ETV Bharat / state

আদিবাসী দিবসের সরকারি অনুষ্ঠানে ব্রাত্য BJP বিধায়ক ও সাংসদ

author img

By

Published : Aug 11, 2019, 1:38 PM IST

আদিবাসীদের নামে চলছে টাকা লুট । আদিবাসী দিবসে সরকারি অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ না পেয়ে সরকার ও প্রশাসনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করলেন হবিবপুরের BJP বিধায়ক জোয়েল মুর্মু ও মালদা উত্তরের সাংসদ খগেন মুর্মু ।

আদিবাসী দিবস

মালদা, 11 আগাস্ট : লোকসভা ভোটে তৃণমূল কংগ্রেসের ফল খারাপ হয়েছে । তাই বিধানসভা ভোটের আগে ঘুরে দাঁড়াতে প্রশান্ত কিশোরের দাওয়াই - মিশতে হবে সবার সঙ্গে । কে কোন দল করে, তা দেখলে চলবে না । তাই মালদা জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব জনসংযোগ যাত্রায় বেরিয়ে সব দলের কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে কথা বলছে বলে দাবি করেছে ।

কিন্তু প্রশান্ত কিশোরের সেই দাওয়াই বোধ হয় প্রশাসনের জন্য নয় । গতকাল হবিবপুরের কেন্দপুকুরে বিশ্ব আদিবাসী দিবস উদযাপনের আয়োজন করে রাজ্য সরকারের আদিবাসী উন্নয়ন বিভাগ । অনুষ্ঠানে একাধিক বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বকে আমন্ত্রণ জানানো হলেও ডাক পাননি স্থানীয় বিধায়ক ও সাংসদ । আমন্ত্রণ না পেলেও তাঁরা দু'জনেই অনুষ্ঠানস্থলে এসেছিলেন ৷ তবে মঞ্চে ওঠেননি । সাধারণ মানুষের সঙ্গে বসে অনুষ্ঠান দেখেছেন । সরকারের এহেন আচরণে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন দু'জনেই ।

9 অগাস্ট বিশ্ব আদিবাসী দিবস । এই উপলক্ষে মালদা জেলা প্রশাসন দু'দিন ধরে অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল ৷ 10 অগাস্ট ছিল মূল অনুষ্ঠান । অনুষ্ঠানটি হয় হবিবপুর ব্লকের কেন্দপুকুর গ্রামের একটি মাঠে । অনুষ্ঠানে অনগ্রসর শ্রেণি ও আদিবাসী সমাজের কৃতীদের সংবর্ধনা দেওয়া হয় । এছাড়া সংবর্ধনা দেওয়া হয় তপশিলি জাতি ও উপজাতিভুক্ত কৃতী ছাত্রছাত্রীদের । অনুষ্ঠানে বিভিন্ন সরকারি সামাজিক প্রকল্পের সুবিধা উপভোক্তাদের দেওয়া হয় ।

জেলাশাসক, পুলিশ সুপার এবং অন্যান্য সরকারি আধিকারিক ছাড়াও অনুষ্ঠানের মঞ্চে ছিলেন মালদা জেলাপরিষদের সভাধিপতি, জেলা তৃণমূল সভানেত্রী মৌসম নুর, মোথাবাড়ি ও রতুয়ার তৃণমূল বিধায়ক, হবিবপুর বিধানসভায় সাম্প্রতিক উপনির্বাচনে পরাজিত তৃণমূল প্রার্থী অমল কিস্কু সহ শাসকদলের একাধিক নেতানেত্রী । কিন্তু এলাকার বিধায়ক জোয়েল মুর্মু , সাংসদ খগেন মুর্মু কিংবা বিরোধী দল পরিচালিত পঞ্চায়েত সমিতির কোনও সদস্যকে সেখানে দেখা যায়নি ।

অনুষ্ঠানের শেষ দিকে উপস্থিত হন এলাকার BJP বিধায়ক জোয়েল মুর্মু ও BJP সাংসদ খগেন মুর্মু । তাঁদের সঙ্গে ছিলেন হবিবপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ত্রিদীপ রায় । তাঁরা মঞ্চের সামনে সাধারণ মানুষের সঙ্গেই বসেন । অনুষ্ঠান দেখেন । অবশ্য ততক্ষণে মঞ্চ থেকে বিদায় নিয়েছেন আমন্ত্রিত অতিথিরা । বেশ কিছুক্ষন অনুষ্ঠান দেখার পর সেখান থেকে চলে যান বিধায়ক ও সাংসদ ।

