কলকাতা, 10 জুন: "কোনও মূল্যেই পঞ্চায়েত ভোটে হিংসা বরদাস্ত করব না ৷" কড়া ভাষায় প্রতিক্রিয়া দিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস ৷ একই সঙ্গে, তিনি যে এই বার্তা রাজ্য নির্বাচন কমিশনকেও স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, তাও ঠারেঠোরে বুঝিয়ে দিয়েছেন রাজ্যপাল ৷
রাজ্যে নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ হওয়ার একদিনের মাথায় পঞ্চায়েত ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণা করেন রাজীবা সিনহা ৷ আর তারপর শনিবার প্রথম রাজ্যপালের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন রাজীবা সিনহা ৷ তবে এই বৈঠক যে খুব মধুর হয়নি তা আগাম আন্দাজ করা গিয়েছিল ৷ পরে খোদ রাজ্যপাল যেভাবে প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন, তাতে গোটা বিষয়টিই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে ৷ এদিন রাজ্যপাল বলেন, "পশ্চিমবঙ্গের পঞ্চায়েত নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত হবে। কোনও মূল্যে হিংসা বরদাস্ত করা হবে না। আমি রাজ্য নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে বৈঠক করেছি, নির্বাচন যাতে শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয় তা নিশ্চিত করার জন্য সমস্ত পদক্ষেপ নেওয়া হবে ৷"
উল্লেখ্য, শুক্রবার মনোনয়ন জমা দেওয়ার প্রথম দিনই রক্ত ঝড়ে রাজ্যে ৷ মুর্শিদাবাদের খড়গ্রামে বাড়ির সামনেই খুন করা হয় কংগ্রেস নেতা ফুলচাঁদ শেখকে ৷ অভিয়োগ, তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা ফুলচাঁদকে লক্ষ্য করে পাঁচ রাউন্ড গুলি চালায় ৷ হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাঁর মৃত্যু হয় ৷ এরপরই কার্যত একযোগে এবং এক সুরে রাজ্য প্রশাসন, শাসকদল এবং নির্বাচন কমিশনকে বিঁধেছে বিরোধীরা ৷ রাজ্যপাল আনন্দ বোসকে চিঠি দিয়ে ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের দাবি জাবি জেনিয়েছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী ৷ এরপর শনিবার রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করে একই দাবি করেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারও ৷ পাশাপাশি রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়েও প্রশ্ন তোলে বিরোধীরা ৷
আরও পড়ুন: ডোমকলে তৃণমূল নেতার কোমর থেকে উদ্ধার পিস্তল, টুইটে মুখ্যমন্ত্রীকে আক্রমণ সুকান্তর
এরপরই দেখা যায় রাজ্য নির্বাচন কমিশনারকে জরুরি ভিত্তিতে তলব করেন রাজ্যপাল ৷ সেই বৈঠকের পরই আগামী 13 জুন সর্বদল বৈঠক জাকে নির্বাচন কমিশন ৷ আর পরে এদিন বিকালে রাজ্যপাল সাফ জানিয়ে দিয়েছেন কোনওভাবেই পঞ্চায়েত ভোটে হিংসা বরদাস্ত করা হবে না ৷ যে ঘটনা খড়গ্রাম, ডোমকল-সহ বারাবনিতে ঘটেছে তার পুনরাবৃত্তি চাইছেন না রাজ্যপাল ৷
অন্যদিকে এ প্রসঙ্গে তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, "রাজ্য চাইলে ভিন রাজ্যের থেকে পুলিশবাহিনী নিয়ে ভোট করাতে পারে। এটা রাজ্যের অধিকারের মধ্যে পড়ে। এখন যদি রাজ্যপালের দিল্লির বসরা নতুন কোনও নির্দেশ দেয়, সেটা রাজ্যপাল পদক্ষেপ করতে পারেন। কিন্তু রাজ্যপালকে একটা জিনিস মনে করাতে চাই, 2021-এর নির্বাচনে কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভোট হয়েছিল। বিজেপিকে গোহারা হারানোর পাশাপাশি সিপিএম-কংগ্রেসকে শূন্য করে ছেড়েছে তৃণমূল। কেন্দ্রীয় বাহিনীর ভয় তৃণমূলকে দেখিয়ে লাভ নেই ৷"