মালদা, 4 মার্চ: বর্তমান রাজনৈতিক জমানায় তিনি সত্যিই একটু অন্যরকম ৷ সকাল হলে নিজেকে তৈরি করে নেন ৷ সাইকেলের সামনের ঝুড়িতে নিয়ে নেন একগাদা কাগজপত্র ৷ এরপর প্যাডেল ঠেলে বেরিয়ে পড়েন নিজের ওয়ার্ডে ৷ পাক্কা দু’ঘণ্টা ধরে এ পাড়া, ও পাড়া ঘুরে বেড়ান ৷ মানুষের বাড়িতেও ঢুকে পড়েন (Councillor visits door to door on cycle in Malda) ৷
কারও কোনও সমস্যা রয়েছে কিনা, সবাই সরকারি প্রকল্পের সুবিধে পাচ্ছে কিনা, কাগজপত্রের জন্য কারও কোনও কাজ আটকে রয়েছে কিনা, তার খোঁজখবর নেন ৷ তাঁর কোনও শংসাপত্রের জন্য কারও কোনও কাজ আটকে থাকলে সঙ্গে সঙ্গে সাইকেলের ঝুড়ি থেকে সেই ফর্ম বের করে সেখানেই তা পূরণ করে স্বাক্ষর করে দেন ৷ এভাবেই এলাকার প্রতিটি মানুষের কাছের লোক হয়ে উঠেছেন পুরাতন মালদা পৌরসভার 13 নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রিমি দাস পাল ৷ রাজনীতিতে আনকোরা এই বধূ এখন ভরসা জোগাচ্ছেন এলাকার মানুষকে ৷
গত পৌর নির্বাচনেই রাজনীতিতে হাতেখড়ি হয়েছে রিমির ৷ গেরস্থ বাড়ির বধূ থেকে কয়েক মাসেই হয়ে উঠেছেন স্থানীয়দের ভরসার জায়গা ৷ যে সময় বিভিন্ন দুর্নীতির তিরে ক্ষতবিক্ষত রাজ্যের শাসকদল, সেই সময় রিমির গায়ে সেসব কোনও কাদা লাগেনি ৷ উপরন্তু রোদ-ঝড়-বৃষ্টিতে প্রতিদিন এলাকা ঘুরে ঘুরে তিনি হয়ে উঠেছেন এলাকাবাসীর ঘরের মেয়ে ৷ তিনি জানান, নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্দেশ দিয়েছেন, মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তাঁদের সমস্যার কথা শুনতে হবে ৷ তাঁর সেই নির্দেশ মেনেই তিনি প্রতিদিন সকালে সাইকেল নিয়ে ওয়ার্ডে বেরিয়ে পড়েন ৷ দু'ঘণ্টা ধরে বিভিন্ন পাড়ায় গিয়ে মানুষের সঙ্গে দেখা করেন ৷ তাদের সঙ্গে কথা বলেন ৷ কার কী সমস্যা জানার চেষ্টা করেন ৷
রিমা বলেন, "দিদির প্রকল্পগুলির সুবিধে সবাই পাচ্ছে কিনা তা শুনি ৷ কারও কোনও শংসাপত্র লাগলে সঙ্গে সঙ্গেই তাকে সেটা দিয়ে দিই ৷ আসলে প্রত্যেকেরই কাজ রয়েছে ৷ তাদের পক্ষে সবসময় আমার বাড়ি যাওয়া সম্ভব নয় ৷ তাই আমিই মানুষের কাছে চলে আসি ৷" দুয়ারে কাউন্সিলরকে পেয়ে খুশি ওয়ার্ডের বাসিন্দারাও ৷ তাঁদেরই একজন সীতা রায় ঘোষ বলেন, "এই পৌরসভায় 20 জন কাউন্সিলর রয়েছেন ৷ তাঁদের মধ্যে সবচেয়ে ভালো আমাদের কাউন্সিলর ৷ সকাল হলেই তিনি আমাদের কাছে চলে আসেন ৷ কারও কিছু প্রয়োজন পড়লে তা আমাদের বাড়িতে পৌঁছে দিয়ে যান ৷ প্রতিদিনই তাঁর এই রুটিন ৷ এমন কাউন্সিলরকেই তো আমরা চাই ৷"