জোয়েল মুর্মু বলেন, "অনুষ্ঠানে আমাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি । অনুষ্ঠানের খবর পেয়ে আমি এখানে এসেছি । এসে দেখলাম, এই মঞ্চে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ছাড়া অন্যান্যরা উপস্থিত । আমি নীচে বসেছিলাম । সেই ছবিও তুলেছি । আদিবাসীদের অনুষ্ঠান হলেও আদিবাসীরা খুব কম সংখ্যায় উপস্থিত ছিলেন । বিশ্ব আদিবাসী দিবস উদযাপনের নামে রাজনীতি করা হল । আদিবাসীদের সমস্ত দিক থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে । তাদের নিয়ে শুধু রাজনীতি করা হচ্ছে । "

খগেন মুর্মু বলেন, "রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে আজ এখানে বিশ্ব আদিবাসী দিবস উদযাপিত হচ্ছে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এখানে আজ তৃণমূল কংগ্রেসের নিজস্ব অনুষ্ঠান চলছে । এখানে একজন আদিবাসী বিধায়ক রয়েছেন । কিন্তু তিনি অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণ পাননি । আমি নিজেও এই এলাকার সাংসদ । আমিও আমন্ত্রণ পাইনি । আমন্ত্রণ পাননি হবিবপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ত্রিদীপ রায়ও । কাউকে কিছু জানানোই হয়নি । "

সাংসদ আরও বলেন, " একজন আদিবাসী হিসেবেই আমি অনুষ্ঠান দেখতে এসেছি । এসে দেখলাম, মঞ্চে যাঁরা রয়েছেন, তাঁদের বেশিরভাগই আদিবাসী নন । তাঁরা কোনও জনপ্রতিনিধিও নন । বিশ্ব আদিবাসী দিবস কবে থেকে শুরু হয়েছে তা কি কেউ এখানে বলেছেন? কেন এই দিনটি বিশ্ব আদিবাসী দিবস হিসাবে পরিচিত সেটাও কি তাঁরা জানেন? যাঁরা এখানে এসেছিলেন, তাঁরা কেউ আদিবাসী নন । তাঁরা এসব জানেনই না । আদিবাসীদের নাম করে গত 9 বছর ধরে পশ্চিমবঙ্গে যেভাবে লুটপাট চলছে, এই অনুষ্ঠান তার অন্যতম দৃষ্টান্ত । এখানে শুধু লুটের রাজত্ব চলছে । আদিবাসীদের নাম করে তৃণমূলের নেতা, মন্ত্রী, বিধায়ক এবং জেলাশাসক থেকে শুরু করে কিছু পেটোয়া প্রশাসনিক আধিকারিক সরকারি টাকা লুট করছে । তার জন্যই এই অনুষ্ঠান হচ্ছে ।"


আজকের অনুষ্ঠানে কেন এলাকার আদিবাসী বিধায়ক ও সাংসদকে সরকারিভাবে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি তা নিয়ে জেলাশাসক কৌশিক ভট্টাচার্য কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি । এপ্রসঙ্গে মন্তব্য করতে চাননি অন্য কোনও প্রশাসনিক আধিকারিকও ।

মালদা, 11 আগাস্ট : লোকসভা ভোটে তৃণমূল কংগ্রেসের ফল খারাপ হয়েছে । তাই বিধানসভা ভোটের আগে ঘুরে দাঁড়াতে প্রশান্ত কিশোরের দাওয়াই - মিশতে হবে সবার সঙ্গে । কে কোন দল করে, তা দেখলে চলবে না । তাই মালদা জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব জনসংযোগ যাত্রায় বেরিয়ে সব দলের কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে কথা বলছে বলে দাবি করেছে ।

কিন্তু প্রশান্ত কিশোরের সেই দাওয়াই বোধ হয় প্রশাসনের জন্য নয় । গতকাল হবিবপুরের কেন্দপুকুরে বিশ্ব আদিবাসী দিবস উদযাপনের আয়োজন করে রাজ্য সরকারের আদিবাসী উন্নয়ন বিভাগ । অনুষ্ঠানে একাধিক বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বকে আমন্ত্রণ জানানো হলেও ডাক পাননি স্থানীয় বিধায়ক ও সাংসদ । আমন্ত্রণ না পেলেও তাঁরা দু'জনেই অনুষ্ঠানস্থলে এসেছিলেন ৷ তবে মঞ্চে ওঠেননি । সাধারণ মানুষের সঙ্গে বসে অনুষ্ঠান দেখেছেন । সরকারের এহেন আচরণে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন দু'জনেই ।

