কলকাতা, 27 ফেব্রুয়ারি : ব্রিগেড সমাবেশ । বাংলার রাজনীতিতে ব্রিগেড যেন শক্তি পরীক্ষার লড়াই । এ শুধুমাত্র কোনও রাজনৈতিক সভা নয়.. এ এক কার্নিভাল । সামনেই একুশের ভোট । এবারের নির্বাচনে মূলত নজর থাকছে দু'টি শিবিরের দিকে । ঘাসফুল আর পদ্মফুল । দুই শিবিরই নিজেদের ক্ষমতা প্রদর্শনের লড়াইয়ে ময়দানে নেমে পড়েছে । জেলায় জেলায় ছুটে বেড়াচ্ছেন তৃণমূল নেত্রী । গেরুয়া শিবিরও পিছিয়ে নেই । ভোটারদের টানতে বারবার দিল্লি থেকে উড়ে আসছেন শাহ-নাড্ডারা । এমনকি নরেন্দ্র মোদিও দু'বার সভা করে গিয়েছেন । কিন্তু এতদিন পর্যন্ত বামেদের সেভাবে আড়ম্বর করে ভোটের ময়দানে নামতে দেখা যায়নি ।
বাংলার রাজনীতিতে একটি কথা আছে, ব্রিগেডে যে দল যত বেশি লোক নিয়ে আসতে পারবে, ভোটের ময়দানে সেই দলের পাল্লা নাকি তত ভারী । রাজনৈতিক দলগুলির বড় বড় মাথারা বারবার ভোটের আগে ছুটে এসেছেন ব্রিগেডে, দলের শক্তি পরীক্ষা করতে । একুশের ভোটের আগে রবিবার (28 ফেব্রুয়ারি) প্রথমবার বামেরা তাঁদের শক্তিপ্রদর্শনের লড়াইয়ে নামছে । ভোটের মরশুমে বাংলায় প্রথম ব্রিগেড । তবে তা ঘাসফুল... বা পদ্মফুলের নয়, কাস্তে-হাতুড়ির । চৌত্রিশ বছর ধরে বামেরা বাংলার তখতে ছিল । তারপর ঐতিহাসিক পালাবদল । দীর্ঘ এক দশক ক্ষমতা থেকে বাইরে । এই অবস্থায় আদৌ কতটা ভিড় টানতে পারবেন বিমান-সূর্য-শতরূপরা ? এই প্রশ্নই বিগত কিছুদিন ধরে ঘোরাফেরা করছে বাংলার রাজনীতির আনাচে কানাচে ।
তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে বাংলার তখতে থাকার সৌজন্যে ব্রিগেডের কার্নিভাল সব থেকে বেশি আয়োজন করেছেন বামেরা । ব্রিগেডও বামেদের নিরাশ মুখে ফেরায়নি । ক্ষমতায় থাকুক বা না থাকুক, ভোটবাক্সে প্রতিফলন পড়ুক বা না পড়ুক, ব্রিগেডে ভিড় জমানোর সাহস কিন্তু বামেরা দেখিয়ে এসেছেন । ইতিমধ্যেই বেশ কিছু জেলা থেকে বাম কর্মী ও সমর্থকরা শহরে এসে পৌঁছেছেন ।
আরও পড়ুন : রবিবারের ব্রিগেডে বাম-কংগ্রেসের সঙ্গে থাকবে আব্বাসের দলও
তবে এবারের ব্রিগেডের আগে কিন্তু ছবিটা অনেকটাই আলাদা । কংগ্রেসের হাতে হাত মিলিয়ে নির্বাচনী বৈতরণী পার করতে আসরে নেমেছেন বামেরা । ব্রিগেডেও দেখা মিলবে যৌথভাবে । রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একটি বড় অংশ মনে করছেন, প্রকাশ্যে সেভাবে কিছু না এলেও, আসন সমঝোতা নিয়ে রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে নিচুতলায় কতটা মতের মিল রয়েছে... তা সময় আসলেই বোঝা যাবে । এদিকে আবার আরও একটি ট্রেন্ড দেখা যাচ্ছে বঙ্গভোটের আলোচনায় । অনেকেই মনে করছেন আব্বাস সিদ্দিকীর ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টের সঙ্গে জোট নিয়ে আলোচনা করায় বামেরা নাকি আদতে নিজেদের জায়গাটাকে কালিমালিপ্ত করছেন । সভাতেও দেখা মিলবে ভাইজানের দলের নেতাদের । তার উপর আবার টুম্পা । ব্রিগেডে ভিড় টানতে বামেদের এবার হাতিয়ার বহুলচর্চিত টুম্পা গানের প্যারোডি । ব্রিগেডে টুম্পা কতটা ভিড় টানতে পারল... কি পারল না, তা রবিবারই বোঝা যাবে । তবে বামেদের এই প্যারোডি অনেক জায়গাতেই সমালোচিত হয়েছে ।
সিদ্দিকীদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করছে বাম-কংগ্রেস নেতৃত্ব । এতদিন ধরে বাংলায় 30 শতাংশ মুসলিম ভোটের উপর একতরফাভাবে অধিকার ফলিয়ে এসেছেন তৃণমূল নেত্রী । মমতার বিরুদ্ধে কার্যত বিদ্রোহ ঘোষণা করে আব্বাস সিদ্দিকী নতুন দল গঠন করায় তৃণমূলের একতরফা ভোটব্যাঙ্কে অনেকটাই ফাটল পড়তে পারে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা । এই পরিস্থিতিতে সিদ্দিকীদের কাছে টানতে মরিয়া হয়ে উঠেছে বাম নেতৃত্ব । বেশ কয়েক দফা আলোচনার পর সিদ্দিকীকে নন্দীগ্রামের আসন ছেড়ে দিতে রাজি হয়েছে বামেরা । এবারের ভোটে সব থেকে হাই ভোল্টেজ বিধানসভা কেন্দ্র বলতে গেলে, নন্দীগ্রাম । মমতা নিজে লড়বেন সেখান থেকে । এখনও কিছু চূড়ান্ত না হলেও, নন্দীগ্রামের স্বঘোষিত ভূমিপূত্র শুভেন্দুকে যদি বিজেপি মমতার উল্টোদিকে প্রার্থী করে, তাহলে কেউই অবাক হবেন না । নন্দীগ্রামে বিধানসভা কেন্দ্রে প্রায় 33 শতাংশ মুসলিম ভোটার । সেদিক থেকে দেখতে গেলে নন্দীগ্রামের আসন সিদ্দিকীদের ছেড়ে দেওয়া বামেদের দিক থেকে সঠিক চাল বলে মনে হতেই পারে । কিন্তু এখানে অন্য একটি সমীকরণও রয়েছে । 1952 সাল থেকে নন্দীগ্রাম আসনে প্রার্থী দিয়ে আসছে সিপিআই । সেখানে দাঁড়িয়ে হঠাৎ গজিয়ে ওঠা ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টকে জায়গা ছেড়ে দেওয়া মন থেকে কতটা মেনে নিয়েছে সিপিআই , সেই উত্তর সময়ই বলবে । কানাঘুষো শোনা যাচ্ছে, এই নিয়ে স্থানীয় সিপিআই কর্মীদের মধ্যে একটি চাপা অসন্তোষও তৈরি হয়েছে ।
আরও পড়ুন : বামফ্রন্টের ‘টুম্পা’ কি পারবে বিমুখ ভোটারদের মন জয় করতে ?
