ETV Bharat / state

ক্যানসার আক্রান্ত ছেলে, স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের আশায় প্রশাসনের দরজায় মা - হরিশচন্দ্রপুর

ক্যানসার আক্রান্ত ছেলের চিকিৎসায় একমাত্র ভরসা স্বাস্থ্যসাথী কার্ড ৷ আর সেই স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের জন্যই অধীর অপেক্ষায় মালদার হরিশচন্দ্রপুরের কুশিদা গ্রামের মামুন শেখ ও তাঁর স্ত্রী ৷ স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের জন্য আবেদনও করেছেন তাঁরা ৷ কবে হাতে পাবেন সেই কার্ড ? তবে গিয়ে চিকিৎসা শুরু হবে নাসিরুদ্দিনের ৷

a poor family seeking for swastha sathi card for their cancer infected son in malda
ক্যানসার আক্রান্ত ছেলে, স্বাস্থ্য সাথী কার্ডের আশায় প্রশাসনের দরজায় ঘুরছেন মা
author img

By

Published : Feb 9, 2021, 7:33 PM IST

Updated : Feb 9, 2021, 7:59 PM IST

মালদা, 9 ফেব্রুয়ারি : ক্যানসার আক্রান্ত ছেলের চিকিৎসায় হরিশ্চন্দ্রপুরের প্রত্যন্ত এলাকার পরিযায়ী শ্রমিক পরিবারে একমাত্র ভরসা স্বাস্থ্যসাথী কার্ড ৷ তাই অসুস্থ ছেলে নাসিরুদ্দিনকে নিয়ে ভিনরাজ্য থেকে ঘরে ফিরলেন মা ৷ তবে, এখনও সেই কাঙ্খিত কার্ড নাসিরুদ্দিনের মায়ের হাতে এসে পৌঁছয়নি ৷ মায়ের হাতে সেই কার্ড তুলে দিতে উদ্যোগ নিয়েছেন স্থানীয় পঞ্চায়েতের উপপ্রধান ৷ অসহায় এই পরিবারের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন বিডিয়ো ৷

হরিশ্চন্দ্রপুরের কুশিদা গ্রামের বাসিন্দা মামুন শেখ ৷ পেশায় পরিযায়ী শ্রমিক ৷ বছর পাঁচেক ধরে পরিবার নিয়ে তিনি রাজস্থানের আজমেঢ়ে কর্মরত ৷ লকডাউনেও সেখানেই ছিলেন৷ তাঁর সঙ্গে সেখানে থাকেন স্ত্রী নাসিমা খাতুন ৷ তাঁদের দুই ছেলে ও দুই মেয়েও সেখানেই থাকে ৷ সম্প্রতি সেখানেই অসুস্থ হয়ে পড়ে তাঁদের বড় ছেলে নাসিরুদ্দিন ৷ আজমেঢ়ে চিকিৎসা করাতে না পেরে মায়ের সঙ্গে ছেলেকে পাঠিয়ে দেন গ্রামের বাড়িতে ৷ কয়েকদিন আগে পূর্ণিয়া মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় ৷ সেখানেই ধরা পড়ে, নাসিরুদ্দিন ক্যানসার আক্রান্ত ৷ দিন আনা দিন খাওয়া সংসারে ছেলের ক্যানসারের চিকিৎসা করানোর মতো সামর্থ্য নেই মামুনে শেখের ৷ এই অবস্থায় মামুনরা জানতে পারেন, স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের মাধ্যমে ক্যানসারের চিকিৎসাও করানো যাবে ৷ ছেলেকে সুস্থ করে তুলতে এই কার্ডই এখন তাঁদের একমাত্র ভরসা ৷ কিন্তু এখনও সেই কার্ড হাতে পাননি নাসিমা খাতুন ৷

ক্যানসার আক্রান্ত ছেলে, স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের আশায় প্রশাসনের দরজায় মা