9 অগাস্ট বিশ্ব আদিবাসী দিবস । এই উপলক্ষে মালদা জেলা প্রশাসন দু'দিন ধরে অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল ৷ 10 অগাস্ট ছিল মূল অনুষ্ঠান । অনুষ্ঠানটি হয় হবিবপুর ব্লকের কেন্দপুকুর গ্রামের একটি মাঠে । অনুষ্ঠানে অনগ্রসর শ্রেণি ও আদিবাসী সমাজের কৃতীদের সংবর্ধনা দেওয়া হয় । এছাড়া সংবর্ধনা দেওয়া হয় তপশিলি জাতি ও উপজাতিভুক্ত কৃতী ছাত্রছাত্রীদের । অনুষ্ঠানে বিভিন্ন সরকারি সামাজিক প্রকল্পের সুবিধা উপভোক্তাদের দেওয়া হয় ।

জেলাশাসক, পুলিশ সুপার এবং অন্যান্য সরকারি আধিকারিক ছাড়াও অনুষ্ঠানের মঞ্চে ছিলেন মালদা জেলাপরিষদের সভাধিপতি, জেলা তৃণমূল সভানেত্রী মৌসম নুর, মোথাবাড়ি ও রতুয়ার তৃণমূল বিধায়ক, হবিবপুর বিধানসভায় সাম্প্রতিক উপনির্বাচনে পরাজিত তৃণমূল প্রার্থী অমল কিস্কু সহ শাসকদলের একাধিক নেতানেত্রী । কিন্তু এলাকার বিধায়ক জোয়েল মুর্মু , সাংসদ খগেন মুর্মু কিংবা বিরোধী দল পরিচালিত পঞ্চায়েত সমিতির কোনও সদস্যকে সেখানে দেখা যায়নি ।

অনুষ্ঠানের শেষ দিকে উপস্থিত হন এলাকার BJP বিধায়ক জোয়েল মুর্মু ও BJP সাংসদ খগেন মুর্মু । তাঁদের সঙ্গে ছিলেন হবিবপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ত্রিদীপ রায় । তাঁরা মঞ্চের সামনে সাধারণ মানুষের সঙ্গেই বসেন । অনুষ্ঠান দেখেন । অবশ্য ততক্ষণে মঞ্চ থেকে বিদায় নিয়েছেন আমন্ত্রিত অতিথিরা । বেশ কিছুক্ষন অনুষ্ঠান দেখার পর সেখান থেকে চলে যান বিধায়ক ও সাংসদ ।

জোয়েল মুর্মু বলেন, "অনুষ্ঠানে আমাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি । অনুষ্ঠানের খবর পেয়ে আমি এখানে এসেছি । এসে দেখলাম, এই মঞ্চে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ছাড়া অন্যান্যরা উপস্থিত । আমি নীচে বসেছিলাম । সেই ছবিও তুলেছি । আদিবাসীদের অনুষ্ঠান হলেও আদিবাসীরা খুব কম সংখ্যায় উপস্থিত ছিলেন । বিশ্ব আদিবাসী দিবস উদযাপনের নামে রাজনীতি করা হল । আদিবাসীদের সমস্ত দিক থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে । তাদের নিয়ে শুধু রাজনীতি করা হচ্ছে । "

খগেন মুর্মু বলেন, "রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে আজ এখানে বিশ্ব আদিবাসী দিবস উদযাপিত হচ্ছে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এখানে আজ তৃণমূল কংগ্রেসের নিজস্ব অনুষ্ঠান চলছে । এখানে একজন আদিবাসী বিধায়ক রয়েছেন । কিন্তু তিনি অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণ পাননি । আমি নিজেও এই এলাকার সাংসদ । আমিও আমন্ত্রণ পাইনি । আমন্ত্রণ পাননি হবিবপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ত্রিদীপ রায়ও । কাউকে কিছু জানানোই হয়নি । "

সাংসদ আরও বলেন, " একজন আদিবাসী হিসেবেই আমি অনুষ্ঠান দেখতে এসেছি । এসে দেখলাম, মঞ্চে যাঁরা রয়েছেন, তাঁদের বেশিরভাগই আদিবাসী নন । তাঁরা কোনও জনপ্রতিনিধিও নন । বিশ্ব আদিবাসী দিবস কবে থেকে শুরু হয়েছে তা কি কেউ এখানে বলেছেন? কেন এই দিনটি বিশ্ব আদিবাসী দিবস হিসাবে পরিচিত সেটাও কি তাঁরা জানেন? যাঁরা এখানে এসেছিলেন, তাঁরা কেউ আদিবাসী নন । তাঁরা এসব জানেনই না । আদিবাসীদের নাম করে গত 9 বছর ধরে পশ্চিমবঙ্গে যেভাবে লুটপাট চলছে, এই অনুষ্ঠান তার অন্যতম দৃষ্টান্ত । এখানে শুধু লুটের রাজত্ব চলছে । আদিবাসীদের নাম করে তৃণমূলের নেতা, মন্ত্রী, বিধায়ক এবং জেলাশাসক থেকে শুরু করে কিছু পেটোয়া প্রশাসনিক আধিকারিক সরকারি টাকা লুট করছে । তার জন্যই এই অনুষ্ঠান হচ্ছে ।"


