মালদা, 16 নভেম্বর: আবারও স্বল্পবসনাদের অশ্লীল নাচের আসর নিয়ে বিতর্কে মালদার হরিশ্চন্দ্রপুর ৷ দুর্গাপুজোর অনুষ্ঠানের পর ছিঃ ছিঃ রব উঠেছিল এলাকা জুড়ে ৷ নড়েচড়ে বসেছিল পুলিশও ৷ খাকি উর্দিধারীরা জানিয়েছিলেন, আর এমনটা হবে না ৷ তাঁরা নজর রাখবেন ৷ কিন্তু কালীপুজোতেও দেখা গেল একই ছবি ৷ রাতভর স্বল্পবসনাদের কুরুচিকর নাচে মজে রইল আট থেকে আশি ৷ এই নিয়ে আবারও শোরগোল পড়েছে এলাকা জুড়ে ৷ এলাকার শিক্ষিত মানুষজন মেনে নিচ্ছেন, এ সব অপসংস্কৃতির প্রভাব পড়বে তাঁদের ছেলেমেয়েদের মনে ৷ তবে রোষে পড়ার ভয়ে প্রকাশ্যে কেউ মুখ খুলতে চাইছেন না ৷
বুধবার হরিশ্চন্দ্রপুর 1 নম্বর ব্লকের ভিঙ্গল গ্রাম পঞ্চায়েতের ভিঙ্গল গ্রামে কালীপুজোকে কেন্দ্র করে মেলা বসেছিল ৷ রাতে সেই মেলাতেই বসল জমজমাট চটুল নাচের আসর ৷ সঙ্গে মদ আর জুয়ার আসর তো ছিলই ৷ স্থানীয়রা জানাচ্ছেন, রাজনৈতিক দলগুলির মদতেই হরিশ্চন্দ্রপুর জুড়ে বারবার এমন আসর বসছে ৷ এতে পুলিশেরও মদত রয়েছে ৷ পিছনে রয়েছে মোটা অংকের টাকার লেনদেন ৷ তাই সব দেখেও পুলিশ না দেখার ভান করে বসে আছে ৷
এলাকার মানুষজন বিষয়টি নিয়ে সংবাদমাধ্যমের সামনে মুখ খুলতে রাজি না হলেও, গোটা ঘটনা নিয়ে ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর ৷ এর জন্য কংগ্রেস পরিচালিত ভিঙ্গল গ্রাম পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষকে দায়ী করেছেন তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসির হরিশ্চন্দ্রপুর 1 নম্বর ব্লক সভাপতি সাহেব দাস ৷ এ নিয়ে পুলিশকেও কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন তিনি ৷
তাঁর বক্তব্য, "ভিঙ্গল গ্রাম পঞ্চায়েতটি কংগ্রেস পরিচালিত ৷ মানুষের ভোট ধরে রাখতে কংগ্রেসের লোকজন মেলায় দু'দিন ধরে এমন নোংরা আসর বসিয়েছে ৷ শুনলাম, ওই আসর থেকে কংগ্রেসের নেতা-নেত্রীরা তোলাও আদায় করেছেন ৷ তাঁরা পুলিশকেও ভুল পথে চালিত করছেন ৷ আমি পুলিশ প্রশাসনকে বলব, এমন আসর যেন এলাকায় আর না বসে ৷ কারণ, এ সব আসরে আমাদের সমাজ থেকে শুরু করে ভবিষ্যৎ প্রজন্মও শেষ হয়ে যাবে ৷ মানুষ এখন বুঝতে পারছে, পঞ্চায়েত নির্বাচনে কংগ্রেসকে ভোট দিয়ে তারা কতটা ভুল করেছে ৷ লোকসভা নির্বাচনে তারা এই ভুল শুধরে নেবে বলেই আমার বিশ্বাস ৷"
যদিও সাহেব দাসের এই অভিযোগ মানতে চাননি হরিশ্চন্দ্রপুর 1 নম্বর ব্লকের প্রভাবশালী কংগ্রেস নেতা আবদুস শোভান ৷ তিনি জানান, "এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন ৷ আমরা এ নিয়ে খবর নিয়েছি ৷ কংগ্রেস এ সব সংস্কৃতি কখনও সমর্থন করে না ৷ এটা তৃণমূলের কালচার ৷ ওরাই এই আসর বসিয়েছে ৷ আর থানা তো এখন তৃণমূলের পার্টি অফিস ৷ তাই পুলিশের অনুমতি পেতেও ওদের সমস্যা হয় না ৷ রাজ্যে যতদিন তৃণমূলের সরকার থাকবে, ততদিন এমন ঘটনা ঘটতেই থাকবে ৷"
হরিশ্চন্দ্রপুর থানার পুলিশ জানিয়েছে, পুজোর মেলায় এমন ঘটনা কারও জানা ছিল না ৷ বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে ৷ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে ৷
আরও পড়ুন: