ETV Bharat / state

Durga Puja : আবেগের কাছে হার আশঙ্কার, প্রথা মেনে খুঁটিপুজো মালদার শান্তি ভারতী পরিষদে

করোনা আবহেও প্রথা মেনেই খুঁটিপুজো সারছেন দুর্গাপুজোর উদ্যোক্তারা ৷ মালদা জেলাও তার ব্যতিক্রম নয় ৷ সোমবার, রথযাত্রার দিনই খুঁটিপুজো করলেন জেলার শান্তি ভারতী পরিষদের পুজো কমিটির সদস্যরা ৷

Durga Puja : khuti puja at Malda Shanti Bharati Parishad
Durga Puja : আবেগের কাছে হার আশঙ্কার, প্রথা মেনে খুঁটিপুজো মালদার শান্তি ভারতী পরিষদে
author img

By

Published : Jul 12, 2021, 4:52 PM IST

মালদা, 12 জুলাই : আজ রথযাত্রা ৷ কয়েকদিনের জন্য মাসির বাড়ি যাবেন জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রা ৷ এদিকে, পাঁজি মেনে কার্যত আজ থেকেই শুরু হয়ে গেল বাঙালির সবথেকে বড় উৎসব দুর্গাপুজোর প্রস্তুতি ৷ প্রথা অনুযায়ী, এদিনই খুঁটিপুজো করে দুর্গাপুজোর সূচনা করলেন পুজো উদ্যোক্তারা ৷ বর্ষার দমকা হাওয়ায় আনন্দের রেশ ছড়িয়ে পড়তে শুরু করল ঘরে ঘরে, প্রত্যেক মানুষের প্রাণে ৷ আজ থেকে ব্যস্ততা শুরু হল কুমোরটুলিতেও ৷ ব্যতিক্রম নয় মালদা জেলাও ৷

গত বছর বাংলার আবেগকে আষ্টেপৃষ্টে বেঁধে রেখেছিল কোভিড ভাইরাস ৷ করোনার দাপটে পুজো মণ্ডপের আনন্দে শামিল হওয়া দূরের কথা, প্রাণ বাঁচাতে নিজেদের ঘরবন্দি করে রেখেছিল বাঙালি ৷ ঠিক তার আগের বছর মালদা জেলায় উৎসবের সুর কেড়ে নিয়েছিল ভয়াল বন্যা ৷ তবে এখন করোনার দাপট অনেকটাই কমেছে ৷ রাজ্যে দৈনিক সংক্রমণের হার হাজারের নীচে নেমে এসেছে ৷ কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বারবার সতর্ক করছেন, এখনই আশ্বস্ত হওয়ার কোনও কারণ নেই ৷ আগামী অক্টোবর-নভেম্বরেই আছড়ে পড়তে চলেছে করোনার তৃতীয় ঢেউ ৷ তাতে শিশুদের সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনা সবথেকে বেশি ৷ কিন্তু কতটা ভয়াবহ হবে কোভিডের তৃতীয় ঢেউ ? এ নিয়ে ভিন্ন মত রয়েছে বিশেষজ্ঞদের মধ্যেই ৷ অনেকে বলছেন, তৃতীয় ঢেউয়েও প্রচুর মানুষের মৃত্যু হবে ৷ আবার অনেকের বক্তব্য, ভাইরাস তার শক্তি হারাতে শুরু করেছে ৷ দ্বিতীয় ঢেউয়ের মতো মারাত্মক হবে না তৃতীয় ঢেউ ৷ তাই মানুষ এখনও শঙ্কিত ৷

আরও পড়ুন : Durga Puja : কোভিড আবহেই খুঁটিপুজো হাওড়ার সদানন্দ স্মৃতি সংঘে

এই আবহেই বাঙালির প্রাণের উৎসবের ঢাকে আজ কাঠি পড়ে গেল ৷ মালদার বিভিন্ন এলাকায় দুর্গাপুজোর উদ্যোক্তারা আজ প্রথা মেনে খুঁটিপুজোর আয়োজন করেন ৷ জেলার অন্যতম বিগ বাজেটের পুজো কমিটি, শান্তি ভারতী পরিষদেও এদিন দুর্গাপুজোর খুঁটিপুজো অনুষ্ঠিত হয় ৷ যে কোনও প্রাকৃতিক দুর্যোগ, এমনকী করোনাকালেও এই ক্লাব বিপন্ন মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে ৷

কোভিড আতঙ্কের মধ্যেই ফিরল উৎসবের সুর ৷

ক্লাবের সম্পাদক শক্তি দেব বলছেন, ‘‘আমরা প্রতি বছর রথযাত্রায় মায়ের খুঁটিপুজো করি ৷ আজই আমাদের পুজোর সূচনা হয়ে গেল। আমাদের কাজও বাড়ল। এবার আমরা এই এলাকার প্রতি পাড়া স্যানিটাইজ্ড করব ৷ প্রত্যেককে মাস্ক বিলি করব ৷ রাজ্য সরকার ও আদালতের নির্দেশিকা অক্ষরে অক্ষরে পালন করেই আমরা পুজোর আয়োজন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি ৷ গতবারও সেইভাবেই পুজো হয়েছে ৷ পুজোয় নামার আগে ক্লাবের প্রতিটি সদস্য টিকা নিয়েছেন ৷ করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের কথা মাথায় রেখে আমরা এবারও রাস্তার দিকে মণ্ডপের মুখ রাখব ৷ দর্শনার্থীদের মণ্ডপের সামনে ভিড় করতে দেওয়া হবে না ৷ ক্লাবের প্রতিটি সদস্য সেই বিষয়ে নজরদারি চালাবেন ৷ করোনাকালে আমরা আক্রান্তদের জন্য অক্সিজেন সিলিন্ডারের ব্যবস্থা করেছি ৷ ন্যূনতম খরচে ক্লাবের অ্যাম্বুল্যান্সে সংক্রামিতদের কলকাতা নিয়ে গিয়েছি ৷ কিন্তু দুর্গাপুজো আমাদের আবেগ ৷ আমাদের সবচেয়ে বড় উৎসব ৷ করোনার জন্য বেশিরভাগ মানুষ বাড়িতে বন্দি ৷ বাচ্চারা আনন্দ করতে পারছে না ৷ সবাইকে আনন্দ দিতেই আমরা দুর্গাপুজোর আয়োজনে নেমে পড়লাম ৷ ”

আরও পড়ুন : Iskcon Rath Yatra : নবদ্বীপে ধর্মীয় রীতি মেনে পালিত হল ইসকনের রথযাত্রা

মালদা জেলার প্রখ্যাত মৃৎশিল্পী রাজকুমার পণ্ডিত ৷ ছোটবেলা থেকেই ঠাকুর্দা অমৃতলাল পণ্ডিত, বাবা বিশ্বনাথ পণ্ডিতদের দেখে এসেছেন, রথযাত্রার দিনই দুর্গাপুজোর কাঠামোয় পুজো করে প্রতিমা নির্মাণে হাত দেওয়া হয় ৷ এই রীতির বাইরে যেতে পারেননি তিনিও ৷ পাঁজি দেখে সোমবার সকাল 10 টার কিছু পরেই তাঁর শিল্পালয়ে দুর্গা প্রতিমার কাঠামো পুজো করেন তিনি ৷ খড় বেঁধে হাত দেন প্রতিমা নির্মাণের কাজ ৷

Durga Puja : khuti puja at Malda Shanti Bharati Parishad
রথযাত্রার দিন প্রতিমা নির্মাণের কাজ শুরু করেন মৃৎশিল্পী ৷

রাজকুমার বলেন, “প্রতি বছর পঞ্জিকায় সময় দেখে আমি রথযাত্রার দিন দুর্গাপ্রতিমা নির্মাণের কাজ শুরু করি ৷ আজ থেকে ঠিক 90 দিন বাদেই মহাষষ্ঠী ৷ রথযাত্রার দিন থেকে কাজ শুরু করে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তা শেষ করা হয় ৷ পূর্বপুরুষদেরও এভাবেই কাজ করতে দেখেছি ৷ আজ থেকেই বাঙালির প্রাণের উৎসবের ঢাকে কাঠি পড়ল ৷ পুজোর সূচনা হয়ে গেল ৷ করোনার তৃতীয় ঢেউ আমাদের কাজে কতটা প্রভাব ফেলবে, তা ভবিষ্যতের বিষয় ৷ আমরা আজ থেকে প্রতিমা নির্মাণের কাজ শুরু করে দিলাম ৷’’