আজকের অনুষ্ঠানে কেন এলাকার আদিবাসী বিধায়ক ও সাংসদকে সরকারিভাবে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি তা নিয়ে জেলাশাসক কৌশিক ভট্টাচার্য কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি । এপ্রসঙ্গে মন্তব্য করতে চাননি অন্য কোনও প্রশাসনিক আধিকারিকও ।

Intro:মালদা, 10 অগাস্ট : লোকসভা ভোটে খারাপ ফলের পর বিধানসভা ভোটে ঘুরে দাঁড়াতে PK-র দাওয়াই, মিশতে হবে সবার সঙ্গে। কে কোন দল করে, তা দেখলে চলবে না। সেই দাবি মেনে চলার কথা নিজেদের বক্তব্যে বার বার তুলে এনেছে মালদা জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। জনসংযোগ যাত্রায় বেরিয়ে তাঁরা সব দলের কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে কথা বলছেন বলেও দাবি করেছেন। কিন্তু PK-র সেই দাওয়াই বোধ হয় প্রশাসনের জন্য নয়। আজ হবিবপুরের কেন্দপুকুরে বিশ্ব আদিবাসী দিবস উদযাপনের আয়োজন করে রাজ্য সরকারের আদিবাসী উন্নয়ন বিভাগ। সেই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল বহু বিশিষ্ট মানুষকে। কিন্তু এলাকার আদিবাসী জনপ্রতিনিধি হয়েও আমন্ত্রণ পাননি বিধায়ক ও সাংসদ। যদিও আমন্ত্রণ না পেলেও তাঁরা দু'জনেই আজ সেই অনুষ্ঠানস্থলে গেছেন। সাধারণ মানুষের সঙ্গে বসে অনুষ্ঠান দেখেছেন। এনিয়ে প্রশাসনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন দু'জনেই। যদিও প্রশাসনের কোনও কর্তা এনিয়ে কিছু বলতে চাননি।


