কলকাতা, 13 অক্টোবর : তৃতীয় বার ক্ষমতায় এসে পুজোর আগেই শিক্ষক নিয়োগের ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ তাতে খানিকটা হলেও আশায় বুক বেঁধেছিলেন চাকরিপ্রার্থী থেকে পড়ুয়ারা ৷ কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষাব্যবস্থার বেহাল দশা ফের এক বার বেআব্রু করে দিল ইউনেস্কোর একটি সাম্প্রতিক রিপোর্ট ৷ তাতে বলা হয়েছে, বর্তমানে দেশে মোট শূন্য শিক্ষক পদের সংখ্যা 11 লক্ষ 16 হাজার ৷ এর মধ্যে পশ্চিমবঙ্গেই শূন্যপদ পড়ে রয়েছে 1 লক্ষ 10 হাজার ৷ শূন্যপদের নিরিখে গোটা দেশে তৃতীয় স্থানে রয়েছে বাংলা ৷ প্রথম স্থানে রয়েছে যোগী আদিত্যনাথের উত্তরপ্রদেশ, যেখানে মোট শূন্য শিক্ষক পদের সংখ্যা 3 লক্ষ 30 হাজার ৷ দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে নীতীশ কুমার শাসিত বিহার ৷ সেখানে শূন্য শিক্ষক পদ পড়ে রয়েছে 2 লক্ষ 20 হাজার ৷
আরও পড়ুন: Durgapur EB Raid : ঝাঁঝ বাড়াচ্ছে পেঁয়াজ, দামবৃদ্ধির কারণ জানতে অভিযানে ইবি
বাংলার যে সমস্ত স্কুলে শূন্য শিক্ষক পদের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি, তার মধ্যে 69 শতাংশই গ্রামাঞ্চলে অবস্থিত ৷ পর্যাপ্ত সংখ্যক শিক্ষকের অভাবে রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থা যে ভয়ঙ্কর জায়গায় পৌঁছে গিয়েছে, দু’বছর আগেই তার আন্দাজ পাওয়া গিয়েছিল বলে রাজ্য শিক্ষা দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে ৷ তৎকালীন মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের তরফে পড়ুয়া এবং শিক্ষকের এই অনুপাত নিয়ে রাজ্যের কাছে জবাবও চাওয়া হয় ৷ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শিক্ষা দফতরের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘খুবই উদ্বেগজনক তথ্য উঠে এসেছিল সেই সময় ৷ বিশেষ করে নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত বিজ্ঞান শাখার চারটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে পড়ানোর শূন্যপদ রীতিমতো উদ্বেগজনক ছিল ৷ অঙ্কে পড়ানোর ক্ষেত্রে শূন্যপদ ছিল 3 হাজার 123, পদার্থবিদ্যায় 1 হাজার 795, রসায়নে 1 হাজার 787 এবং জীববিদ্যায় 2 হাজার 178টি৷’’
ইউনেস্কোর এই নয়া পরিসংখ্যান নিয়ে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেছিল ইটিভি ভারত ৷ কিন্তু মোবাইল ফোন বেজে গেলেও তিনি ফোন ধরেননি ৷ তবে অ্যাকাডেমিক অ্যাডমিনিস্ট্রেটর সুচিস্মিতা বাগচী সেনের বক্তব্য, ‘‘শিক্ষার প্রকৃত মানোন্নয়ন শাসকদলের কাছে প্রাধান্য না পেলে, যা হওয়ার তা-ই হয় ৷ শূন্যপদের তালিকায় প্রথম তিনটি রাজ্যেই শিক্ষা ব্যবস্থায় রাজনীতির কদর্য নাক গলানো বহুদিন ধরেই চলে আসছে। তাই যা হওয়ার হয়েছে। রাজনৈতিক সদিচ্ছা ছাড়া এই সমস্যার সমাধান হবে না৷’’