শোনা যাচ্ছে, সিদ্দিকীদের আসন ছাড়তে গিয়ে সিপিআইয়ের আসন 14 থেকে 10-এ নেমে আসতে পারে । শুধু সিপিআইকেই নয় । সম্ভাব্য জোটসঙ্গী ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টকে আসনকে ছাড়তে গিয়ে কমে আসতে পারে বাকি শরিক দলের আসনও । সূত্রের খবর, ফরওয়ার্ড ব্লকের আসন সংখ্যা 34 থেকে 18-এ নেমে আসতে পারে । আরএসপির নামতে পারে 22 থেকে 16-তে । মহাজোট গড়ার লক্ষ্যে কি তবে শরিকদলগুলির অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়াল ? এদিকে শেষ পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, নন্দীগ্রামের পর ভাঙড়ের আসনও সিদ্দিকীদের ছেড়ে দিতে পারে বামফ্রন্ট । ভাঙড় এখন তৃণমূলের দখলে । গতবারের বিধানসভা ভোটে ভাঙড়ে নিজেকে 'চাষার ব্যাটা' বলে পরিচয় দিয়ে আসা একদা বাম নেতা রেজ্জাক সাহেবকে পরাস্ত করতে পারেননি সিপিএম প্রার্থী রশিদ গাজি । আর এই ভাঙড় আসনটি মূলত সংখ্যালঘু অধ্যুষিত । সূত্রের খবর, মূলত সেই কারণেই আসনটি সিদ্দিকীদের ছেড়ে দিতে চাইছে বাম নেতৃত্ব ।
যদিও বাম ঐক্য যে অটুট রয়েছে তা বারবার প্রমাণ করার চেষ্টা করছে সিপিএম ও শরিক দলগুলির নেতৃত্ব । সিপিআই রাজ্য সম্পাদক স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, তৃণমূল এবং বিজেপির বিরুদ্ধে যত বেশি বিরোধী রাজনৈতিক দল ঐক্যবদ্ধ হবে ততই বামফ্রন্ট-সহ বিরোধীদের ফল ভালো হবে । তাঁরা আইএসএফ-সহ কংগ্রেসের সমঝোতাকে স্বাগত জানিয়েছেন । সেই কারণেই নন্দীগ্রাম বিধানসভা কেন্দ্র ছাড়া হয়েছে আব্বাস সিদ্দিকীকে ।
কংগ্রেস এবং ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টের সঙ্গে আসন সমঝোতায় সমৃদ্ধ হবে এবারের ব্রিগেড সমাবেশ । বলছেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু । কংগ্রেস ও আইএসএফ মিলে তৃণমূল এবং বিজেপির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ে আরও বেশি প্রাসঙ্গিক হবে বামফ্রন্ট । রবিবারের সমাবেশ প্রসঙ্গে ফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু বলেন, "এ এক ঐতিহাসিক ব্রিগেড । কংগ্রেস বা ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট এককভাবে বিজেপি ও তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াই করার মতো জায়গায় এখন নেই । বাম গণতান্ত্রিক ধর্মনিরপেক্ষ সবক'টি দল যৌথভাবে লড়াই করলে আশানুরূপ ফল পাওয়া যাবে।"
আরও পড়ুন : ব্রিগেডে কীভাবে পৌঁছাবে বুদ্ধের বাণী, ভাবনায় বামেরা
কংগ্রেসের রাজ্যসভার সদস্য প্রদীপ ভট্টাচার্যের গলাতেও একই সুর । বলেন, "সকলের আসন সমঝোতায় এবং জোট বাঁধার জন্য মানুষের সমর্থন পাব । তৃণমূল বা বিজেপি সরকার গঠন করতে পারবে না । পরিস্থিতি যে দিকে যাচ্ছে তাতে কংগ্রেস - বামফ্রন্ট জোটকেই প্রাধান্য দেবে মানুষ ।"
প্রদীপবাবু মুখে এ-কথা বললেও নিজেদের জেতা আসন সিদ্দিকীদের ছাড়তে নারাজ প্রদেশ নেতারা । সিপিএম যেভাবে দু'হাত খুলে সিদ্দিকীদের আসন ছেড়ে দিতে চাইছে, তাতে চাপা অসন্তোষ তৈরি হচ্ছে শরিক দলগুলির একাংশের অন্দরেও ।