নাসিমা বলেন, “ছেলে 15 দিন ধরে অসুস্থ ৷ প্রথমে কিছু ধরা পড়েনি ৷ পরে ওকে পূর্ণিয়া হাসপাতালে দেখালে ডাক্তার বলেন, ওর ক্যানসার হয়েছে ৷ ছেলেকে বাঁচাতে আমি সরকারের কাছে সাহায্য চেয়েছি ৷ স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের জন্য ফর্ম ফিলআপ করা হয়েছে ৷ কিন্তু আজ হবে, কাল হবে বলে ঘোরাচ্ছে ৷ আমাদের কাছে পয়সা নেই ৷ কার্ড না পেলে কীভাবে বাচ্চার চিকিৎসা করাব ৷ বাচ্চাকে নিয়ে মালদায় যেতে বলেছিল সবাই ৷ টাকা না থাকলে কীভাবে মালদা যাব? আজমেঢ়ে নির্মাণ শ্রমিকের কাজ করি ৷ ছেলেমেয়ে নিয়ে সেখানেই থাকি ৷ নিজেদের তেমন ঘর নেই ৷ সরকারি ঘরও পাইনি ৷” অসুস্থ নাসিরুদ্দিনের জেঠু মন্টু শেখ বলেন, “মাসখানেক আগে ছেলেটার অসুস্থ হওয়ার খবর পাই ৷ ভাই পরিবার নিয়ে আজমেঢ়ে থাকে ৷ এলাকায় কাজ না পেয়ে সে সেখানে চলে গিয়েছিল ৷ বাচ্চার বায়েপসি পরীক্ষা করার কথা বলেছিলেন ওখানকার চিকিৎসক ৷ গত বুধবার বাচ্চাকে পূর্ণিয়া নিয়ে যাই ৷ সেখানে পরীক্ষা করে চিকিৎসক জানান, ওর ক্যান্সার হয়েছে ৷ বাড়ি ফিরে আমরা স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের জন্য আবেদন জানাই ৷ কিন্তু এখনও তার নম্বর আসেনি ৷ সরকার না দেখলে কিংবা গ্রামবাসীরা চাঁদা না দিলে ছেলেটাকে আর বাঁচানো যাবে না ৷”

আরও পড়ুন : স্বাস্থ্যসাথী কার্ড না থাকলেও রোগী ভরতির নির্দেশ বেসরকারি হাসপাতালগুলিকে

কুশিদা গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান মহম্মদ নুর আজম বলেন, “ছেলেটির নাম নাসিরুদ্দিন ৷ আমার গ্রামেরই বাসিন্দা ৷ পরিবারটি রোজগারের জন্য আজমেঢ়ে থাকে ৷ ওই পরিবারের স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের জন্য বিডিওকে জানিয়েছি ৷ হয়ত আগামী সোমবার তিনি পরিবারটিকে ওই কার্ড করে দেবেন ৷ পরিবারটি ইন্দিরা আবাস যোজনার ঘরও পায়নি ৷ 2011 সালের জনসুমারি অনুযায়ী আমার গ্রামের নামই এই যোজনায় অন্তর্ভুক্ত হয়নি ৷ পরে আমি চেষ্টা করে গ্রামের 300 জনের নামের তালিকা এই যোজনার জন্য জমা দিয়েছি ৷ তাতে এই পরিবারটিরও নাম রয়েছে ৷ যেদিন সরকার এই গ্রামের জন্য সরকারি ঘর বরাদ্দ করবে, এই পরিবারটিও সেই ঘর পাবে ৷” হরিশ্চন্দ্রপুর 1 নম্বর ব্লকের বিডিয়ো অনির্বাণ বসুও নাসিরুদ্দিনের পরিবারের জন্য দ্রুত সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন ৷

মালদা, 9 ফেব্রুয়ারি : ক্যানসার আক্রান্ত ছেলের চিকিৎসায় হরিশ্চন্দ্রপুরের প্রত্যন্ত এলাকার পরিযায়ী শ্রমিক পরিবারে একমাত্র ভরসা স্বাস্থ্যসাথী কার্ড ৷ তাই অসুস্থ ছেলে নাসিরুদ্দিনকে নিয়ে ভিনরাজ্য থেকে ঘরে ফিরলেন মা ৷ তবে, এখনও সেই কাঙ্খিত কার্ড নাসিরুদ্দিনের মায়ের হাতে এসে পৌঁছয়নি ৷ মায়ের হাতে সেই কার্ড তুলে দিতে উদ্যোগ নিয়েছেন স্থানীয় পঞ্চায়েতের উপপ্রধান ৷ অসহায় এই পরিবারের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন বিডিয়ো ৷

হরিশ্চন্দ্রপুরের কুশিদা গ্রামের বাসিন্দা মামুন শেখ ৷ পেশায় পরিযায়ী শ্রমিক ৷ বছর পাঁচেক ধরে পরিবার নিয়ে তিনি রাজস্থানের আজমেঢ়ে কর্মরত ৷ লকডাউনেও সেখানেই ছিলেন৷ তাঁর সঙ্গে সেখানে থাকেন স্ত্রী নাসিমা খাতুন ৷ তাঁদের দুই ছেলে ও দুই মেয়েও সেখানেই থাকে ৷ সম্প্রতি সেখানেই অসুস্থ হয়ে পড়ে তাঁদের বড় ছেলে নাসিরুদ্দিন ৷ আজমেঢ়ে চিকিৎসা করাতে না পেরে মায়ের সঙ্গে ছেলেকে পাঠিয়ে দেন গ্রামের বাড়িতে ৷ কয়েকদিন আগে পূর্ণিয়া মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় ৷ সেখানেই ধরা পড়ে, নাসিরুদ্দিন ক্যানসার আক্রান্ত ৷ দিন আনা দিন খাওয়া সংসারে ছেলের ক্যানসারের চিকিৎসা করানোর মতো সামর্থ্য নেই মামুনে শেখের ৷ এই অবস্থায় মামুনরা জানতে পারেন, স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের মাধ্যমে ক্যানসারের চিকিৎসাও করানো যাবে ৷ ছেলেকে সুস্থ করে তুলতে এই কার্ডই এখন তাঁদের একমাত্র ভরসা ৷ কিন্তু এখনও সেই কার্ড হাতে পাননি নাসিমা খাতুন ৷