মালদা, 12 জুলাই : আজ রথযাত্রা ৷ কয়েকদিনের জন্য মাসির বাড়ি যাবেন জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রা ৷ এদিকে, পাঁজি মেনে কার্যত আজ থেকেই শুরু হয়ে গেল বাঙালির সবথেকে বড় উৎসব দুর্গাপুজোর প্রস্তুতি ৷ প্রথা অনুযায়ী, এদিনই খুঁটিপুজো করে দুর্গাপুজোর সূচনা করলেন পুজো উদ্যোক্তারা ৷ বর্ষার দমকা হাওয়ায় আনন্দের রেশ ছড়িয়ে পড়তে শুরু করল ঘরে ঘরে, প্রত্যেক মানুষের প্রাণে ৷ আজ থেকে ব্যস্ততা শুরু হল কুমোরটুলিতেও ৷ ব্যতিক্রম নয় মালদা জেলাও ৷

গত বছর বাংলার আবেগকে আষ্টেপৃষ্টে বেঁধে রেখেছিল কোভিড ভাইরাস ৷ করোনার দাপটে পুজো মণ্ডপের আনন্দে শামিল হওয়া দূরের কথা, প্রাণ বাঁচাতে নিজেদের ঘরবন্দি করে রেখেছিল বাঙালি ৷ ঠিক তার আগের বছর মালদা জেলায় উৎসবের সুর কেড়ে নিয়েছিল ভয়াল বন্যা ৷ তবে এখন করোনার দাপট অনেকটাই কমেছে ৷ রাজ্যে দৈনিক সংক্রমণের হার হাজারের নীচে নেমে এসেছে ৷ কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বারবার সতর্ক করছেন, এখনই আশ্বস্ত হওয়ার কোনও কারণ নেই ৷ আগামী অক্টোবর-নভেম্বরেই আছড়ে পড়তে চলেছে করোনার তৃতীয় ঢেউ ৷ তাতে শিশুদের সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনা সবথেকে বেশি ৷ কিন্তু কতটা ভয়াবহ হবে কোভিডের তৃতীয় ঢেউ ? এ নিয়ে ভিন্ন মত রয়েছে বিশেষজ্ঞদের মধ্যেই ৷ অনেকে বলছেন, তৃতীয় ঢেউয়েও প্রচুর মানুষের মৃত্যু হবে ৷ আবার অনেকের বক্তব্য, ভাইরাস তার শক্তি হারাতে শুরু করেছে ৷ দ্বিতীয় ঢেউয়ের মতো মারাত্মক হবে না তৃতীয় ঢেউ ৷ তাই মানুষ এখনও শঙ্কিত ৷

আরও পড়ুন : Durga Puja : কোভিড আবহেই খুঁটিপুজো হাওড়ার সদানন্দ স্মৃতি সংঘে

এই আবহেই বাঙালির প্রাণের উৎসবের ঢাকে আজ কাঠি পড়ে গেল ৷ মালদার বিভিন্ন এলাকায় দুর্গাপুজোর উদ্যোক্তারা আজ প্রথা মেনে খুঁটিপুজোর আয়োজন করেন ৷ জেলার অন্যতম বিগ বাজেটের পুজো কমিটি, শান্তি ভারতী পরিষদেও এদিন দুর্গাপুজোর খুঁটিপুজো অনুষ্ঠিত হয় ৷ যে কোনও প্রাকৃতিক দুর্যোগ, এমনকী করোনাকালেও এই ক্লাব বিপন্ন মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে ৷