প্রকাশ্য কিছু না এলেও বাম ঐক্যে ফাটল ধরার কানাঘুষো এর আগেও শোনা গিয়েছিল । বাম জমানার শেষ অধ্যায় । সিঙ্গুর আন্দোলন চলছিল । বিরোধী নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তখন একের পর এক আক্রমণ শানিয়ে যাচ্ছিলেন বুদ্ধবাবুদের দিকে । শোনা যেত, সিঙ্গুর ইস্যুতে সিপিএমের সঙ্গে বাকি শরিকদলগুলির অনেকক্ষেত্রেই অমত তৈরি হয়েছিল । ক্ষমতার আস্ফালনে শরিকদলগুলির সঙ্গে আলোচনা না করেই অনেক সময় অনেক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল বলেও কানাঘুষো রয়েছে । ফ্রন্টের মধ্যেই তৈরি হয়েছিল অঘোষিত মিনি-ফ্রন্ট । ফরওয়ার্ড ব্লক, সিপিআই এবং আরএসপি নাকি আলাদা করে অনেক আলোচনা সভা করতে বাধ্য হয়েছিল । আর দুর্ভেদ্য বাম ঐক্যের ভোটবাক্সের উপর তার কী প্রভাব পড়েছিল, তা 2011 বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল থেকেই স্পষ্ট ।
পরে অবশ্য সেই ভুল বোঝাবুঝি মিটে যায় । আবার একজোটে আন্দোলনে নামে বৃহৎ বাম ঐক্য । ব্রিগেডও করে । ভিড়ও হয় তাতে । কাতারে কাতারে মানুষ এসে ভিড় করেন বামেদের ব্রিগেড সমাবেশে । ক্ষমতায় না থাকার পরেও ব্রিগেডে কোনও রাজনৈতিক দলের কর্মী-সমর্থকদের এহেন জনসমুদ্র যে কোনও শাসক দলকেই স্নায়ুর চাপে ফেলে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট । কিন্তু পালাবদলের পর থেকে ভোটবাক্সে সেই জনসমুদ্রের প্রতিফলন আর দেখতে পাননি বামেরা ।
আরও পড়ুন : টুম্পা সোনার আদলে চলো ব্রিগেড চলো! নয়া ভিডিয়োয় ফুটছে বামেরা
এবার আবার একটা নির্বাচন । বাম নেতৃত্ব যাই বলুক না কেন, তৃণমূল স্তরের কর্মীদের মধ্যে আসন ছেড়ে দেওয়াটা কীরকম প্রভাব ফেলবে তা এখনই বলা মুশকিল । এ তো গেল কর্মী-সমর্থকদের কথা । আর সাধারণ মানুষ ? তাঁদের কাছে কেন আব্বাস সিদ্দিকীর সঙ্গে বামেদের আলোচনা এত ম্যাথাব্যাথার কারণ হয়ে উঠছে ? আব্বাস সিদ্দিকী বামপন্থী নন । তিনি কংগ্রেসিও নন । তিনি কেবলমাত্র একটি নির্দিষ্ট ধর্মীয় গোষ্ঠীর নেতা । তবে বর্তমানে যা প্রেক্ষাপট, তাতে রাজ্য রাজনীতির পর্যবেক্ষকরা অনেকেই বলছেন, এই মুহূর্তে সাধারণ মানুষের কাছে সব থেকে বড় যে প্রশ্ন, তা হল সিপিএমের মত এত বড় রেজিমেন্টেড একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাজনৈতিক দল কীভাবে আব্বাস সিদ্দিকীর একজন নির্দিষ্ট একটি ধর্মীয় গোষ্ঠীর নেতার সঙ্গে জোট নিয়ে চিন্তাভাবনা করছেন । এই ধরনের জোট-আলোচনা বামেদের ভোটবাক্সে বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে বলেও আশঙ্কা করছেন অনেকে ।