ক্যানসার আক্রান্ত ছেলে, স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের আশায় প্রশাসনের দরজায় মা

নাসিমা বলেন, “ছেলে 15 দিন ধরে অসুস্থ ৷ প্রথমে কিছু ধরা পড়েনি ৷ পরে ওকে পূর্ণিয়া হাসপাতালে দেখালে ডাক্তার বলেন, ওর ক্যানসার হয়েছে ৷ ছেলেকে বাঁচাতে আমি সরকারের কাছে সাহায্য চেয়েছি ৷ স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের জন্য ফর্ম ফিলআপ করা হয়েছে ৷ কিন্তু আজ হবে, কাল হবে বলে ঘোরাচ্ছে ৷ আমাদের কাছে পয়সা নেই ৷ কার্ড না পেলে কীভাবে বাচ্চার চিকিৎসা করাব ৷ বাচ্চাকে নিয়ে মালদায় যেতে বলেছিল সবাই ৷ টাকা না থাকলে কীভাবে মালদা যাব? আজমেঢ়ে নির্মাণ শ্রমিকের কাজ করি ৷ ছেলেমেয়ে নিয়ে সেখানেই থাকি ৷ নিজেদের তেমন ঘর নেই ৷ সরকারি ঘরও পাইনি ৷” অসুস্থ নাসিরুদ্দিনের জেঠু মন্টু শেখ বলেন, “মাসখানেক আগে ছেলেটার অসুস্থ হওয়ার খবর পাই ৷ ভাই পরিবার নিয়ে আজমেঢ়ে থাকে ৷ এলাকায় কাজ না পেয়ে সে সেখানে চলে গিয়েছিল ৷ বাচ্চার বায়েপসি পরীক্ষা করার কথা বলেছিলেন ওখানকার চিকিৎসক ৷ গত বুধবার বাচ্চাকে পূর্ণিয়া নিয়ে যাই ৷ সেখানে পরীক্ষা করে চিকিৎসক জানান, ওর ক্যান্সার হয়েছে ৷ বাড়ি ফিরে আমরা স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের জন্য আবেদন জানাই ৷ কিন্তু এখনও তার নম্বর আসেনি ৷ সরকার না দেখলে কিংবা গ্রামবাসীরা চাঁদা না দিলে ছেলেটাকে আর বাঁচানো যাবে না ৷”

আরও পড়ুন : স্বাস্থ্যসাথী কার্ড না থাকলেও রোগী ভরতির নির্দেশ বেসরকারি হাসপাতালগুলিকে

কুশিদা গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান মহম্মদ নুর আজম বলেন, “ছেলেটির নাম নাসিরুদ্দিন ৷ আমার গ্রামেরই বাসিন্দা ৷ পরিবারটি রোজগারের জন্য আজমেঢ়ে থাকে ৷ ওই পরিবারের স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের জন্য বিডিওকে জানিয়েছি ৷ হয়ত আগামী সোমবার তিনি পরিবারটিকে ওই কার্ড করে দেবেন ৷ পরিবারটি ইন্দিরা আবাস যোজনার ঘরও পায়নি ৷ 2011 সালের জনসুমারি অনুযায়ী আমার গ্রামের নামই এই যোজনায় অন্তর্ভুক্ত হয়নি ৷ পরে আমি চেষ্টা করে গ্রামের 300 জনের নামের তালিকা এই যোজনার জন্য জমা দিয়েছি ৷ তাতে এই পরিবারটিরও নাম রয়েছে ৷ যেদিন সরকার এই গ্রামের জন্য সরকারি ঘর বরাদ্দ করবে, এই পরিবারটিও সেই ঘর পাবে ৷” হরিশ্চন্দ্রপুর 1 নম্বর ব্লকের বিডিয়ো অনির্বাণ বসুও নাসিরুদ্দিনের পরিবারের জন্য দ্রুত সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন ৷

Last Updated : Feb 9, 2021, 7:59 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.