মালদা, 19 মে : করোনা রুখতে রাজ্য জুড়ে কার্যত লকডাউন চলছে ৷ বন্ধ গণ পরিবহণ ৷ সকাল সাতটা থেকে 10টা পর্যন্ত ছাড় দেওয়া হয়েছে বাজারহাটে ৷ জরুরি সামগ্রী, ভ্যাকসিন নিতে বেরোনো মানুষ, অসুস্থদের জন্য ছোট যানবাহনেও ছাড় রয়েছে ৷ কিন্তু সকাল 10টা বাজতেই রাস্তায় নেমে পড়ছে পুলিশ ৷ বাজারহাট বন্ধ করার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশকর্মীদের নজরে ছোট যানবাহনও ৷ এতেই প্রবল সমস্যায় পড়ছেন মালদার ই-রিকশা চালকরা ৷ রোজগার বন্ধ বললেই চলে ৷ সংসার চালানো বড় দায় ৷
মালদা ও পুরাতন মালদা শহরে প্রতিদিন প্রায় 15 হাজার ই-রিকশা চলে ৷ অনেকেই ব্যাঙ্ক কিংবা অন্য প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নিয়ে ই-রিকশা কিনেছেন ৷ এখনও পুরো ঋণ শোধ করতে পারেননি ৷ কিন্তু এখন তাঁদের আয় প্রায় বন্ধ ৷ বাজারহাট, মিষ্টির দোকান খোলার জন্য বিধিনিষেধ কিছুটা শিথিল হলেও যানবাহনের ক্ষেত্রে তা নেই ৷ এই পরিস্থিতিতে ই-রিকশা চালকরা দাবি জানাচ্ছেন, তাঁদের জন্যও নিয়মে কিছুটা শিথিল হোক ৷
আরও পড়ুন: দুর্গাপুরে পুলিশের নাকাচেকিং, সকাল 10টার পর অকারণ রাস্তায় বেরোলেই ধরপাকড়
এক ই-রিকশা চালক সজল রায় বলেন, “আমরা খুব সমস্যার মধ্যে রয়েছি ৷ শুধুমাত্র রেশনের উপর নির্ভর করে থাকতে হচ্ছে ৷ এদিকে ঋণে গাড়ি কিনেছি ৷ ঋণের টাকা শোধ দেওয়ার চাপ রয়েছে ৷ অথচ রাস্তায় গাড়ি নিয়ে বেরোলে পুলিশ মারছে ৷ কীভাবে চলব ? এভাবে দিনের পর দিন চলতে থাকলে আমরা না খেয়ে মরব ৷”
আরেক চালক শংকর হালদারের অভিযোগ, “বর্তমান পরিস্থিতিতে কোনও রোগী নিয়ে ভাড়া গেলে ফেরার সময় পুলিশ আমাদের কাছ থেকে ঘুষ নিচ্ছে ৷ এটা বন্ধ হওয়া প্রয়োজন ৷ কড়া বিধিনিষেধে আমাদের জন্য কোনও ছাড় নেই ৷ ”
ব্যাটারি চালিত ই-রিকশা চালক ও অপারেটর সংগঠনের জেলা সম্পাদক নিখিল দাস বলেন, “হাতে কাজ নেই ৷ লকডাউনে প্রায় ঘরবন্দি হয়ে রয়েছি আমরা ৷ অর্থের অভাবে প্রত্যেকের সংসারে বেহাল অবস্থা ৷ তবে এই পরিস্থিতিতেও রাতবিরেতে রোগী নিয়ে যাওয়ার ডাক পড়লে ছুটে যাচ্ছি ৷ তখন আমাদের মনে পড়ছে সবার ৷ কাজ শেষ হয়ে গেলে আমাদের কথা আর মনে থাকে না ৷ প্রশাসনের কাছে আবেদন, আমাদের জন্যও নির্দিষ্ট কিছু সময় লকডাউন শিথিল করা হোক ৷”