মালদা, 20 নভেম্বর: অভাবে সদ্যোজাত সন্তানকে দেড় লাখ টাকায় বিক্রি করে দিয়েছিলেন মা ৷ সোমবার ওই মহিলার সঙ্গে দেখা করলেন মালদার হরিশ্চন্দ্রপুর-1 ব্লকের বিডিও সৌমেন মণ্ডল ৷ তিনি ওই বধূর সঙ্গে কথা বলেন ৷ তাঁর আর্থিক সমস্যার কথা শোনেন ৷ তাঁকে কিছু আর্থিক সাহায্যের সঙ্গে জামাকাপড়ও দেন ৷ সরকারি আবাস যোজনায় ওই অভাবি মহিলার ঘর, প্রতি মাসে জিআর এবং অর্থ সাহায্যের ব্যবস্থা করা হবে বলে আশ্বাস দেন তিনি ৷ উল্লেখ্য, অভাবে সন্তান বিক্রির খবর খবর পেয়ে গত শনিবারই বিডিওকে বিষয়টি খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেন মালদা জেলার চাঁচলের মহকুমাশাসক সৌভিক মুখোপাধ্যায় ৷ তার পরই নড়েচড়ে বসে ব্লক প্রশাসন ৷
হরিশ্চন্দ্রপুর-1 ব্লকের বিডিও সৌমেন মণ্ডল বলেন, “সংবাদমাধ্যমে বিষয়টি জানতে পেরেই ওই মহিলার বাড়ি যাই ৷ তাঁর সঙ্গে কথা বলি ৷ তিনি জানান, তাঁর স্বামী ভিনরাজ্যে শ্রমিকের কাজে কর্মরত ৷ বছরের বেশিরভাগ সময় বাইরেই থাকেন ৷ মাঝেমধ্যে কয়েকদিনের জন্য বাড়ি ফেরেন ৷ কিন্তু তিনি স্ত্রী ও সন্তানের ভরণপোষণের জন্য কোনও টাকাপয়সা পাঠান না ৷ এই মহিলার মা প্রতি মাসে কিছু টাকা দিয়ে মেয়েকে সাহায্য করেন ৷’’
বিডিও জানান, এর মধ্যেই গত 1 নভেম্বর আরও একটি সন্তানের জন্ম দেন এই মহিলা ৷ অর্থাভাবে দু’টি সন্তানকে খাওয়ানোর সামর্থও ছিল না তাঁর ৷ সেই কারণেই তিনি তাঁর সদ্যোজাতকে বিক্রি করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন ৷ সন্তান বিক্রি যে আইনত অপরাধ সেটা ওই মহিলাকে জানান বিডিও ৷
বিডিও সৌমেন মণ্ডলের কথায়, ‘‘তিনি বলেছেন, আর এসব নিয়ে তিনি ভাবতে চান না ৷ তাঁর বিক্রি করা সন্তান ফের তাঁরই কোলে ফিরে এসেছে ৷ দুই সন্তানকে তিনি মানুষ করতে চান ৷ তাঁকে সামান্য কিছু অর্থ আর জামাকাপড় দিয়েছি ৷ তিনি যাতে প্রতি মাসে সরকারি আর্থিক সাহায্য ও বিনা পয়সায় খাদ্য সামগ্রী পান, তার ব্যবস্থা করা হচ্ছে ৷ তাঁর নামে সরকারি আবাস যোজনার ঘর অনুমোদনেরও ব্যবস্থা করা হচ্ছে ৷”
এদিকে ওই মহিলা বলেন, “বিডিও এসেছিলেন ৷ অভাবে বাচ্চা বিক্রি করে আমি যে বড়সড় ভুল করেছিলাম, তা উনি বুঝিয়ে বলেছেন ৷ যা হওয়ার হয়ে গিয়েছে ৷ আমাকে প্রতি মাসে সরকারের তরফে টাকা আর খাবার দেওয়া হবে বলে বিডিও জানিয়েছেন ৷ আমার আর সমস্যা থাকবে না ৷ ইতিমধ্যে এলাকার কয়েকজন আমাকে কিছু টাকা দিয়েছেন ৷ ওই টাকা দিয়েই দুই বাচ্চার খাবার কিনেছি ৷ আমি দুই ছেলেকে মানুষ করতে চাই ৷”
আরও পড়ুন: