মালদা, 16 এপ্রিল : একেই লকডাউনে কাজকর্ম বন্ধ হয়েছে ৷ ঘরে যা ছিল তাও প্রায় শেষ ৷ প্রশাসন থেকে এখনও কোনও সাহায্য মেলেনি ৷ কিন্তু সেদিকেই তাকিয়ে ছিলেন এক বৃদ্ধ দম্পতি ধীরেন্দ্রনাথ বর্মণ ও পূর্ণিমা বর্মণ ৷ তার মধ্যে কালবৈশাখি তাঁদের গৃহহীন করে ছেড়েছে ৷ ঝড়ে ভেঙে গিয়েছে তাঁদের মাথা গোঁজার আস্তানা ৷ এই পরিস্থিতিতে তাঁদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন গ্রামবাসীরা ৷ সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন স্থানীয় এক তৃণমূল নেতাও ৷ বিষয়টি জানতে পেরে দ্রুত ওই দম্পতিকে সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন BDO ।
পুরাতন মালদার মুচিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের মনোহরপুর গ্রাম ৷ ওই গ্রামে রাস্তার ধারেই বাড়ি 72 বছরের বৃদ্ধ ধীরেন্দ্রনাথ বর্মণ ও তাঁর স্ত্রী 65 বছরের পূর্ণিমা বর্মণের ৷ কাঁচাবাড়িতে তাঁরা দু’জনে থাকেন ৷ খানিক দূরে আরেকটি ঘরে পরিবার নিয়ে থাকেন তাঁর এক ছেলে বিজয় ৷ আরেক ছেলে কর্মসূত্রে শিলিগুড়িতে ৷ বয়স হলেও এখনও দিনমজুরের কাজ করেন ধীরেনবাবু ৷ কারণ, বিজয়ের একার উপার্জনে সংসার চলে না ৷ কিন্তু লকডাউন শুরুর পর থেকে আর তিনি কাজে বেরোতে পারেননি ৷ কাজ কোথাও নেই ৷ বাবা-ছেলের ঘরে যা সঞ্চিত ছিল, তা দিয়েই কোনওরকমে দিন গুজরান চলছিল ৷ এরই মধ্যে গত পরশু কালবৈশাখির ঝড়ে ভেঙে পড়ে বৃদ্ধ দম্পতির মাথা গোঁজার আস্তানা ৷ সেই সময় ঘরে শুয়েছিলেন ধীরেনবাবু ৷ রান্নাঘরে ছিলেন পূর্ণিমাদেবী ৷ ঘর ভেঙে পড়লে বাইরে আসেন বিজয় ৷ আসেন গ্রামবাসীও ৷ সবাই মিলে ভেঙে পড়া ঘরের ভিতর থেকে তাঁদের বের করে আনেন ৷ সৌভাগ্যবশত তাঁরা কেউ আহত হননি ৷
গ্রামের এক বাসিন্দা উজ্জ্বল দাস বলেন, " ঘর ভেঙে পড়ার শব্দ পেয়ে ঝড়ের মধ্যেই আমরা এখানে আসি ৷ ভাঙা ঘরের ভিতর থেকে বৃদ্ধ-বৃদ্ধাকে বের করে আনি ৷ এমনিতেই এই পরিবারটি খুব সমস্যার মধ্যে দিন কাটাচ্ছে ৷ তার উপর আজ দুর্যোগে তাঁরা কার্যত আশ্রয়হীন হয়ে পড়লেন ৷ আপাতত তাঁদের গ্রামের একজনের বাড়িতে রাখা হচ্ছে ৷ আমরা চাই, প্রশাসন যেন দ্রুত তাঁদের ভেঙে পড়া ঘরের সংস্কার করে দেয় ৷"
বিষয়টি জানতে পেরেই ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন BDO ইরফান হাবিব ৷ তিনি জানান, বৃদ্ধ দম্পতির বাড়ি ভেঙে পড়ার খবর তিনি সংবাদমাধ্যমের কাছে জানতে পারলেন ৷ ওই বৃদ্ধ দম্পতিকে প্রশাসনিক সাহায্য করা হবে ৷ তাঁদের ভেঙে পড়া ঘর সংস্কার করা যায় কি না তাও দেখা হচ্ছে ৷
একই আশ্বাস দিয়েছেন পুরাতন মালদা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মৃণালিনী মণ্ডল মাইতিও ৷