Body:গতকাল গোটা পৃথিবীতে পালিত হয়েছে বিশ্ব আদিবাসী দিবস। বিশেষ এই দিনটি মালদা জেলা প্রশাসন দু'দিন ধরে উদযাপন করার সিদ্ধান্ত নেয়। আজ ছিল তার মূল অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠান হয় হবিবপুর ব্লকের কেন্দপুকুর গ্রামের বাদলবাবুর মাঠে। অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে আজ প্রশাসনিক কর্তারা অনগ্রসর শ্রেণি ও আদিবাসী সমাজের কৃতি মানুষজনকে সংবর্ধনা দেন। সংবর্ধনা দেওয়া হয় তপশিলি জাতি ও উপজাতিভুক্ত কৃতি ছাত্র-ছাত্রীদের। এছাড়াও একাধিক সরকারি সামাজিক প্রকল্পের সুবিধা উপভোক্তাদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। জেলাশাসক, পুলিশ সুপার এবং অন্যান্য সরকারি আধিকারিক ছাড়াও মঞ্চে ছিলেন জেলাপরিষদের সভাধিপতি, শাসকদলের একাধিক সদস্য, জেলা তৃণমূল সভানেত্রী মৌসম নূর, মোথাবাড়ি ও রতুয়ার তৃণমূল বিধায়ক, এমনকি সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হবিবপুর বিধানসভা উপনির্বাচনে বিজিত তৃণমূল প্রার্থী অমল কিস্কু সহ শাসকদলের একাধিক নেতানেত্রীও। কিন্তু এলাকার বিধায়ক বিজেপি পরিচালিত পঞ্চায়েত সমিতির কোনও সদস্যকে সেখানে দেখা যায়নি। এনিয়ে নিয়ে অনুষ্ঠানস্থলে উপস্থিত মানুষজনের মধ্যে গুঞ্জন ছিল। গুঞ্জন ছিল রাজনৈতিক মহলেও।
অনুষ্ঠানের শেষ দিকে সেখানে উপস্থিত হন এলাকার বিজেপি বিধায়ক ও সাংসদ। সঙ্গে ছিলেন হবিবপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ত্রিদীপ রায়ও। তাঁরা মঞ্চের সামনে সাধারণ মানুষের সঙ্গেই বসেন। অনুষ্ঠান দেখেন। অবশ্য ততক্ষনে মঞ্চ থেকে বিদায় নিয়েছেন বিশিষ্টরা। বেশ কিছুক্ষন অনুষ্ঠান দেখার পর সেখান থেকে চলে যান বিধায়ক ও সাংসদ।
ইটিভি ভারতকে হবিবপুরের বিধায়ক জয়েল মুর্মু বলেন, "এই অনুষ্ঠানে আমাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। কেন্দপুকুর বাদলবাবুর মাঠে আজ সরকারিভাবে বিশ্ব আদিবাসী দিবস উদযাপনের খবর পেয়ে আমি এখানে এসেছি। এসে দেখলাম, এই মঞ্চে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ছাড়া অন্যান্যরা উপস্থিত। আমি নীচে বসেছিলাম। সেই ছবিও তুলেছি। আদিবাসীদের অনুষ্ঠান হলেও এখানে আদিবাসীরা খুব কম সংখ্যায় উপস্থিত ছিলেন। মঞ্চেও অআদিবাসীরা ছিলেন বেশি। আসলে আজ বিশ্ব আদিবাসী দিবস উদযাপনের নামে রাজনীতি করা হল। আদিবাসীদের সমস্ত দিক থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। তাদের নিয়ে শুধু রাজনীতি করা হচ্ছে। পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিকেও এদিনের অনুষ্ঠানের বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি। দিদি বলছেন, রাজ্যে গণতন্ত্র কায়েম করেছেন তিনি। কিন্তু আজ আমরা সেই গণতন্ত্র দেখতে পেলাম না।"
একান্ত সাক্ষাৎকারে সাংসদ খগেন মুর্মু ইটিভি ভারতকে বলেন, "রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে আজ এখানে বিশ্ব আদিবাসী দিবস উদযাপিত হচ্ছে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এখানে আজ তৃণমূল কংগ্রেসের নিজস্ব অনুষ্ঠান চলছে। যে অনুষ্ঠানে আদিবাসীদের উপস্থিতি অনেক কম। হবিবপুর আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকা। এখানে একজন আদিবাসী বিধায়ক রয়েছেন। এই বিধানসভা কেন্দ্রটি আদিবাসী সংরক্ষিত। কিন্তু বিধায়ক জয়েল মুর্মু আজকের অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণ পাননি। আমি নিজেও এই এলাকার সাংসদ। আদিবাসী সম্প্রদায়ভুক্ত। আমিও এখানে কোনও আমন্ত্রণ পাইনি। আমন্ত্রণ পাননি হবিবপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ত্রিদীপ রায়ও। কাউকে কিছু জানানোই হয়নি। একজন আদিবাসী হিসাবেই আমি অনুষ্ঠান দেখতে এসেছি। এসে দেখলাম, মঞ্চে যাঁরা রয়েছেন, তাঁদের বেশিরভাগই আদিবাসী নন। তাঁরা কোনও জনপ্রতিনিধিও নন। বিশ্ব আদিবাসী দিবস কবে থেকে শুরু হয়েছে তা কি কেউ এখানে বলেছেন? কেন এই দিনটি বিশ্ব আদিবাসী দিবস হিসাবে পরিচিত সেটাও কি তাঁরা জানেন? যাঁরা এখানে এসেছিলেন, তাঁরা কেউ আদিবাসী নন। তাই তাঁরা এসব জানেন না। আদিবাসীদের নাম করে গত 9 বছর ধরে পশ্চিমবঙ্গে যেভাবে লুটপাট চলছে, আজকের অনুষ্ঠান তার অন্যতম দৃষ্টান্ত। এখানে শুধু লুটের রাজত্ব চলছে। আদিবাসীদের নাম করে তৃণমূলের নেতা, মন্ত্রী, বিধায়ক এবং জেলাশাসক থেকে শুরু করে কিছু পেটোয়া প্রশাসনিক আধিকারিক সরকারি টাকা লুট করছে। তার জন্যই এই অনুষ্ঠান হচ্ছে।"


Conclusion:আজকের অনুষ্ঠানে কেন এলাকার আদিবাসী বিধায়ক ও সাংসদকে সরকারিভাবে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি তা নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল জেলাশাসক কৌশিক ভট্টাচার্যকে। তবে তিনি এনিয়ে কিছু জানেন না বলে বিষয়টি এড়িয়ে যান। এপ্রসঙ্গে মন্তব্য করতে চাননি অন্য কোনও প্রশাসনিক আধিকারিকও।
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.