পাশাপাশি রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা এও বলছেন,আব্বাস সিদ্দিকী একটি নির্দিষ্ট ধর্মীয় গোষ্ঠীর প্রতিনিধি হলেও তাঁর দলের নামে কিন্তু সেকুলার কথাটি রয়েছে । তিনি কিন্তু এখনও পর্যন্ত শুধুমাত্র মুসলিম সম্প্রদায়ের দাবি-দাওয়া নিয়ে একবারের জন্যও সামনে আসেননি । কোথাও বলেননি, তাঁর দল শুধুমাত্র একটি নির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের জন্য । বরং বারবার বলে এসেছেন, তাঁর দল সমাজের সর্বস্তরের পিছিয়ে পড়া মানুষের কথা বলবে । এখনও পর্যন্ত আব্বাস যা দাবি করেছেন, তাতে তাঁর মূল লক্ষ্য বাংলায় বিজেপিকে আটকানো । মমতার বিরুদ্ধে সুর তিনি আগেই চড়িয়েছেন । আর এটারই ফায়দা তুলতে চাইছে বামেরা । অবিজেপি, অ-তৃণমূল শক্তিগুলিকে এক ছাতার তলায় নিয়ে আসার জন্যই সিদ্দিকীদের প্রতি এতটা দরাজ হচ্ছে সিপিএম । রাজ্য রাজনীতির পর্যবেক্ষকরা অন্তত এমনটাই মনে করছেন । এই পরিস্থিতিতে ভোটের ময়দানে জল মাপতে ফের একবার ব্রিগেডমুখী বিমান-সূর্যরা ।
কারা কারা বক্তৃতা দেবেন ব্রিগেডে ? এখনও পর্যন্ত যা খবর, তাতে বামেদের হয়ে বক্তব্য রাখবেন বিমান বসু, সীতারাম ইয়েচুরি, ডি রাজা । বক্তব্য রাখতে পারেন সূর্য-সেলিমও । পাশাপাশি, দীপশিতা ধর ও দেবলীনা হেমব্রমকেও বক্তব্য রাখতে দেখা যেতে পারে । রাহুল গান্ধি আসার কথা থাকলেও বিধানভবন সূত্রে শেষ পর্যন্ত যা খবর, তাতে তিনি থাকতে পারছেন না ব্রিগেডে । ছত্তিশগড়ের কংগ্রেস সরকারের মুখ্যমন্ত্রী ভুপেশ বাঘেল থাকতে পারেন বলে জানা যাচ্ছে । সঙ্গে থাকবেন প্রদেশ সভাপতি অধীর চৌধুরী । বাম রাজনীতির অন্যতম আইকন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের কথাও যাতে সাধারণের কাছে পৌছয়, সেই চেষ্টাও করছেন নেতারা ।
আরও পড়ুন : 28-এ বামেদের ব্রিগেড সমাবেশ, হাইকোর্ট চত্বরে বর্ণময় পথনাটকে প্রচার
বিমানবাবু দাবি করেছেন সিপিএম একাই সাড়ে সাত লাখের ভিড় জমাবে ব্রিগেডে । এই দাবি যদি সত্যি প্রমাণ হয়, তবে উপচে পড়বে ব্রিগেড । সাধারণত একটি ব্রিগেডের সভা ভরাতে সাড়ে চার থেকে পাঁচ লাখের ভিড়ই যথেষ্ট বলে ধরে নেওয়া হয় । এদিকে ব্রিগেড নিয়ে বামদের তোড়জোড় চলছে বিগত বেশ কিছুদিন ধরেই । টুম্পা প্যারোডি তো ছিলই, তার সঙ্গে যোগ দিয়েছে ফ্ল্যাশ মব । চলচ্চিত্র পরিচালক কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়ও কলম ধরেছেন লাল ব্রিগেড নিয়ে । এ যেন অনেকটা ঘুমন্ত সিংহের জেগে ওঠার মতো ।
রবিবার সকালে আবার দেখা যাবে আলিপুরদুয়ারের একেবারে শেষপ্রান্ত থেকে মানুষটা এসে দাঁড়িয়েছেন ব্রিগেডের ভিড়ে । বহু দূর দূর থেকে সমর্থকরা এসে ভিড় জমাবেন । আগের রাতটায় কেউ ইতস্তত ভাবে মাঠের কোথাও, কেউ গাছের তলায় কাটিয়ে দেবেন গামছা বিছিয়ে । কেউ ছোলা দিয়ে মুড়ি মাখা, কেউ একটু গুড় দিয়ে চিড়ে মাখা কেউ বা একটু ভাত বা শুকনো রুটি খেয়েই রাতটা কাটিয়ে দেবেন । কারও ভাগ্যে হয়ত সেটুকুও জুটবে না । তিনি হয়ত অপেক্ষায় থাকবেন, তাঁর কোনও কমরেড খাবার নিয়ে আসবে বলে... ভোর হতে না হতেই শুরু হয়ে যাবে কর্মযজ্ঞ । এভাবেই চলে আসছে বামেদের ব্রিগেড ।
সবই হয়তো হবে, কিন্তু ভোটবাক্সে তার প্রতিফলনটা থাকবে তো ?