ গতকাল সন্ধেয় তিন বছরের মেয়েকে নিয়ে স্ত্রী পাশের গ্রামে দশমীর মেলা দেখতে গিয়েছিলেন ৷ সেই সময় চন্দন গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেন ৷ মেলা থেকে ঘরে ফিরে সেই দৃশ্য দেখে চিৎকার করে ওঠেন শিপ্রা৷ তাঁর চিৎকারে আশপাশের বাড়ির বাসিন্দারা সেখানে আসে ৷ খবর পেয়ে আসে চাঁচল থানার পুলিশও ৷ পুলিশকর্মীরা চন্দনকে স্থানীয় চাঁচল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয় ৷
চন্দনের এক প্রতিবেশী কার্তিক মণ্ডল বলেন, “লকডাউনে ওর কাজ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল ৷ ও আলমারি মিস্ত্রি ৷ কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ওর রোজগার পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায় ৷ এদিকে ওর কিছু ধারদেনাও হয়ে গিয়েছিল ৷ গতকাল ও স্ত্রী, মেয়েকে নিয়ে পাশের গ্রামে মেলা দেখতে গিয়েছিল ৷ আমরাও সবাই মেলায় গিয়েছিলাম ৷ বাড়ি ফিরে দেখি, ও গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছে ৷ লকডাউনই ওর প্রাণটা কেড়ে নিল৷”
চাঁচল থানার পুলিশ জানিয়েছে, এই ঘটনায় আপাতত একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করা হয়েছে ৷ ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়া গেলে মৃত্যুর কারণ সঠিকভাবে জানা যাবে ৷ এই ঘটনায় এখনও কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি ৷