কোভিড আতঙ্কের মধ্যেই ফিরল উৎসবের সুর ৷

ক্লাবের সম্পাদক শক্তি দেব বলছেন, ‘‘আমরা প্রতি বছর রথযাত্রায় মায়ের খুঁটিপুজো করি ৷ আজই আমাদের পুজোর সূচনা হয়ে গেল। আমাদের কাজও বাড়ল। এবার আমরা এই এলাকার প্রতি পাড়া স্যানিটাইজ্ড করব ৷ প্রত্যেককে মাস্ক বিলি করব ৷ রাজ্য সরকার ও আদালতের নির্দেশিকা অক্ষরে অক্ষরে পালন করেই আমরা পুজোর আয়োজন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি ৷ গতবারও সেইভাবেই পুজো হয়েছে ৷ পুজোয় নামার আগে ক্লাবের প্রতিটি সদস্য টিকা নিয়েছেন ৷ করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের কথা মাথায় রেখে আমরা এবারও রাস্তার দিকে মণ্ডপের মুখ রাখব ৷ দর্শনার্থীদের মণ্ডপের সামনে ভিড় করতে দেওয়া হবে না ৷ ক্লাবের প্রতিটি সদস্য সেই বিষয়ে নজরদারি চালাবেন ৷ করোনাকালে আমরা আক্রান্তদের জন্য অক্সিজেন সিলিন্ডারের ব্যবস্থা করেছি ৷ ন্যূনতম খরচে ক্লাবের অ্যাম্বুল্যান্সে সংক্রামিতদের কলকাতা নিয়ে গিয়েছি ৷ কিন্তু দুর্গাপুজো আমাদের আবেগ ৷ আমাদের সবচেয়ে বড় উৎসব ৷ করোনার জন্য বেশিরভাগ মানুষ বাড়িতে বন্দি ৷ বাচ্চারা আনন্দ করতে পারছে না ৷ সবাইকে আনন্দ দিতেই আমরা দুর্গাপুজোর আয়োজনে নেমে পড়লাম ৷ ”

আরও পড়ুন : Iskcon Rath Yatra : নবদ্বীপে ধর্মীয় রীতি মেনে পালিত হল ইসকনের রথযাত্রা

মালদা জেলার প্রখ্যাত মৃৎশিল্পী রাজকুমার পণ্ডিত ৷ ছোটবেলা থেকেই ঠাকুর্দা অমৃতলাল পণ্ডিত, বাবা বিশ্বনাথ পণ্ডিতদের দেখে এসেছেন, রথযাত্রার দিনই দুর্গাপুজোর কাঠামোয় পুজো করে প্রতিমা নির্মাণে হাত দেওয়া হয় ৷ এই রীতির বাইরে যেতে পারেননি তিনিও ৷ পাঁজি দেখে সোমবার সকাল 10 টার কিছু পরেই তাঁর শিল্পালয়ে দুর্গা প্রতিমার কাঠামো পুজো করেন তিনি ৷ খড় বেঁধে হাত দেন প্রতিমা নির্মাণের কাজ ৷

Durga Puja : khuti puja at Malda Shanti Bharati Parishad
রথযাত্রার দিন প্রতিমা নির্মাণের কাজ শুরু করেন মৃৎশিল্পী ৷

রাজকুমার বলেন, “প্রতি বছর পঞ্জিকায় সময় দেখে আমি রথযাত্রার দিন দুর্গাপ্রতিমা নির্মাণের কাজ শুরু করি ৷ আজ থেকে ঠিক 90 দিন বাদেই মহাষষ্ঠী ৷ রথযাত্রার দিন থেকে কাজ শুরু করে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তা শেষ করা হয় ৷ পূর্বপুরুষদেরও এভাবেই কাজ করতে দেখেছি ৷ আজ থেকেই বাঙালির প্রাণের উৎসবের ঢাকে কাঠি পড়ল ৷ পুজোর সূচনা হয়ে গেল ৷ করোনার তৃতীয় ঢেউ আমাদের কাজে কতটা প্রভাব ফেলবে, তা ভবিষ্যতের বিষয় ৷ আমরা আজ থেকে প্রতিমা নির্মাণের কাজ শুরু করে দিলাম ৷’’

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.