মালদা, 9 ডিসেম্বর:“গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে ব্যালট বাক্স বদল করেছিল তৃণমূল ৷ নির্বাচনি কেন্দ্রের নিরাপত্তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছিল ৷ তাই এবার কালিয়াচক হাইস্কুলে স্ট্রং রুম করার আবেদন জানাচ্ছি ৷” যে কালিয়াচকের নিরাপত্তা নিয়ে মাথাব্যথা পুলিশ প্রশাসনের, সেখানকার নিরাপত্তার উপরেই ভরসা রেখে নির্বাচন কমিশন এবং রাজ্য সরকারের কাছে এই আবেদন রেখেছেন জেলা কংগ্রেস সভাপতি আবু হাসেম খান চৌধুরি (ডালু মিঞা) ৷ পঞ্চায়েত ভোটে নিজেদের হারানো জমি পুনরুদ্ধারে তিনি মালদায় প্রিয়াংকা গান্ধিকেও নিয়ে আসতে চাইছেন (Malda Congress) ৷
যদিও ডালুবাবুর স্ট্রং রুম কালিয়াচকে করার আবেদনকে ফুৎকারে উড়িয়ে দিয়েছেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি আবদুর রহিম বকসি ৷ এবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনে মালদা জেলায় হারিয়ে যাওয়া মাটি পুনরুদ্ধারে মরিয়া কংগ্রেস শিবির ৷ এক সময়ের গড়ে বর্তমানে কংগ্রেসের একজনও বিধায়ক নেই, এটা মেনে নিতে পারছে না নেতৃত্ব ৷ তাই পঞ্চায়েত নির্বাচনের মতো ভোটেও প্রিয়াঙ্কা গান্ধিকে ময়দানে নামানোর চেষ্টা করছেন তাঁরা (Malda congress wants Priyanka Gandhi in Panchayat Election campaign) ৷ আবু হাসেম খান চৌধুরি বলেন, “প্রিয়াঙ্কা গান্ধি মালদায় আসবেন ৷ আমি সোনিয়া গান্ধির সঙ্গে এনিয়ে কথা বলেছি ৷ তিনি বলেছেন, প্রয়োজনে আমরা প্রিয়াঙ্কাকে মালদায় নিয়ে আসতে পারি ৷ ডিসেম্বরের শেষে আমরা তাঁকে মালদায় নিয়ে আসব ৷ আপাতত তাঁর জনসভার জন্য তিনটি জায়গা ঠিক করেছি ৷ মোথাবাড়ি ফুটবল মাঠ, বৈষ্ণবনগরের সাউথ মালদা কলেজ মাঠ আর সুজাপুরের হাতিমারি মাঠের মধ্যে কোথাও সেই সভা করা হবে ৷ বেশিরভাগ মানুষ মোথাবাড়ি মাঠেই প্রিয়াঙ্কা গান্ধির সভা করানোর জন্য আমাদের বলছেন ৷ আমি এর মধ্যেই দিল্লি যাচ্ছি ৷ প্রিয়াঙ্কা গান্ধির মালদা আসা নিয়ে ফের সোনিয়া গান্ধির সঙ্গে কথা বলব ৷”
আরও পড়ুন: পুলিশের খাতায় ফেরার তৃণমূল নেতাকে রেশনের ডিলারশিপ, অভিযোগ দায়ের
এরপরেই ডালুবাবু তৃণমূলের বিরুদ্ধে সরব হন ৷ তিনি বলেন,“গত বিধানসভা নির্বাচনে সিএএ ইস্যুতে মানুষকে ভুল বুঝিয়ে তৃণমূল সংখ্যালঘু ভোট তাদের দিকে টেনেছিল ৷ তারা প্রচার করেছিল, সংখ্যালঘুদের নাকি শুধুমাত্র তৃণমূলের মুখ্যমন্ত্রীই রক্ষা করবেন ৷ লোকেরা ভয়ে চোখ বন্ধ করে ওকে ভোট দিয়েছিল ৷ এখন ভোটাররা আমাদের বলছে, তাদের ভুল হয়েছিল ৷ তাই আমরা বলছি, কংগ্রেসকে ফিরিয়ে আনুন ৷ অধিকারীবাবুর আমলে গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে মানুষের উপর জুলুম হয়েছিল ৷ পুলিশের সাহায্যে ব্যালট বাক্স বদল করে ওরা জিতেছিল ৷ এবার হয়তো ততটা হবে না ৷ আমরা রাজ্য সরকার, নির্বাচন কমিশন এবং আদালতের কাছে আবেদন জানাচ্ছি, এবার যেন স্ট্রং রুম চত্বরে সব দলের লোক থাকতে পারে ৷ যেমনটা লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচনে হয় ৷ কালিয়াচক হাইস্কুলে নিরাপত্তা ব্যবস্থা অনেক ভালো ৷ তাই সেখানে স্ট্রং রুম করলে ভালো হয় ৷ মানুষ ভোট দিয়ে কাউকে নির্বাচিত করবে ৷ কিন্তু ভোট দেওয়ার আগেই যদি ভোট হয়ে যায়, সেটা অন্যায় ৷ তবে আমরা, কংগ্রেসিরা গতবারের অবস্থা থেকে নতুন কিছু শিখেছি ৷ এবারের নির্বাচনে সেটা কাজে লাগাব ৷ ভোটারদেরও শেখাব ৷”
ডালুবাবুর পঞ্চায়েত নির্বাচনের স্ট্রং রুম কালিয়াচকে নিয়ে যাওয়ার আবেদনের প্রেক্ষিতে জেলা তৃণমূল সভাপতি আবদুর রহিম বকসি বলেন, “ওনারা 28 বছর পশ্চিমবঙ্গের মাটিতে ক্ষমতায় ছিলেন ৷ ভোটে তাঁরা কী করতেন তা সবাই জানে ৷ এসব দেখে দেখে আমরা অভ্যস্ত ৷ তবে এদের দেখে মানুষ আতঙ্কিত ৷ ইতিমধ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলে দিয়েছেন, পশ্চিমবঙ্গে স্বচ্ছতার সঙ্গে ভোট হচ্ছে ৷ এবারও হবে ৷ এসব কথা বলে এঁরা মানুষকে বিভ্রান্ত এবং আতঙ্কিত করার চেষ্টা করছেন৷ আমরা আজও বলে রাখছি, ভোট নিরপেক্ষ এবং গণতান্ত্রিক পদ্ধতি মেনে হবে ৷ সব মানুষই নিজেদের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন৷ ভোট যে স্বচ্ছতার সঙ্গে হবে, তা আমরা প্রমাণ করে দেব ৷”